রেল ভ্রমনে নারীদের আলাদা কামরা চেয়ে রিট

রেল ভ্রমনে নারীদের আলাদা কামরা চেয়ে রিট

অনলাইনঃ
নারীদের স্বাচ্ছন্দে ও নিরাপদে রেলগাড়িতে ভ্রমণ করতে পারে এজন্য আলাদা কামরা (বগি) বরাদ্দের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে।

জনস্বার্থে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় গতকাল ১৩ জানুয়ারি, বুধবার এ রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আজমল হোসেন খোকন।

রিটে রেলপথ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট চারজনকে বিবাদী করা হয়েছে। সাথে সাথে নারীরা যাতে নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারেন, সেজন্য ট্রেনে তাদের জন্য আলাদা কামরা বরাদ্দের বাস্তবায়ন চেয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে।

রিটের বিবাদীরা হলেন—স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক ও রেলওয়ে পরিদর্শক। রিট করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন আইনজীবী নিজে।

তিনি জানান, গতকাল ১৩ জানুয়ারি, বুধবার এ রিট আবেদন করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহের যেকোনো দিনে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হতে পারে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আজমল হোসেন খোকন বলেন, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের আইন অনুযায়ী নারীদের জন্য আলাদা কামরা বরাদ্দ দেয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। তারপরও তাদের জন্য আলাদা কোনো কামরা বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে না। আমি শুধু রেলের সেই নিয়মটি বাস্তুবায়ন চাই। কারণ ট্রেনে ভ্রমণ অত্যন্ত আরামদায়ক। কিন্তু কোনো নারী যদি একা ট্টেনে যাতায়াত করতে চান, তা হলে প্রচণ্ড ভীড় ঠেলে রেলগাড়িতে উঠা যেমন কষ্টকর, তেমনি শতশত পুরুষের সাথে ধাক্কাধাক্কি করে ট্রেনের কামরার ভিতরে আসন পর্যন্ত গিয়ে সিটে বসাটাও টাফ হয়ে যায়।’

তিনি বলেন, ‘যেসব নারীরা দুধের শিশু নিয়ে ট্রেনে উঠেন, তারা নির্দ্বিধায় তার শিশুকে দুধ পান করাতে পারেন না। কারণ শত শত নারী-পুরুষের ঠাসা রেলের কামরায় নিজেকে বসতে অস্বস্তিবোধ করেন, সেখানে শিশুদের দুধ পান করানো আরো কঠিন। তাই আলাদা কামরা বরাদ্দ হলে শিশুদের দুধ পান করাতে তাদের কোনো সমস্যা হবে না।’

এই আইনজীবী আরো বলেন, ‘ট্রেনে ভ্রমণের সময় যদি নামাজের সময় হয়, তখন তারা নিমতিতা সেখানে নামাজও আদায় করতে পারবে।’

তিনি বলেন, ‘রাতে কোন নারী একা ট্রেনে ভ্রমণ করতে চাইলে, তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। তাই নারীদের জন্য আলাদা কামরা বরাদ্দ দিলে দিনে কিংবা রাতে নারীরা তাদের কামরায় নির্দ্বিধায় উঠে তাদের আসনে বসতে পারবে। এতে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁকিও কমবে।’

আইনজীবী আজমল হোসেন খোকন জানান, প্রতিটি ট্রেনে নারীদের জন্য পৃথক একটি কামরার কথা বলা থাকলেও সেটি কোনো ট্রেনে বাস্তবায়ন না হওয়ায় এর আগে নারীদের জন্য আলাদা কামরা বরাদ্দ চেয়ে ২০২০ সালে ১৩ অক্টোবর রেল মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি একটি (আইনি) লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিলেন তিনি।

নোটিশে বলা হয়েছিলো, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে আইন, ১৮৯০’ এর ৬৪ ধারায় নারীদের জন্য একটি কামরা বরাদ্দ রাখার বিধান থাকলেও এখন পর্যন্ত আইনটি বাস্তবায়ন হয়নি। এজন্য লিগ্যাল নোটিশটি পাঠানো হয়েছিলো।

নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছিলো। অন্যথায় বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে উচ্চ আদালতের নজরে আনা হবে বলেও উল্লেখ করেছিলেন আইনজীবী। লিগ্যাল নোটিশেরর পরেও কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় হাইকোর্টে এর প্রতিকার চেয়ে রিট আবেদন করা হয়েছে।

-ডিকে

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter