শর্ত ভঙ্গ করায় হাটহাজারী মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা

শিক্ষাঃ

চট্টগ্রামের হাটহাজারীর আল-জামিয়াতুল তাহলিমা দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণাণয়। আরোপিত শর্ত ভঙ্গ হওয়ার কারণে মাদ্রাসাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়।

১৭ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সহকারী সচিব সৈয়দ আসগর আলী স্বাক্ষরিত এই সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গত ২৪ আগস্ট কতিপয় শর্তসাপেক্ষে কওমি মাদ্রাসাসমূহের কিতাব বিভাগের কার্যক্রম শুরু ও পরীক্ষা গ্রহণের জন্য অনুমতি প্রদান করা হয়। তবে আরোপিত শর্তসমূহ পালিত না হওয়ায় চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসাটি পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত নির্দেশক্রমে বন্ধ করা হলো।

এর আগে ছাত্রবিক্ষোভের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষা সচিব ও হেফাজতে ইসলামের প্রচার সম্পাদক মাওলানা আনাস মাদানীকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তিনি হেফাজতের আমির ও ও মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফির পুত্র।

গতকাল ১৬ সেপ্টেম্বর, বুধবার রাত ১০টার দিকে বিক্ষোভরত ছাত্রদের সামনে তাকে অব্যাহতির ঘোষণা পাঠ করেন মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা নোমান ফয়জী। তিনি এসময় জানান, মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বুধবার দুপুর থেকে মাওলানা আনাস মাদানীর পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন হাটহাজারী মাদ্রাসার ছাত্ররা। তারা এসময় মাদ্রাসার ফটক বন্ধ করে দেন। সংবাদ পেয়ে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার রশিদুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মশিউদৌল্লাহ রেজাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল যান।

জানা গেছে, বুধবার দুপুরের নামাজের পর শিক্ষার্থীরা আনাস মাদানীর অপসারণসহ পাঁচ দফা দাবিতে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা সব ফটক বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিষয়টি জানতে পেরে প্রথমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ রুহুল আমিন ঘটনাস্থলে ছুটে যান। কিন্তু মাদ্রাসার ফটক বন্ধ থাকায় তিনি ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। বিষয়টি দ্রুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানান তিনি। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও কর্মকর্তারা মাদ্রাসার সামনে অবস্থান নেন। ফটক বন্ধ থাকায় তারাও ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা পাঁচ দফা দাবি সংবলিত একটি প্রচারপত্র বিতরণ করে। দাবিগুলো হলো- মাওলানা আনাস মাদানীকে অনতিবিলম্বে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করতে করা, ছাত্রদের প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বাস্তবায়নে সব হয়রানিমূলক কার্যক্রম বন্ধ, আল্লামা শাহ আহমদ শফী সাহেব মাযূর হওয়ায় পরিচালকের পদ থেকে তাকে সম্মানজনকভাবে অব্যাহতি দেয়া, মাদ্রাসায় নিয়োগ পরিপূর্ণভাবে সুরার নিকট হস্তান্তর এবং বিগত সুরার হাক্কানি আলেমদের পুনরায় নিয়োগ এবং সুরার মধ্যে ‘দালালদের’ বহিষ্কার।

প্রচারপত্রে আরো বলা হয়, এসব দাবি মানা না হলে পরবর্তী কর্মসূচি হিসাবে মাদ্রাসার সমস্ত একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখা হবে। একই সঙ্গে আন্দোলন সফল করতে জেলসহ যেকোনো ধরণের ত্যাগ স্বীকার করার জন্যও তারা প্রস্তুত বলেও উল্লেখ করা হয়।

-কেএম

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter