অনলাইনঃ

৯ জুলাই ২০১৯, রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার ইন এ অনুষ্ঠিত হলো ইনক্লুশন ওয়ার্কস প্রকল্পের উদ্ধোধনী অনুষ্ঠান।

সূচনা বক্তব্যে সাইটসেভার্স এর কান্ট্রি ডিরেক্টর খন্দকার আরিফুল ইসলাম বলেন কাজের সুযোগ থেকে বঞ্চিত
হওয়ার কারণে প্রতি বছর বাংলাদেশ প্রায় ১.২ বিলিয়ন ডলার পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।

তাই প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা কাজের সুযোগ পেলে তারা নিজেরা যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হবে, ঠিক তেমনি তাদের
পরিবার ও সর্বোপরি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও ভূমিকা রাখতে পারবে।

প্রকল্প সম্পর্কে জানাতে গিয়ে, প্রজেক্ট ম্যানেজার ডগলাস স্মিথ বলেন ইনক্লুশন ওয়ার্কস সাইটসেভার্স এর
নেতৃত্বে, ইউকে এইড এর অর্থায়নে পরিচালিত তিন বছরের (২০১৯-২০২২) একটি কনসোর্টিয়াম।

বাংলাদেশ, নাইজেরিয়া, কেনিয়া ও উগান্ডা’তে এই কর্মসূচী পরিচালিত হচ্ছে, যার মূল লক্ষ্য – প্রাতিষ্ঠানিক
কর্মক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের যে তুলনামূলক কম উপস্থিতি রয়েছে সেই বিষয়টি নিয়ে কাজ করা।

বাংলাদেশে এই কার্যক্রমটির আওতায় গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে ২০০০ এর মতো প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে প্রাতিষ্ঠানিক কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করা হবে।

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা যেন প্রাতিষ্ঠানিক কর্মক্ষেত্রে সম্পৃক্ত হতে পারেন সেজন্য ১৮০ টি নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানে ইউএনসিআরপিডি অনুমোদিত উদ্ভাবনী পদ্ধতিগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হবে। এছাড়া, কর্মক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সম্পৃক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ এবং এ সম্পর্কিত উদ্যোগ বাড়াতে বাস্তব তথ্য ও উপাত্তের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়টিকে উৎসাহিত করা হবে।

জনাব নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি, মাননীয় মন্ত্রী, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

বক্তব্যে তিনি বলেন, বর্তমানে এই বর্ধিত এবং বিশাল সংখ্যার প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে প্রতিবন্ধী যুবক-যবতী শিক্ষা, কারিগরী প্রশিক্ষণ এবং আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক সকল চাকুরীতে প্রবেশগম্যতার ক্ষেত্রে নানা বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছেন। তাদের অন্তর্ভূক্তি, প্রবেশগম্যতা এবং সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এটি আরও চ্যালেঞ্জিং, যাদের পর্যাপ্ত ও উপযুক্ত দক্ষতা, জ্ঞান এবং প্রয়োজনীয় তথ্য জানা নেই। সরকারী-বেসরকারী ও উন্নয়ন সংগঠনের নানা উদ্যোগের ফলে এই সকল বাধাঁ ও অসামঞ্জস্যতা হ্রাস পাচ্ছে এবং এই প্রকল্পটি দেশের জন্য একটা ভাল উদাহরণ হবে। এই উদ্যোগের সাথে যে সকল সংস্থা কাজ করছেন, তারা সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, চাকুরীদাতা প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডার একসাথে ভূমিকার মাধ্যমে প্রকল্পের সামগ্রীক উদ্দেশ্য অর্জন করবে।

সভাপতির বক্তব্যে এডিডি ইন্টারন্যাশনালের চীফ এক্সিকিউটিভ জিমি ইনস বলেন, এই কনসোর্টিয়াম প্রতিবন্ধী
ব্যক্তিদের বিভিন্ন সংগঠন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সম্ভাব্য চাকরিদাতাদের সাথে সরাসরি কাজ করছে এবং আশা
করছে এই প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদেরকে কিভাবে অন্য আর দশজনের মতো একইভাবে কর্মক্ষেত্রে সম্পৃক্ত
করা যায়, তার উদাহরণ তৈরির মাধ্যমে এদেশে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মে নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি ধারাবাহিক
ও নিয়মতান্ত্রিক পরিবর্তনের সূচনা হবে।

বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশন এর কান্ট্রি ডিরেক্টর রিচার্ড লেইস সকলকে ধন্যবাদ দেন এই আয়োজনে যুক্ত হওয়ার
জন্য। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, প্রতিবন্ধী নারী ও পুরুষদের প্রাতিষ্ঠানিক কর্মক্ষেত্রে অর্ন্তভুক্তি বাড়াতে
এই প্রকল্প বিশেষ সহায়তা করবে।

শফিকুল ইসলাম, কান্ট্রি ডিরেক্টর, এডিডি ইন্টারন্যাশনাল এর সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানটি পরিচালিত হয়।

-শিশির

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter