গ্যাস থাকবে না আরও এক সপ্তাহ

অনলাইন ডেস্কঃ

সমুদ্রের তলদেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) পাইপলাইন চালুর তিন মাস না পেরোতেই ফের ত্রুটি দেখা দিয়েছে পাইপলাইনে। গ্যাস সরবরাহ বলতে গেলে একেবারে বন্ধই হয়ে গেছে।

আট বছর আগে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে পাইপলাইনের ত্রুটি কয়েকবার সারানেরা পর বাণিজ্যিকভাবে এলএনজি সরবরাহ শুরু হয় গত ১৮ আগস্ট।

গ্যাস সংকট কাটাতে সরকার কর্তৃক আমদানিকৃত প্রকৃতিক গ্যাসের পাইপলাইনে এখন তীব্র সংকট হয়ে দেখা দিয়েছে। পাইপলাইনের এ ত্রুটি সারানোর জরুরি ও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় শীত শুরুর আগেই তীব্র গ্যাস সংকটে পড়েছে সারাদেশ।

এর ফলে একদিকে শিল্প-উত্পাদন ব্যাহত হচ্ছে অন্যদিকে আবাসিক গ্রাহকরা পড়েছেন ভোগান্তিতে।

সামর্থ্যবানরা এলপিজি (সিলিন্ডার গ্যাস) গ্যাস কিনে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন। কিন্তু যারা গ্যাসের উপর নির্ভর করা ছাড়া অচল ওস সব লোকজন গ্যাসের অপেক্ষায় থেকে কিংবা একবেলা কেরোসিন তেলের চুলায় রান্না করে দিন পার করছেন। কখনো মিটি মিটি, কখনো একদমই নেই। কখনোবা অল্প সময়ের জন্য গ্যাস পাওয়া গেলে রান্না হচ্ছে। এ রকম সুযোগ বুঝে বা চাতক পাখির মত চেয়ে থাকতে হচ্ছে গ্যাস চুলার দিকে।

পেট্রোবাংলা এবং রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি (আরপিজিসিএল) সূত্র জানায়, গত ৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় বঙ্গোপসাগরের তলদেশে এলএনজি পাইপলাইনে ঐ ত্রুটি দেখা দেয়। এতে জাতীয় গ্রিডে ৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ কমে যায়।

ভাসমান টার্মিনাল ও সমুদ্র তলদেশের পাইপলাইনের সংযোগস্থলের হাইড্রোলিক ভাল্বটি অকার্যকর হয়ে গেছে। ফলে পাইপলাইনে গ্যাস আসছে না। অকার্যকর হয়ে যাওয়া হাইড্রোলিক ভাল্বটি ৪০ মিটার পানির তলদেশের পাইপলাইনে স্থাপিত। কিন্তু এটি মেরামত করার জন্য তাত্ক্ষণিকভাবে কোনো ব্যবস্থা নেই।

হঠাত্ কোনো কারিগরি ত্রুটি দেখা দিলে তা সারানোর জন্যও কোনো বিশেষজ্ঞ এবং কর্মীদল নেই। সব মিলিয়ে ত্রুটি সারাতে অন্তত এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।

সরেজমিন পরিদর্শনে জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরে মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, কল্যাণপুর, মিরপুর, শেওড়াপাড়া, কাফরুল, কল্যাণপুর, রামপুরা, আজিমপুর, লালবাগসহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় তীব্র গ্যাস সংকট চলছে। কোনো কোনো এলাকায় গভীর রাতে গ্যাস পাওয়া গেলেও সকালে কিংবা দিনের বেলা গ্যাস পাওয়া যায় না। অনেক এলাকায় রাতে এবং দিনের বেশিরভাগ সময় গ্যাস থাকে না। শুধু সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা বা ১১টা পর্যন্ত গ্যাস পাওয়া যায়; এরপর আর ওই এলাকাগুলোতে গ্যাস থাকে না। আর সব এলাকাতেই গ্যাসের চাপও স্বাভাবিকের চেয়ে কম। এমন পরিস্থিতিতে কেউ এলপিজি, ইলেক্ট্রিক চুলা বা কেরোসিন তেলের চুলার মত বিকল্প পদ্ধতি ব্যবহার করে রান্না করছেন। কেউবা রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার কিনে খাচ্ছেন। সব মিলিয়ে জীবনযাত্রায় চমরভাবে এর প্রবাব পড়েছে।
-আরবি

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter