ইউএনওকে হালাকারী অফিসেরই একজন

আইন আদালতঃ

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীর ওপর হামলার একজনই জড়িত বলে মনে করছে পুলিশ। তাকে শনাক্ত করা গেছে এবং তিনি ইউএনও অফিস চত্বরের কেউ!

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত সোমবার রাতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে তুলে নেয়া হয়। এর মধ্যে দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেয়া হয়। ১১ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার সকালে নাম না প্রকাশের শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা এই তথ্য জানান।

পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান, হামলার ঘটনা তদন্তের প্রায় দ্বারপ্রান্তে। হামলাকারী একজনই, তবে তার একজন সহযোগী থাকতে পারে। সহযোগীর সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, এ ঘটনা তদন্তে পুলিশ, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নসহ (র‌্যাব) কয়েকটি সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে। হামলাকারী ইউএনওর অফিস চত্বরের কেউ। ঘটনায় ব্যবহৃত হাতুড়ি, মই, লাঠি জব্দ করার কথাও জানান তিনি।

এদিকে পুলিশের অপর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, হামলাকারীকে শনাক্ত করা গেছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে সংবাদ সম্মেলনে হামলার প্রকৃত কারণ ও অপরাধীকে সামনে নিয়ে আসা হবে।

প্রসঙ্গত, ৩ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার ভোররাত ৩টার দিকে সরকারি বাসভবনে ঢুকে ওয়াহিদা খানম ও তার পিতার ওপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় তার পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলীকেও আহত করে দুর্বৃত্তরা।

দুর্বৃত্তরা সরকারি বাসভনের ভেন্টিলেটর ভেঙে ঘরে ঢুকে প্রথমে ওমর আলীকে হাতুরি দিয়ে পিটিয়ে একটি কক্ষে আটকে রাখে। পরে তারা ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলা চালায়। এলোপাতাড়িভাবে তাকেও হাতুরি দিয়ে আঘাত করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।

সংবাদ পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাদের রংপুরে পাঠানো হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় ইউএনওকে রংপুরে ডক্টরস হাসপাতালের আইসিইউতে এবং তার বাবাকে রংপুর মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়। পরে ইউএনও ওয়াহিদা খানমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে রংপুর থেকে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে নেয়া হয়।

এরপর গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে তাকে অস্ত্রোপচারের জন্য হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। অপারেশন থিয়েটারে নেয়ার আগে তার সিটিস্ক্যান করা হয়। প্রেসার চেক করে অবস্থা স্বাভাবিক থাকায় তার অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। অস্ত্রোপচার শেষে ওই রাতেই জ্ঞান ফেরে ওয়াহিদা খানমের। এখন তিনি সবাইকে চিনতে পারছেন এবং কথা বলতে পারছেন বলে জানান তার স্বামী মেসবাহুল হোসেন।

-কেএম

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter