রাত ৮ টার পর ঢাকা শহর বন্ধ রাখার উদ্যোগ

রাত ৮ টার ঢাকা শহর বন্ধ রাখার উদ্যোগ

সিটি করপোরেশনঃ
আগামী ১ জুলাই থেকে ঢাকা শহর রাত ৮টার পর বন্ধ করার জন্য আমরা উদ্যোগ নিবেন বলে জানিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিষ্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

তিনি বলেন, ‌‘পৃথিবীর সব শহরেরই একটি সময়সীমা আছে, ঢাকা শহরের কোনো সময়সীমা নেই। সুতরাং এ বিষয়ে আমরা সবার সঙ্গে আলাপ করছি।

আগামী ১ জুলাই থেকে ঢাকা শহর রাত ৮টার পর বন্ধ করার জন্য আমরা উদ্যোগ নেব। অবশ্য রেস্তোরাঁ ও অত্যাবশ্যকীয় যে বিষয়গুলো রয়েছে সেগুলো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য খোলা থাকবে।’

শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স ও বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা (ইউআরপি) বিভাগ আয়োজিত ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।

টেকসই শহর ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে সব শহরের মতো দৈনন্দিনভিত্তিতে ঢাকা শহরেরও সব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও কর্মযজ্ঞ শেষ করার একটি সুনির্দিষ্ট সময় থাকা আবশ্যক উল্লেখ করে মেয়র তাপস বলেন, ‘করোনাকালে জনজীবন যখন স্তব্ধ ছিল তখন প্রকৃতিকে নবউদ্যমে জেগে উঠতে আমরা দেখেছি। কারণ, প্রকৃতির বিশ্রাম করার সময় লাগে। তেমনি ঢাকা শহরের ব্যবস্থাপনার জন্য সময় প্রয়োজন।

আমরা সারাদিনই ঢাকার ওপর অত্যাচার করব আর ঢাকা আমাকে সুন্দর পরিবেশ উপহার দেবে, সেটা কামনা করা যৌক্তিক নয়।’

মেয়র তাপস বলেন, ‘ঢাকা সিটি করপোরেশনের যে নর্দমাগুলো করা হয়েছে, সেই নর্দমাগুলো শুধু পানি নিষ্কাশনের জন্য। সেগুলো পয়োবর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য নয়। পয়োবর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করবে ঢাকা ওয়াসা।

যেহেতু ওয়াসা পয়োবর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেনি সেহেতু ঢাকাবাসী পয়োবর্জ্যের সংযোগগুলো আমাদের নর্দমায় দিয়ে দেয়। যার কারণে এই নর্দমাগুলো থেকে পয়োবর্জ্য খালে গিয়ে পৌঁছায়। ফলে খালের পানি কালো।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামী ১ জুলাই থেকে আমরা সেটা কঠোর বাস্তবায়নে যাব। ঢাকা শহরে যেকোনো ইমারত নির্মাণ করলে তাহলে অবশ্যই সেখানে সোক ওয়েল থাকতে হবে, সেফটিক ট্যাংক থাকতে হবে। এটা আবশ্যকীয়। এটার আইন আছে। আমরা সেই আইনের কঠোর বাস্তবায়নে যাব।’

খালগুলো শুধু বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের বদলে পয়োবর্জ্য নিষ্কাশনের মাধ্যমে হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে আক্ষেপ প্রকাশ করে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ‘আমাদের খালগুলোর যে পানি তা দেখলে আপনাদের কারো ভালো লাগবে না।

কারণ, আমাদের সকল পয়োবর্জ্য নিষ্কাশন হয় এসব খাল দিয়ে। অথচ খালগুলো দিয়ে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের কথা। কিন্তু সেখানে বৃষ্টির পানির সাথে পয়োবর্জ্য যোগ হয়ে খালগুলো পয়ঃনিষ্কাশনের একটি ব্যবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

সেমিনারে জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা প্রনয়ণ প্রকল্পের টিম লিডার ড. আইনুন নিশাত জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।

বিআইপি’র সভাপতি পরিকল্পনাবিদ ফজলে রেজা সুমনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বুয়েটের উপাচার্য সত্য প্রসাদ মজুমদার, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহিদ উল্লা খন্দকার, জিআইজেড বাংলাদেশের অ্যাডাপটেশন অব আরবান এরিয়াস টু ক্লাইমেট চেইঞ্জ এর প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর ড. ডানা দে লা ফনটেইন বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে অঞ্চল ও নগর পরিকল্পনাবিষয়ক দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন ২০২১ এর প্রকাশনা উন্মোচন এবং অঞ্চল ও নগর পরিকল্পনাবিষয়ক তৃতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন ২০২৩ এর ঘোষণা দেওয়া হয়।

-টিপু

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter