অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ওসি প্রদীপ আবারও গ্রেপ্তার

আইন আদালতঃ

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যা মামলার আসামী প্রদীপ কুমার দাশকে চট্টগ্রাম আদালতে তোলার পর গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। পরবর্তী শুনানি ২০ সেপ্টেম্বর।  

এই মামলার প্রধান আসামী প্রদীপের স্ত্রী চুমকি কারণ পলাতক রয়েছেন। তবে তিনি যাতে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে না পারেন, সে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সদর দফতরে চিঠি দিয়েছে দুদক। 

আইনজীবী মাহমুদুল হক জানান, দুদকের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দেখানোর জন্য গত ২৭ আগস্ট মহানগর আদালতে আবেদন করা হলে, আজ শুনানির দিন ধার্য্য করা হয়। এর আগে, শনিবার দুপুরে তাকে কক্সবাজার কারাগার থেকে চট্টগ্রাম কারাগারে আনা হয়।   

উল্লেখ্য, ২৩ আগস্ট প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দীন। এ মামলায় ২৭ আগস্ট মহানগর সিনিয়র স্পেশাল দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালতে প্রদীপ কুমার দাশকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন জমা দেওয়া হয়। আদালত ১৪ সেপ্টেম্বর আদেশের শুনানির জন্য সময় নির্ধারণ করেছেন।  

মামলার এজাহারে প্রদীপ কুমার দাশ ও চুমকি কারণের বিরুদ্ধে প্রায় চার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫ হাজার ৬৩৫ টাকা ‘ওসি প্রদীপ’ ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করেছেন বলে দুদক অভিযোগ এনেছে। আরও ১৩ লাখ ১৩ হাজার ১৭৫ টাকার সম্পদের তথ্য বিবরণীতে গোপন করার অভিযোগও আনা হয়েছে চুমকির বিরুদ্ধে।

প্রদীপ ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ অর্জন করে স্ত্রীর নামে হস্তান্তর ও স্থানান্তর করেছেন বলেও দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদন এবং এজাহারে বলা হয়েছে।

২০১৮ সালে প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকী কারণের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তদন্ত শুরু করে দুদক। ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল তাদের দুজনকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেয় দুদক। ১২ মে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২-এ তারা পৃথক সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন।

গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। ওই ঘটনায় সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস গত ৫ আগস্ট কক্সবাজারের একটি আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন, সেখানে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকতসহ নয়জনকে আসামি করা হয়। মামলাটি তদন্ত করছে র‌্যাব। 

ওই মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করার পর প্রদীপকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। মেজর (অবঃ) সিনহা নিহতের ঘটনার পর ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে বন্দুকযুদ্ধের নামে হত্যার অভিযোগ, সাংবাদিক নির্যাতনের দায়ে ও দুর্নীতির অভিযোগে মোট ১৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

-কেএম

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter