রিনিউঅ্যাবল ও গ্যাস পাওয়ার এনার্জির দ্রুত বিস্তারের আহ্বান

রিনিউঅ্যাবল ও গ্যাস পাওয়ার এনার্জির দ্রুত বিস্তারের আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
২০৩০ সালের মধ্যে জিই’র সকল কার্যক্রমে কার্বন নিউট্রালিটির প্রতিশ্রুতি এবং নব-গঠিত কয়লা পাওয়ার মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ নিজস্ব অবস্থান ঘোষণা করেছে।

ভবিষ্যত পৃথিবীতে কার্বন নিঃসরণ কমাতে একটি উপায় রিনিউঅ্যাবল এনার্জি ও গ্যাস পাওয়ার আসন্ন-মেয়াদে জলবায়ু পরিবর্তনে টেকসই উন্নয়নে সক্ষম হবে।

দশক ব্যাপী ডিকার্বনাইজেশনের প্রতিশ্রুতি বিস্তারে “অ্যাক্সিলের‍্যাটেড গ্রোথ অব রিনিউঅ্যাবলস অ্যান্ড গ্যাস পাওয়ার ক্যান র‍্যাপিডলি চেঞ্জ দেয়ার ট্র্যাজেক্টরি অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’ শীর্ষক সদ্য প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জিই জানায় শুধুমাত্র পাওয়ার সোর্সই এর জন্য যথেষ্ট হবে না; তবে টেকসই জলবায়ু পরিবর্তনের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করতে জিই পেস ও স্কেলে ডিকার্বনাইজেশন সরবরাহ করতে পারবে।

হাইড্রোজেন সহ লো এবং জিরো কার্বন জ্বালানীর পাশাপাশি কার্বন ক্যাপচার ইউটিলাইজেশন অ্যান্ড সিক্যুয়েস্ট্রেশন প্রযুক্তি (সিসিইউএস) ব্যবহারের মাধ্যমে গ্যাস পাওয়ারের জন্য একাধিক কারিগরি উপায়ের কথাও বলা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে, যা লো-কার্বন উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত হবে।

জিই গ্যাস পাওয়ার-এর সিইও স্কট স্ট্র্যাজিক বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন এখন বিশ্বের জন্য জরুরিভিত্তিক অগ্রাধিকার তালিকাভুক্ত একটি বিষয় এবং আমরা ভাবলাম আরও এক দশক পরে নয়, বরং এখন থেকেই এ লক্ষ্যে কাজ শুরু করতে হবে। আর তাহলেই আমরা এ লক্ষ্য অর্জনে ভালো কিছু করতে পারব।”

তিনি আরও বলেন, “কোল-টু-গ্যাস রূপান্তরের মাধ্যমে বৈশ্বিক প্রচেষ্টাকে আরও বেগবান করে ভবিষ্যতে লো-টু-জিরো প্রযুক্তির জন্য একাধিক পথ তৈরি করার ক্ষেত্রে গ্যাস পাওয়ার ও রিনিউঅ্যাবল এনার্জি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।”

সারাবিশ্বে পাওয়ারের ক্রমবর্ধমান চাহিদার এই সময়ে জরুরি জলবায়ু পরিবর্তন লক্ষ্য অর্জনে রিনিউঅ্যাবল এনার্জি পেনাট্রেশনকে সমর্থন দিতে বিশেষ সহযোগী হতে পারে গ্যাস-ফায়ার্ড জেনারেশন, যার উল্লেখযোগ্য কারণগুলো

প্রতিবেদনে বিস্তারিতভাবে যা বর্ণনা করা হয়েছে:
• গ্যাস নির্ভরযোগ্য, সাশ্রয়ী এবং খুব বেশি জায়গার প্রয়োজন হয় না; এটি রিনিউঅ্যাবল এনার্জির আদর্শ সহায়ক।

• রিনিউঅ্যাবল এনার্জি পরিবর্তনশীল, গ্যাস পাওয়ার দ্রুত স্থানান্তর যোগ্য, নির্ভরযোগ্য এবং নমনীয়, ৯০% সময়েই পাওয়া যায়।

• কোল-টু-গ্যাস ট্রানজিশনের দ্রুততম ফলাফল বিশ্বের অনেক অঞ্চলে দ্রুত ও কার্যকরভাবে কার্বন নিঃসরণ কমাতে সাফল্য অর্জনে সক্ষম হবে। উদাহরণস্বরূপ, ২০০৭ সাল থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাওয়ার সেক্টরে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ কমেছে এক-তৃতীয়াংশ, যেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদনে তা একই রয়ে গেছে। অন্য যেকোন জ্বালানী উৎসের তুলনায় কোল-টু-গ্যাস ট্রানজিশনই কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে।

প্রকাশিত প্রতিবেদনটি রিনিউঅ্যাবল, গ্যাস, কয়লা এবং নিউক্লিয়ার সহ যেসব প্রযুক্তির জন্য অধিক প্রতিযোগিতামূলক ব্যাটারি স্টোরেজ তৈরি করতে হয়েছে এমন বেশকিছু পাওয়ার জেনারেশন সোর্স-এর টেকনোলোজি ও মার্কেট ওভারভিউ তুলে ধরেছে।

জিই’র গ্যাস পাওয়ার এবং রিনিউঅ্যাবল বিজনেস উভয় প্রতিষ্ঠানের চিফ টেকনোলোজি অফিসার ও সাবেক সিইও, জিই সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ভিক অ্যাবেট বলেন, “ইলেক্ট্রিসিটি ইন্ডাস্ট্রিতে দীর্ঘ ১২৫ বছরেরও বেশি সময়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে, জিই তার গ্রাহকদের সাথে নিয়ে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য এবং এনার্জির ভবিষ্যৎ নির্ধারণের জন্য বেশ শক্তিশালী অবস্থানে আছে।

তিনি আরও বলেন, “আমরা হাইড্রোজেন ও কার্বন ক্যাপচার টেকনোলোজির সাহায্যে সাশ্রয়ী স্কেলে রিনিউঅ্যাবল ও নেট জিরো গ্যাস পাওয়ারে উন্নীত হওয়ার জন্য প্রযুক্তিতে বিনিয়োগে অগ্রাধিকার দিচ্ছি।

রিনিউঅ্যাবল ও গ্যাসের সমন্বয় এমন একটি এনার্জি ট্রানজিশনে সহায়ক হবে, যা আমাদেরকে অন্য যেকোন রিনিউঅ্যাবলের তুলনায় দ্রুত কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম করে তুলবে।

জিই রিনিউঅ্যাবল এনার্জি, এমন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে বিনিয়োগ চালিয়ে যাচ্ছে যা নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যয়কে কমিয়ে দিচ্ছে এবং হোয়াইটপেপারে এটাকে এই শিল্পের অব্যাহত প্রবৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে তার হালিয়াড-এক্স অফশোর বায়ু টারবাইন বর্তমানে সবচেয়ে শক্তিশালী টারবাইন এবং এটি যুক্তরাজ্যের ডগার ব্যাংকের অফশোর বায়ু ফার্মের প্রথম দুই পর্যায়ের অংশ হিসাবে ১৩ মেগাওয়াটে উন্নীত হবে।

জিই-র গ্যাস টারবাইন পোর্টফোলিওটি ৮০ বছরের গ্যাস টারবাইন প্রযুক্তির ঐতিহ্যের উপর নির্মিত, যা বিদ্যুৎ উৎপাদনশিল্পে অতুলনীয় এবং জিইর এইচ এ গ্যাস টারবাইন (বিশ্বের সবচেয়ে সমৃদ্ধ গ্যাস টারবাইন এবং দ্রুত বর্ধমান বহর) যা ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি শিল্প-প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছে এবং দুটি বিশ্ব রেকর্ড অর্জন করেছে। জিই হাইড্রোজেন এবং লো-বিটিইউ জ্বালানী অপারেশনে শিল্পের সবচেয়ে সমৃদ্ধ টারবাইন সরবরাহ করে, যা কিনা ৭৫ টিরও বেশি গ্যাস টারবাইন ব্যবহার করে এক দশকে ৬ মিলিয়নেরও বেশি কর্ম ঘন্টা পরিচলানা করেছে। জিই গ্লোবাল রিসার্চ সেন্টারের সাথে ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্বে হাইড্রোজেন এবং কার্বন ক্যাপচার প্রযুক্তিগুলিতে গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ চালিয়ে যাচ্ছে যা- গ্যাস পাওয়ারের জন্য কম বা শূন্যের কাছাকাছি কার্বন লক্ষ্য অর্জনে আরও এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে।

জিই-র গ্যাস পাওয়ার প্রকল্প ২০২০ সালে ইউনিপার এবং লং রিজ এনার্জি সেন্টার -এর সাথে চুক্তি সহ বেশ কয়েকটি বড় কৌশলগত গ্রাহক বান্ধব ডিকার্বোনাইজেশন প্রোগ্রামে স্বাক্ষর করেছে। জিই হাইড্রোজেন-জ্বালানী প্রকল্প এবং কার্বন ক্যাপচার অ্যান্ড সিকোয়েস্ট্রেশন টেকনোলোজিস উভয়ের জন্য ২০২০ ও ২০২২ সাল জুড়ে গ্রাহকদের সাথে একাধিক ডিকার্বোনাইজেশন পাইলট প্রকল্প পরিচালনা করছে। পরিশেষে, জিই গ্যাস পাওয়ার কার্বন ক্যাপচার কোয়ালিশনে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

কার্বন ক্যাপচার কোয়ালিশন- কার্বন ক্যাপচার, পরিবহন, ব্যবহার, অপসারণ এবং স্টোরেজ অর্থনীতির বিস্তৃত স্থাপনার জন্য ফেডারেল পলিসি সাপোর্ট তৈরির লক্ষ্যে ৮০ টিরও বেশি ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত নিরপেক্ষ মৈত্রী।

–শিশির

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter