রাবিতে শিবির সন্দেহে শিক্ষার্থীকে মারধর, ৪ জনকে পুলিশে সোপর্দ

রাবি প্রতিনিধিঃ

শিবির সন্দেহে ৪ শিক্ষার্থীকে মারধরের পর পুলিশে দিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান থেকে তাদেরকে তুলে এনে বঙ্গবন্ধু হলে মারধরের পর রাত ৯ টার দিকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

সোপর্দকৃতরা হলেন, সমাজকর্ম বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী নাসিম হাসান, আরবী বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী শাহরুখ, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মুহাইমিন, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী লিটন।

এছাড়া আরাফাত নামের এক শিক্ষার্থী নিজেকে শিবির কর্মী বলে পরিচয় দিলেও তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এছাড়া বাকি ৯ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া দাবি করেন, শিবির সন্দেহে ১৪-১৫ জনকে বঙ্গবন্ধু হলে নিয়ে এসে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর ৪ জনের শিবির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

তবে আটকের পর পুলিশের গাড়িতে তোলার সময় লিটন ও মুহাইমিন সাংবাদিকদদের কাছে দাবি করেন, ‘আমরা ক্যাম্পাসে বিকেলে ঘুরতে এসেছিলাম। এ সময় সন্দেহবশত আমাদের আটক করা হয়। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিনা কারণে আমাদের খুব মারধর করেছে। আমরা কোন ধরনের শিবির করি না।’ এদের মধ্যে লিটনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মারধরে তার পা রক্তাক্ত হয়ে যায় এবং দুই হাতে গুরুতর জখম হয়।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলে ছাত্রলীগ নেতারা সাধারণ শিক্ষার্থীসহ বহিরাগত শিক্ষার্থীদের এনে বার বার মারধর করলেও হল প্রশাসনকে নিরব ভূমিকায় থাকার অভিযোগ উঠেছে। হলের বেশ কয়েকটি রুম ব্যবহার হচ্ছে ছাত্রলীগের টর্চার সেল হিসেবে। এর আগের ঘটনাগুলোতে হল প্রাধ্যক্ষ গুরুত্ব না দেওয়ায় এমন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধু হলে বিভিন্ন শিক্ষার্থীকে এনে মাঝে মধ্যে এমন ঘটনার জন্ম দিচ্ছেন। তবে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আশরাফ উজ জামানকে তৎপর দেখা যায়নি। অধিকাংশ সময় তাকে দেরিতে আসতে দেখা যায় বলে অভিযোগ তুলেন হলের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া হল প্রাধ্যক্ষ দেরিতে এসেছেন বলে প্রক্টরসহ সহকারী প্রক্টরদের বাইরে দাড়িয়ে থাকতে হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

রাবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, কোন শিক্ষার্থীর যাতে ক্ষতি না হয় সেজন্য ঘটনার শোনার পর সহকারী প্রক্টর পাঠিয়েছি। তবে হল প্রাধ্যক্ষ হলে না উপস্থিত থাকায় সেখানে কিছু করা সম্ভব ছিল না।

জানতে চাইলে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আশরাফুজ্জামান বলেন, বহিরাগতদের আটক করে হলে নিয়ে এসে এভাবে আটকে রাখা আমার পছন্দ নয়।’ আর পূর্বের ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে, এই বিষয়টি সরকার দেখবে বলে দাবি করেন প্রাধ্যক্ষ। এরপর সাংবাদিকদের কাছে অন্য কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

এদিকে আটককৃতরা বঙ্গবন্ধু হলে থাকাকালীন মতিহার হল ও মমতাজ উদ্দীন ভবনের সামনে ককটেল বিস্ফোরনের ঘটনা ঘটে। এতে ক্যাম্পাসের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

নগরীর মতিহার থানার ওসি শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা চারজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। তাদেরকে এখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

আবু সাঈদ সজল
রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়
১৮ অক্টোবর ২০১৮
০১৭৪০১৫৯৪০০।

FacebookTwitter