বিয়ের বিদায় অনুষ্ঠানের দিনেই নববধূর আত্নহত্যা

সারাদেশঃ

যশোরে মা হতে পারবেন না জেনে নিজের বিদায় অনুষ্ঠানের দিন আত্মহত্যা করেছেন এক নববধূ। ওই বধূর নাম সোনিয়া খাতুন। তিনি যশোর সরকারি মহিলা কলেজের অনার্স ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। ২০ জুলাই, সোমবার ভোরে বাবার বাড়িতেই আত্মহত্যা করেন তিনি।

সোনিয়া জেলার মনিরামপুর উপজেলার খেদাপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জালালপুর গ্রামের ওয়ার্ড মেম্বার মুনছুর আলীর ছোট মেয়ে। আর তার স্বামী পিয়াল হোসেন ভারতের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র।

জানা গেছে, মুনছুর আলীর এক ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে সোনিয়া সবার ছোট। আর পিয়াল জেলা সদর উপজেলার ভাতুড়ীয়া গ্রামের মইন উদ্দিনের ছেলে। তিনি ভারতের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র। লেখাপড়ার সুবাদে যশোরে তাদের পরিচয় এবং প্রেমের সম্পর্ক হয়। এরপর গত ১০ জুন বিয়ে করেন তারা। পরে সোমবার দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে সোনিয়াকে শ্বশুর বাড়িতে পাঠানোর আয়োজন করা হয়। কিন্তু গাইনোকলজিক্যাল সমস্যায় কখনো মা হতে পারবেন না চিকিৎসকের দেয়া এমন রিপোর্টের কথা জানতে পেরে ভোরে বাবার বাড়িতেই আত্মহত্যা করেন তিনি।

এ বিষয়ে মুনছুর আলী জানান, সোনিয়া অসুস্থ হলে তাকে যশোরের একজন গাইনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ওই চিকিৎসক সোনিয়ার বাবাকে গোপনে জানান, তার মেয়ে কখনো গর্ভধারণ করতে পারবেন না। তিনি এ কথা তার স্ত্রীকে জানান। পরে সোনিয়া তার মায়ের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পারেন। এরপর থেকে সোনিয়ার মন সব সময় খারপ থাকতো। এর মধ্যে দুই পরিবারের সম্মতিতে সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে সোনিয়াকে তার শ্বশুর বাড়িতে নেয়ার দিন ঠিক করা হয়। সে অনুযায়ী বাড়িতে অনুষ্ঠানের সব আয়োজন সম্পন্ন করেন মুনছুর আলী। কিন্তু তার আগেই সোনিয়া ভোরে সকলের ঘরের আঁড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন।

এদিকে স্ত্রীর মৃত্যুর কথা শুনেই পিয়াল ও তার অভিবাবকরা ছুটে আসেন। পিয়ালও তার স্ত্রীর মরদেহ জড়িয়ে ধরে বিলাপ করেন।

এ বিষয়ে মনিরামপুর থানার ওসি (সার্বিক) রফিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় সোনিয়ার বাবা থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।

-ডিকে

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter