ডেস্ক রিপোর্টঃ
বিজয়ীদের নাম ঘোষণার মাধ্যমে বাংলাদেশে স্টাডি ইউকে অ্যালামনাই অ্যাওয়ার্ডস ২০২১ উদযাপন করলো ব্রিটিশ কাউন্সিল।

বিজনেস প্রফেশনাল, উদ্যোক্তা ও কমিউনিটি লিডার হিসেবে তিনজন অ্যালামনাই অ্যাওয়ার্ড বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয় এবং তাদের পুরস্কার প্রাপ্তি উদযাপন করা হয়।

ইউকে এবং বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদারে অবদান রাখার পাশাপাশি স্বীয় কার্যক্ষেত্রে তাদের অসাধারণ কৃতিত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ এই অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেছে ব্রিটিশ কাউন্সিল।

বিশ্বব্যাপী সকল ইউকে অ্যালামনাই এবং যুক্তরাজ্যে উচ্চ-শিক্ষার্থীদের সাফল্যকে স্মরণীয় করে রাখার উদ্দেশ্যেই আন্তর্জাতিক এ অ্যাওয়ার্ডটি প্রদান করা হয়।

সপ্তম বছরে অ্যাওয়ার্ডটির জন্য বিশ্বের ১১৪টিরও বেশি দেশ থেকে ১৩শ’র বেশি আবেদন জমা পড়ে। যুক্তরাজ্যের ১৪৮টিরও বেশি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আবেদনকারীরা নিজেদের আগ্রহ প্রকাশ করেন, যাদেরকে বিচারক প্যানেলের দ্বারা সাক্ষাৎকার গ্রহণের মাধ্যমে তিনটি ভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কারের জন্য যাচাই-বাছাই করা হয়।

ক্যাটাগরি সমূহ হলো:
প্রফেশনাল অ্যাচিভমেন্ট, অন্ট্রাপ্রেনিয়াল এবং সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট।

প্রফেশনাল অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন লন্ডন বিজনেস স্কুল থেকে তার স্নাতক সম্পন্ন করেন। এই পুরস্কারটি মূলত পেশাগত ক্ষেত্রে অনন্য দক্ষতা ও নেতৃত্বের গুণাবলী সম্পন্ন ব্যক্তিদেরকে প্রদান করা হয়। আশিক বর্তমানে এইচএসবিসি বাংলাদেশে সাস্টেইনেবল ফাইন্যান্স এফোর্টস-এর নেতৃত্ব প্রদানকারী হিসেবে তার দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে যাচ্ছেন।

এছাড়াও, তিনি কোভিড-১৯ এ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সহায়তার লক্ষ্যে নিয়োজিত ক্রাউডফান্ডিং প্ল্যাটফর্ম ‘চলো সবাই’ (পযড়ষড়ংযড়নধর.পড়স) এর একজন সহ-প্রতিষ্ঠাতা।

ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের স্নাতক ডিগ্রিধারী নিলুফার ফাতেমা চৌধুরীকে প্রদান করা হয়েছে সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট অ্যাওয়ার্ড। সমাজ ও পারিপার্শ্বিকতায় ইতিবাচক পরিবর্তন সাধনের লক্ষ্যে অভুতপূর্ব অবদানের জন্য তিনি এই স্বীকৃতি পান।

বাংলাদেশের সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকার উন্নয়ন সাধনে নিজ দক্ষতা বৃদ্ধির পেছনে ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের ভূমিকাকেই প্রধান বলে মনে করেন নিলুফার। তিনি বর্তমানে একজন কনসালটেন্ট কার্ডিওলজিস্ট হিসেবে কর্মরত এবং মান্নান ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের সহ-প্রতিষ্ঠাতা।

সামাজিক ও আর্থিক বৈষম্য এবং জলবায়ুগত সমস্যা শনাক্তে কাজ করে এই ট্রাস্ট।

অন্ট্রাপ্রেনিয়াল অ্যাওয়ার্ডের মূল লক্ষ্য হল উদ্ভাবনী ও সৃষ্টিশীল কার্যক্ষেত্রে উদাহরণ সৃষ্টিকারী ব্যক্তিত্বদের স্বীকৃতি দান।

অন্ট্রাপ্রেনিয়াল অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত জাহিন রাজিন ইউনিভার্সিটি অব গ্লাসগো থেকে তার স্নাতক সম্পন্ন করেন। জাহিন মূলত প্রযুক্তির সাহায্যে সমাজ ও পরিবেশে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন সাধনের লক্ষ্যে কাজ করছেন। তিনি হাইড্রোকুয়ো প্লাস এবং কোয়ান্টাম পলিকেমিকস এর মতন চারটি প্রতিষ্ঠান গঠন করেন, যেগুলোর প্রধান লক্ষ্য হল পানি-সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ এবং টেকসই প্লাস্টিকের চাহিদার মত বিষয় নিয়ে গভীরভাবে কাজ করা।

‘যুক্তরাজ্যের সবচাইতে প্রগতিশীল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটিতে শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ পাওয়া নিঃসন্দেহে আমার জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।’ অ্যাওয়ার্ড প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মন্তব্য করেন জাহিন।

টম মিশশা, ডিরেক্টর, ব্রিটিশ কাউন্সিল, বলেন, ‘স্টাডি ইউকে অ্যালামনাই অ্যাওয়ার্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশে যে কৃতি ব্যক্তিত্বদের আমরা সম্মানিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি, তাদের প্রত্যেকেই নিজ প্রশংসনীয় ক্যারিয়ারের সূচনা করেছেন ইউকে এডুকেশনের মাধ্যমে।

এ বছরের আয়োজন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা ইউকে অ্যালামনাই ও তাদের ইতিবাচক প্রয়াসগুলোকে স্বীকৃতি দান করে এবং এটি পরিবর্তন সাধনের প্রশ্নে ইউকে এডুকেশনের তাৎপর্যকেও তুলে ধরবে।

বাংলাদেশের ২০ হাজারেরও বেশি ইউকে অ্যালামনাই নিয়ে সাফল্য উদযাপনের আরো অনেক বড় ক্ষেত্র রয়েছে। এ বছর বাংলাদেশ স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছে এবং এ বছর ব্রিটিশ কাউন্সিলও ঢাকায় এর প্রথম দপ্তরটি প্রতিষ্ঠার ৭০ বছর উদযাপন করছে।

ভবিষ্যতেও আমরা দেশের মেধাবী তরুণদের জন্য নতুন সুযোগ ও সম্ভাবনার সঞ্চার করে যাবো এবং আরো বেশি শিক্ষার্থী যেনো যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ার সুযোগ লাভ করতে পারে সে ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করবো।”

বাংলাদেশ ছাড়াও ভিয়েতনাম, তুরস্ক এবং নাইজেরিয়া এ বছরের অনুষ্ঠানটি অনলাইনে উদযাপন করছে। অন্যান্য বিভিন্ন দেশেও অনলাইন অথবা সরাসরি বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে চূড়ান্ত প্রতিযোগী ও বিজয়ীদের স্বীকৃতিদান করা হচ্ছে।

-শিশির

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter