যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ান মিলিয়ন মাস্ক থেকে অনুদান পেল প্রাভা হেলথ

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ান মিলিয়ন মাস্ক থেকে অনুদান পেল প্রাভা হেলথ

স্বাস্থ্যঃ
প্রাভা হেলথ সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটি ভিত্তিক একটি দাতব্য সংস্থা “ওয়ান মিলিয়ন মাস্ক” থেকে কোভিডের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী চলমান লড়াইয়ের কাজকে তরান্বিত করার জন্য অনুদান পেয়েছে।

ওয়ান মিলিয়ন মাস্কের এই অনুদান কোভিড এর নমুনা সিকোয়েন্সিংয়ের খরচ বহন করার কাজে ব্যয় করা হবে।

প্রাভা হেলথ বর্তমানে চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশান (সি এইচ আর এফ) এর সাথে একটি গবেষনায় কাজ করছে।

এই গবেষনায় প্রাভা হেলথে সংগৃহীত নমুনাগুলোর মধ্যে কোন ধরনের ভ্যারিয়েন্ট উঠে আসছে তা সনাক্ত করা হচ্ছে।

প্রাভা হেলথ এর স্যাম্পল থেকে পাওয়া তথ্য উপাত্ত সমূহ জি আই এস এ আই ডি (GISAID) তে অবদান রাখছে যা কিনা একটি সার্স কোভ-২ (SARS-CoV-2) এর আন্তর্জাতিক ওপেন এক্সেস রেপোজিটরি। অনুদানের পরিমান জনসাধারনের জন্য প্রকাশ করা হয় নি।

ওয়ান মিলিয়ন মাস্ক হলো নিউজক্রেডের সহপ্রতিষ্ঠাতা (কো-ফাউন্ডার) এবং ওয়েলকাম সফ্টওয়্যারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শাফকাত ইসলামের শুরু করা একটি তৃণমূল উদ্যোগ।

ওয়ান মিলিয়ন মাস্কের দলটি নিউ ইয়র্ক এবং এর বাইরে প্রথম সারির স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের কাছে এক মিলিয়ন মাস্ক পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে।

“মহামারীর শুরু থেকে প্রাভা ১,৫০,০০০ এরও বেশি কোভিড টেস্ট করেছে যা আজ পর্যন্ত বাংলাদেশে করা মোট টেস্টের প্রায় ৩ শতাংশ।

প্রাভা হেলথের প্রতিষ্ঠাতা, সভাপতি (চেয়ার), প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিলভানা কিউ সিনহা বলেন, “কোভিড-১৯ ভাইরাস নিয়ে স্থানীয় ও বিশ্বব্যাপী অবদান রাখার ক্ষেত্রে আমাদের কিছু কোভিড স্যাম্পলের সিকোয়েন্সিংয়ের কাজকে তরান্বিত করার জন্য ওয়ান মিলিয়ন মাস্ক এর এই অবদানের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ”।

“ওয়ান মিলিয়ন মাস্ক প্রাথমিকভাবে নিউ ইয়র্কবাসীদের সাহায্য করার উদ্দ্যেশ্যে যাত্রা শুরু হয়েছিল। কিন্তু আমরা দ্রুত বুঝতে পেরেছিলাম যে সারা বিশ্বে এমন অনেক লোক রয়েছে যাদের আমরা সাহায্য করতে পারি।

বাংলাদেশে প্রতি নাড়ির টান এবং আমাদের দল এই দুইয়ের সমন্বয়ের কারনে প্রাভা হেলথের সাথে অংশীদারিত্ব করতে পেরে আমরা রোমাঞ্চিত”।

নিউজক্রেডের সহপ্রতিষ্ঠাতা (কো-ফাউন্ডার) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শাফকাত ইসলাম বলেন, “প্রাভা হেলথ মাঠ পর্যায়ে অবিশ্বাস্য কাজ করছে এবং আমরা অনুভব করেছি দ্রুততম সময়ে বাংলাদেশে প্রভাব ফেলার এটি একটি ভালো উপায়”।

কোভিডের নতুন ভ্যারিয়েন্ট বের হওয়া, কোভিড টেস্টের উপর এর প্রভাব এবং বাংলাদেশ ও দেশের বাইরে এই রোগ ছড়িয়ে পড়া নিয়ে প্রাভা হেলথ উদ্বিগ্ন।

আজ পর্যন্ত, বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী সিকোয়েন্সিং ডেটায় ৫,০০০ এরও কম স্যাম্পল সংগ্রহে অবদান রেখেছে যা বাংলাদেশের জনসংখ্যার সাথে তুলনা করলে সিকোয়েন্সিংয়ের লেভেল অত্যন্ত কম।

যে ১৭২ টি দেশ ১.২ মিলিয়ন কেসের জন্য সিকোয়েন্সিং ডেটা আপলোড করেছে, তাদের মধ্যে অনেকেই ১% কেসেরও কম রিপোর্ট করেছে।

কিন্তু বাংলাদেশের সিকোয়েন্সিং লেভেল আরো অনেক কম, মোট কেসের মাত্র ০.০০৫% যা কিনা জিআইএআইডিতে (GISAID) জমা দেওয়া হয়েছে।

GISAID বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ এর জিনোম সিকোয়েন্সিং এর ডেটা সংগ্রহ এর কাজ করে থাকে।

প্রাভা হেলথের সিনিয়র ল্যাবরেটরি ডিরেক্টর ডা. জাহেদ হুসাইন বলেন, “বাংলাদেশে প্রচলিত ভ্যারিয়েন্টের উপর আমাদের সামগ্রিক ধারনার প্রসার এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য, ক্রমাগত কোন ভ্যারিয়েন্ট গুলো ধরা পড়েছে তা নির্ধারণ করতে প্রাভা কাজ করছে।

ভাইরাল জিনোমের উদ্ভূত বৈচিত্র ও জনস্বাস্থ্যের উপর এর প্রভাবের আলোকে কোভিড টেস্টের বিশ্বস্ততা নির্ধারণ করতে আমরা সি এইচ আর এফ-এর (CHRF) সাথে সহযোগিতা করে যাচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “এই অনুদান আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এই প্রকল্পের কাজকে আরও বেগবান করতে সহায়তা করবে।”

চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (সি এইচ আর এফ) লক্ষ্য হল, ‘সংক্রমণ প্রতিরোধ করা এবং জীবন বাঁচানো’।

এই ফাউন্ডেশন রোগের কারণ কী তা বোঝার জন্য কাজ করে এবং প্রমাণ-ভিত্তিক পলিসি প্রতিষ্ঠার জন্য পরামর্শ দেয়।

প্রতিষ্ঠানটির নেতৃত্বে রয়েছেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট মাইক্রোবায়োলজিস্ট ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ নির্বাহী পরিচালক ডা. সামির কে সাহা।

তিনি ঢাকা শিশু হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি ডায়াগনস্টিক বিভাগের অধ্যাপক, সিনিয়র কনসালট্যান্ট এবং প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

-শিশির

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter