বিএনপি হইতো একটা কথা আছিল, ব্যবস্থা নিতে পারতামঃ ওসি আক্তার

সারাদেশঃ
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে পুলিশের এক কর্মকর্তাসহ দু’কনস্টেবলকে মারধর করেছে গোপালদী পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুজয় সাহা ও সহযোগীরা।

এ ঘটনায় এইসব ছাত্রলীগ নেতাদের আটক করার পর ছেড়ে দিয়েছেন থানার ওসি আক্তার হোসেন।

বুধবার দুপুরে উপজেলার গোপালদী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে ঢুকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এই হামলা চালায়।

থানার ওসি আক্তার হোসেন বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘পুরো ঘটনাই ঘটেছে নজরুল ইসলাম বাবু কলেজে। সেখানে নিজেদের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়েছিল।’ আর বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ করে হামলার শিকার ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে উদ্দেশ্য করে অশ্লীল মন্তব্যও করেন তিনি।

ওসি আরো বলেন, ‘কালকে এমপি সাব আমেরিকা গেছে। সব নিজেরা নিজেরা। বিএনপি হইতো একটা কথা আছিলো, ব্যবস্থা নিতে পারতাম।’

এদিকে হামলার শিকার পুলিশের এটিএসআই মামুন দাবি করেন, তাকে ও ২ পুলিশ সদস্যকে তদন্তকেন্দ্রে ঢুকে মারধর করা হয়েছে এবং গুলি করে হত্যার হুমকি দেন ছাত্রলীগ নেতা সুজয়।

এ বিষয়ে স্থানীয় লোকজন জানান, বুধবার সকাল ১১টার দিকে মাদকসেবন ও ইভটিজিংয়ের অপরাধে উপজেলার রামচন্দ্রদী গ্রামের জামালউদ্দিনের ছেলে দিদার ইসলামকে গোপালদী বাজার থেকে আটক করে পুলিশ। সুজয় তার আটকের খবর জানার পর দিদারকে ছাড়িয়ে আনার তদন্তকেন্দ্রে যান।

দিদারকে ছাড়তে অস্বীকৃতি জানালে সুজয় পুলিশকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এ সময় এটিএসআই মামুন তার প্রতিবাদ করলে সুজয় ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে মারধর শুরু করেন। এছাড়াও সুজয় ফোন করলে তার সহযোগীরা তদন্তকেন্দ্রে আসে এবং পুলিশের উপর হামলা চালাতে থাকেন। এ সময় কনস্টেবল ইমরান ও বাশার এগিয়ে আসলে তাদের উপরেও হামলা চালায় তারা।

হামলার খবর পেয়ে আড়াইহাজার থানার ওসি আক্তার হোসেন অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে তদন্তকেন্দ্রে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে সুজয় ও দিদারকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। আর আহত পুলিশ কর্মকর্তা মামুন, কনস্টেবল আবুল বাশার ও ইমরানকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।

এ ব্যাপারে ওসি আক্তার হোসেন প্রথমে সাংবাকিদের জানান, পুরো ঘটনার জন্য মামলার প্রস্তুতি চলছে।

কিন্তু বিকালে আটককৃত ছাত্রলীগ নেতা সুজয় ও কর্মী দিদারকে ছেড়ে দেয়ার পরই ওসি আক্তার হোসেনের বক্তব্য বদলে যায়। এমনকি দ্রুত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি থাকা আহত এটিএসআই মামুন ও ২ কনস্টেবলকে সেখান থেকে নিয়ে আসা হয়।

এর পর ওসি আক্তার হোসেনকে সাংবাদিকদের নিউজ না করার জন্য অনুরোধ করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘বিষয়টি ভুলবোঝাবুঝি ছিল। তদন্তকেন্দ্রে কোনো ঘটনা ঘটেনি। যা ঘটেছে নজরুল ইসলাম বাবু কলেজে। কালকে এমপি সাব আমেরিকা গেছে। সব নিজেরা নিজেরা। পেপার পত্রিকায় দেয়া দরকার নাই। ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। ওভাবেই শেষ করে দিয়েছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আপনারাও আওয়ামী লীগ তারাও আওয়ামী লীগ। বিএনপি হইতো একটা কথা আছিল, ব্যবস্থা নিতে পারতাম। আমি আমার বড় স্যারের লগে কথা কইছি। আওয়ামী লীগের নেতারাই আসছিল। এসব নিয়া এখন আর লেখালেখির দরকার নাই। আর আমার ওইটারও (এটিএসআই মামুন) দোষ আছে। এসব লইয়া ভাই লেখালেখির দরকার নাই। এটা সবারে বইলা দেন। আর অনলাইনগুলা আমি দেখতাছি।’

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter