অনললাইনঃ
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, নারী নির্যাতন বন্ধ করতে হলে পরিবার থেকেই নারীদের প্রতি বৈষম্য কমিয়ে আনার শিক্ষা দিতে হবে।
পরিবারে নারীর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ শিক্ষা দিলে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ করা সহজ হবে। কারণ সমাজকে এগিয়ে নিতে হলে নারী-পুরুষকে একসাথে এগিয়ে যেতে হবে। নারীর অধিকার ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭২ সালের সংবিধানেই দিক নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
রাজধানীর প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাব আয়োজিত ‘নারী উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ওমর ফারুক।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন।
অনুষ্ঠানে জাতীয় প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়। স্পিকার বিশেষ সম্মাণনা ক্রেস্ট ও উপহার তুলে দেন। এসময় জাতীয় প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর হাতে নারী দিবসের শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, দৈনিব ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, মানবজমিন সম্পাদক মাহবুবা চৌধুরী, নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমা মিনু, আজিজুল ইসলাম ভূইয়া, পিয়ালি বেগম প্রমুখ। কবিতা পাঠ করেন কবি হেলাল হাফিজ ও সোহরাব হাসান।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে যাওয়ার আইন প্রয়োগ করতে হয়। আমাদের নারী নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। এজন্য পরিবার থেকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। ছেলে মেয়েকে সমান গুরুত্ব দিয়ে মানুষ করতে হবে। পরিবার থেকেই নারীদের প্রতি এই শ্রদ্ধাবোধ সৃৃষ্টি করে নারীর প্রতি বৈষম্য কমিয়ে আনতে হবে।
স্পিকার আরো বলেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন নারীর উন্নয়নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাবনা সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। বিশ্বের অনেক দেশ এখনো নারীর ক্ষমতায়নে যে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি, জাতির পিতার অন্যতম স্বপ্ন ছিল নারীদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। ১৯৭২ সালের সংবিধানে নারীর জন্য সংসদে আসন সংরক্ষণসহ নারীর সমান অধিকার তিনি প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। স্বাধীনতা অর্জনের পরই তিনি জাতিকে উপহার দিয়েছেন বিশ্বসেরা সংবিধান। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের সময় নারী উন্নয়নকে প্রাধান্য দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু।
তিনি আরো বলেন, শোষন ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন লড়াই সংগ্রাম করেছেন। জাতির পিতা তাঁর এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে ছায়াসঙ্গী হয়ে কাজ করে গেছেন বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব। নারীদের সার্বিক মুক্তিসহ সকল আন্দোলন সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর জন্য অনুপ্রেরণা ছিলেন আলোকিত এই নারী। আজ বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নারী উন্নয়নে ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ বাহিনী সহ সকল ক্ষেত্রে আজ নারীদের অংশগ্রহণ দৃশ্যমান। নারীরা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সকল দায়িত্ব পালন করছে।
ফরিদা ইয়াসমিন ‘নারী উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক প্রবন্ধে যুদ্ধকালীন সময়ে নির্যাতিত নারীদের বীরঙ্গনা খ্যাত প্রদানসহ নারী অধিকার রক্ষায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের বিভিন্ন দিকে তুলে ধরেন। সাংবিধানিকভাবে, আইনগতভাবে, সামজিক ও অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশের নারীদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন পথিকৃৎ।
তিনি বলেন, আজ বিশ্বের নারী পুরুষের বৈষম্য প্রতিবেদন বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের চেয়েও উপরে। বাংলাদেশের অবস্থান ৪৮তম। এক্ষেত্রে আমেরিকার অবস্থান ৫১তম, ভারতের অবস্থান ১০৮ ও পাকিস্তানের অবস্থান ১৪৮।
-শিশির