মাধ্যমিক শিক্ষকদের বেতন বন্ধের আভাস

মাধ্যমিক শিক্ষকদের বেতন বন্ধের আভাস

শিক্ষাঃ
নিয়ম অনুযায়ী সরকারি মাধ্যমিক স্কুলে ৫০ ভাগ সিনিয়র শিক্ষক ও ৫০ ভাগ সহকারী শিক্ষক থাকার কথা। কিন্তু এ নিয়ম মানছে না কোনো বিদ্যালয়।

এর ফলে সরকারি মাধ্যমিকে সিনিয়র শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের বিভাজন না থাকায় বেতন বন্ধ হতে যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

মাউশি কর্মকর্তারা বলছেন, সম্প্রতি সহকারী প্রধান শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষক করা হয়েছে। এর ফলে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে সিনিয়র শিক্ষকদের পদোন্নতি দেয়া হবে। এর ফলে সিনিয়র শিক্ষক কম হওয়ায় ৪১৩ জন নতুন সিনিয়র শিক্ষককে পদোন্নতি দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। তবে এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আপত্তি থাকায় প্রস্তাবনাটি ঝুলে আছে।

জানা যায়, সহকারী শিক্ষক থেকে সিনিয়র শিক্ষক পদোন্নতি দেয়ায় দেখা যাচ্ছে একটি স্কুলে ৭০ ভাগ এখন সিনিয়র শিক্ষক। অন্যদিকে সহকারী শিক্ষক মাত্র ৩০ ভাগ।

দেশের জেলা উপজেলা পর্যায়ে এই সংকট তীব্র না থাকলেও রাজধানীর একটি স্কুলে ৮০ শতাংশের বেশি সিনিয়র শিক্ষক। এর মধ্যে সমস্যা আরো প্রকট হয়েছে। একারণে বিভাজন নীতিমালা অনুসরণ না করায় শিক্ষকদের বেতনের বিষয়ে আপত্তি দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। কিন্তু মাউশির তদবিরে এখন পর্যন্ত বেতন বন্ধ হয়নি।

তবে এ অবস্থা চলতে থাকলে এসব শিক্ষকদের বেতন বন্ধ করে দেবে সরকার। এরই মধ্যে সাবজেক্ট সমস্যার কারণে বহু নতুন শিক্ষক যোগদান করার পরও সরকারি বেতন পায়নি।

তবে এ বিষয়ে মাউশি পরিচালক (বিদ্যালয়) মো. বেলাল হোসাইন গণমাধ্যমকে বলেন, বেতন বন্ধ হওয়ার মতো কোনো আশঙ্কা দেখছি না। এ বিষয়ে একটা জটিলতা তৈরি হয়েছে এটা সত্যি। আমরা সমস্যাটি মন্ত্রণালয়ে উপস্থাপন করেছি। শিক্ষা মন্ত্রণায়ের নির্দেশনা পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হলে সংকট কেটে যাবে।

মাউশি সূত্র জানায়, সম্প্রতি সিনিয়র শিক্ষকদের নিয়ে আরো একটি জটিলতা তৈরি হয়েছে। কে কোন বিষয়ের শিক্ষক এটি তারা উল্লেখ করছে না। যে কারণে ধর্ম বিষয়ের শিক্ষক গণিত পড়াচ্ছেন। আবার বাংলার শিক্ষক পড়াচ্ছেন বিজ্ঞান। এমন অবস্থারও পরিবর্তন চাইছে মন্ত্রণালয়।

মাউশি কর্মকর্তারা বলেন, আমাদের কাছে যে পিডিএস আছে সেখানে কে কোন বিষয়ের শিক্ষক তা উল্লেখ আছে। কিন্তু বাইরে তারা নিজের বিষয়ে লুকিয়ে অনেকেই শ্রেণিক্লাস ও প্রাইভেট পড়াতে বাড়তি সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করছেন। আমরা চাইছি সিনিয়র শিক্ষক হলেও কে কোন বিষয়ের শিক্ষক তা উল্লেখ থাকতে হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাউশি মাধ্যমিক শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় সিনিয়র শিক্ষক বেশি হওয়ায় ৭০০ নতুন শিক্ষকের নিয়োগের চিন্তা করা হচ্ছে।

যেহেতু শিক্ষক নিয়োগ বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে হয় সে কারণে এই পরিমাণ নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা দিয়ে আমরা চিঠি দিয়েছি। আশা করছি নতুন শিক্ষক নিয়োগ হলে শিক্ষক সংকট থেকে সব ধরণের সমস্যা কেটে যাবে।

-আরপি

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter