শীতের শাক-সবজির পুষ্টিগুণ

শীতের শাক-সবজির পুষ্টিগুণ

অনলাইনঃ
শীতের আমেজ শুরু হয়ে গেছে বেশ কয়েকদিন আগেই। শীতের বাজারে শীতকালীন নানা সতেজ শাক-সবজি এসেছে।

আমাদের দেশের শীতের শাক-সবজি পুষ্টিগুণে ভরপুর। আমাদের শরীরে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন কিংবা ফ্যাট এর পাশাপাশি মিনারেলস এবং ভিটামিন এর ভূমিকা অন্যতম।

শরীরের প্রয়োজনীয় যাবতীয় ভিটামিন ও মিনারেলস রয়েছে শীতকালীন সতেজ শাক-সবজিতে। তাই শরীরকে ফিট রাখতে প্রয়োজন নিয়মিত শাক-সবজি গ্রহণ। শীতের শাক-সবজির মধ্যে অন্যতম হল-বাঁধাকপি, ফুলকপি, শিম, গাজর, লেটুসপাতা, পালংশাক, ব্রকলি ইত্যাদি।

সবজি খেতে আমরা কমবেশি সবাই খুব পছন্দ করি। আর শীতকালীন সবজির তো কথায় নেই। কেননা সবজির জন্য সবচেয়ে ভালো সময় হল শীতকাল। আর আমাদের দেশে শীতকালে প্রায় সব সবজি পাওয়া যায়। কিন্তু আপনি জানেন কি এই শাক-সবজিগুলো থেকে আমরা কি কি উপাদান পাই কিংবা এর উপকারিতা কি? আপনি জানেন কি কিছু কিছু সবজিতে এমন উপাদান আছে যা কিনা আপনার ক্যান্সার প্রতিরোধক? আবার কিছু সবজি আপনার উচ্চরক্ত চাপ কমিয়ে জটিল রোগ থেকে আপনাকে মুক্ত রাখে? যদি আপনি না জানেন কিংবা আপনি জানতে আগ্রহী হন তাহলে জেনে নিন কিছু জনপ্রিয় শীতকালীন সবজির উপকারিতা।

শাক-সবজির আঁশ ও এন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান খাদ্যনালীর ক্যান্সারসহ বিভিন্ন ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। তাই সুস্থ ও সুন্দর থাকার জন্য এসব শাক-সবজি প্রচুর পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত। আসুন জেনে নেই শীতের সবজির গুণাগুণ সম্পর্কে-

মুলা:
মুলা একটি অন্যতম শীতকালীন সবজি। সাধারণত দুই রকমের মুলা আমাদের দেশে বেশি জন্মায়। সাদা মুলা ও লাল মুলা। আপনি চাইলে মুলা কাঁচা এবং রান্না উভয় অবস্থায় খেতে পারেন। সালাতে ব্যবহার করতে পারেন ইচ্ছামতো।

মুলায় যে উপাদানগুলো থাকে: মুলায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি থাকে। সব থেকে মজার কথা হল, এই মুলার পাতায় ‘এ’ ভিটামিনের পরিমাণ প্রায় ছয়গুণ বেশি। মুলাতে পাওয়া যায় বিটা ক্যারোটিন। এই সবজিটির রয়েছে প্রচুর পুষ্টি ও ঔষধি গুণ। মুলাতে রয়েছে সিসটিনসমৃদ্ধ প্রোটিন। মুলার নির্যাস এন্টিইউরোলিথিক। পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে, ১০০ গ্রাম মুলাতে রয়েছে খনিজ পদার্থ ০.৯ গ্রাম, শর্করা ৬.৮ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৩২ ক্যালরি, ক্যালসিয়াম ৫০ মি. গ্রাম, ফসফরাস ২০ মি. গ্রাম, লৌহ ০.৫ মি. গ্রাম, ক্যারোটিন ৩ মি. গ্রাম, ভিটামিন বি, ০.০৬ মি. গ্রাম ও ভিটামিন ‘সি’ ১৭-৩৫ মি. গ্রাম।

মুলার উপকার: মুলা আমাদের শরীরের বিভিন্ন ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। মুলাতে থাকা বিটা-ক্যারোটিন হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে হ্রাস করে। এটি আমাদের শরীরের ওজন হ্রাস করে। মুলা আলসার ও বদহজম দূর করতে সাহায্য করে থাকে। আমাদের শরীরে কিডনি ও পিত্তথলিতে পাথর তৈরি প্রতিরোধ করে। এছাড়াও হুপিং কাশি, কোষ্ঠকাঠিন্য, আর্থ্রাইটিসসহ বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে ভূমিকা পালন করে। আমাদের চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে এবং শরীরের ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও মুলা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। সবজি হিসেবে তরকারি, সালাদ, ভাজি ছাড়াও ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। মুলা শীতলকারক, মূত্রকারক ও হজমশক্তি বৃদ্ধিকারক। যকৃতের প্রদাহ, জণ্ডিস এটি অত্যন্ত কার্যকর। মুলা দেহকে ঠাণ্ডা রাখে। ক্ষুধা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। মুলা রুচিকর, কণ্ঠস্বর উন্নতকারক, গ্যাস, কফ ও পিত্তরোগ নাশক, জ্বর ও শ্বাসরোগে হিতকর। কাঁচা মুলা যকৃতের রোগ, প্লীহা, অর্শ ও জণ্ডিসে উপকারী। শিশু থেকে বয়স্ক পর্যন্ত সবাই ভাতের সঙ্গে মুলার সালাদ অথবা কাঁচা মুলার টুকরো খেলে রুচি ও হজম শক্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।

ফুলকপি:
শীতের সবজির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ফুলকপি। শীতের খুবই সুস্বাদু একটা সবজি হল ফুলকপি।

প্রাপ্ত উপাদান: এই ফুলকপিতে রয়েছে প্রয়োজনীয় পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’, ‘বি’ ও সি। এছাড়া আরও রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন, ফসফরাস, পটাশিয়াম ও সালফার। ফুলকপিতে আয়রন রয়েছে উচ্চমাত্রায়।

ফুলকপির উপকার: আমাদের শরীরে রক্ত তৈরিতে আয়রন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সাধারণত গর্ভবতী মা, বাড়ন্ত শিশু এবং যারা অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম করে তাদের জন্য ফুলকপি বেশ উপকারী একটা সবজি। ফুলকপিতে কোনো চর্বির মাত্রা নেই। ফুলকপি তাই কোলেস্টেরলমুক্ত যা কিনা আমাদের শরীরের বৃদ্ধি ও বর্ধনের জন্য উপযোগী। ফুলকপি পাকস্থলির ক্যান্সার প্রতিরোধে বিশেষ কার্যকরী। এছাড়া আমাদের শরীরের মূত্রথলি ও প্রোস্টেট, স্তন ও ডিম্বাশয় ক্যান্সার প্রতিরোধে ফুলকপি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফুলকপিতে থাকা প্রয়োজনীয় পরিমাণে ভিটামিন-এ ও সি শীতকালীন বিভিন্ন রোগ যেমন জ্বর, কাশি, সর্দি ও টনসিল প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। সাধারণত রান্না করে, সালাদের সঙ্গে মিশিয়ে বা ভেজে, নানা ধরনের সুপ তৈরি করে বিভিন্নভাবে ফুলকপি খাওয়া যায়। ফুলকপিতে আছে এমন কিছু উপাদান যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। ফুলকপির সালফোরাফেন ক্যান্সারের স্টেম সেল ধ্বংস করতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন ধরনের টিউমারের বৃদ্ধি প্রতিহত করে। এর সালফোরাফেন উপাদান রক্ত চাপ কমায় এবং কিডনি ভালো রাখে। তাছাড়া ধমনির ভিতরে প্রদাহ রোধ করতেও সাহায্য করে ফুলকপি। ফুলকপিতে রয়েছে ‘অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি নিউট্রিয়েন্টস’, যা শরীরের দহন প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফুলকপিতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও সালফার-জাতীয় উপাদান। যা খাবার হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। তাছাড়া ফুলকপির ফাইবার খাবার হজম হতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। ফুলকপির ভিটামিন ‘এ’ চোখের জন্যও প্রয়োজনীয়।

বাঁধাকপি:
শীতকালীন সবজির মধ্যে বাঁধাকপি একটি সুস্বাদু সবজি। বাঁধাকপি সালাত, ভাজি, তরকারি বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়।

প্রাপ্ত উপাদান: বাঁধাকপিতে শর্করা, ভিটামিন, মিনারেল, এমাইনএসিড এবং প্রচুর পানি আছে। বাঁধাকপিতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি ও ই। স্বাদে ও গুণে অতুলনীয় এই সবজিটি পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে প্রতি ১০০ গ্রাম বাঁধাকপিতে রয়েছে ১.৩ গ্রাম প্রোটিন, ৪.৭ গ্রাম শর্করা, ০.০৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি১, ০.০৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি২ ও ৬০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি। তাছাড়া প্রতি ১০০ গ্রাম বাঁধাকপিতে ৩১ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ০.৮ মিলিগ্রাম লৌহ, ৬০০ মাক্রোগ্রাম ক্যারোটিন ও ২৬ কিলোক্যালোরী খাদ্যশক্তি থাকে।

উপকার: বাঁধাকপিতে উপস্থিত ভিটামিন সি আমাদের শরীরের হাড়কে শক্ত ও মজবুত রাখে। শীতকালীন এই সবজি যারা নিয়মিত খায় তারা বয়সজনিত হাড়ের সমস্যা থেকে অনেকাংশে রক্ষা পায়। আপনি যদি ডায়েট করতে চান তাহলে নিয়মিত বাঁধাকপি খান কেননা ওজন কমাতে সহায়ক খাবার বাঁধাকপি। শুধু কি তাই বাঁধাকপিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আছে। আপনারা যারা ওজন কমাতে চাইছেন, তাদের জন্য নিয়মিত সালাদ খাওয়ার বিকল্প নেই। আর আপনি চাইলে এখন থেকে প্রতিদিনের সালাদের সঙ্গে রাখুন বাঁধাকপি। এতে করে একটা উপকার হবে আপনার। সালাদে প্রচুর পরিমাণে বাঁধাকপি থাকলে অতিরিক্ত ক্যালোরি বাড়ে না বললেই চলে। বাঁধাকপি দুরারোগ্য ব্যাধি আলসার প্রতিরোধ করতে সক্ষম। আমাদের শরীরের পাকস্থলির আলসার ও পেপটিক আলসার প্রতিরোধে বাঁধাকপির জুড়ি নেই। স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বাঁধাকপির রস আলসারের জন্য সবচেয়ে উপকারী প্রাকৃতিক ওষুধ। বাঁধাকপি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। বাঁধাকপিতে আছে প্রচুর ভিটামিন ই। বাঁধাকপিতে যে উপাদান আছে যা ত্বকের যে কোনো সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম। এছাড়াও নিয়মিত বাঁধাকপি খেলে ত্বকে সহজে বয়সের ছাপ পড়ে না।

শিম:
শীতকালীন একটা সবজি। শিম সুস্বাদু, পুষ্টিকর, আমিষের একটি ভালো উৎস। আমরা কম-বেশি সবাই শিম খেতে পছন্দ করি। এটি প্রধানত সবজি হিসেবে এবং এর শুকনো বীজ ডাল হিসেবে খাওয়া হয়।

প্রাপ্ত উপাদান: শীতকালীন এই শিমের পরিপক্ব বীজে প্রচুর আমিষ ও স্নেহজাতীয় পদার্থ আছে। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন, খনিজ পদার্থ, পানি, এনটি অক্সিডেন্ট ও পানি।

উপকার: শিমের আঁশ-জাতীয় অংশ খাবার পরিপাকে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য অনেকাংশে দূর করে। শিম সাধারণত ডায়রিয়ার প্রকোপ কমায়। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা অনেকাংশে কমায়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে হ্রাস করে পাকস্থলি ও প্লিহার শক্তি বাড়ায়। মেয়েদের শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে, শিশুদের অপুষ্টি দূরীভূত করে এবং পুষ্টি প্রদান করে থাকে। শিমের ফুল সাধারণত রক্ত আমাশয়ের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যায়।

গাজর:
গাজর অত্যন্ত পুষ্টিকর, সুস্বাদু ও খাদ্যআঁশসমৃদ্ধ শীতকালীন সবজি, যা এখন প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায়। তরকারি বা সালাদ হিসেবে এই সবজি খাওয়া যায়। গাজরে আছে বিটা ক্যারোটিন যা দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। অন্যান্য উপাদান গুলো অন্ত্রের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। গাজরে উপস্থিত ক্যারোটিনয়েড ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। ত্বকের খসখসে ও রোদে পোড়া ভাব দূর করে। গাজরের সাথে মধু মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বকের মরা কোষ দূর হয় ও ত্বক উজ্জ্বল হয়।

টমেটো:
টমেটো একটি জনপ্রিয় সবজি। ক্যালরিতে ভরপুর এই সবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি। কাঁচা ও পাকা — এই দুই অবস্থাতে টমেটো খাওয়া যায়। টমেটোতে উপস্থিত ভিটামিন-সি ত্বক ও চুলের রুক্ষভাব দূর করে, ঠান্ডাজনিত রোগ ভালো করে। যেকোনো চর্মরোগ, বিশেষত স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে। টমেটোতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা প্রকৃতির ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির বিরুদ্ধে লড়াই করে। টমেটোতে লাইকোপিন আছে যা শরীরের মাংস পেশিকে করে মজবুত, দেহের ক্ষয় রোধ করে, দাঁতের গোড়াকে করে আরও শক্তিশালী, চোখের পুষ্টি জোগায়।

পালংশাক:
পালংশাক উচ্চমানের পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর একটি শীতকালীন সবজি। পালংশাকে প্রচুর পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম ও আয়রন আছে। তাই আর্থ্রাইটিস, অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ ছাড়াও এটা হূদরোগ এবং কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। পালংশাকের উপাদান সমূহ ক্যান্সার, বিশেষ করে ত্বকের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এর ক্যারোটিনয়েডস ও শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রস্টেট ক্যান্সার ও ওভারিয়ান ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। তাছাড়া পালংশাক হাড়কে মজবুত করে তুলতে, শরীরের কার্ডিওভাস্কুলার সিস্টেম ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।

ব্রোকলি:
ব্রোকলি বা সবুজ ফুলকপি একটি কপিজাতীয় সবজি। শীতকালীন সবজির হিসেবে ব্রোকলি বর্তমানে আমাদের দেশে চাষ করা হচ্ছে। ব্রোকলিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও ক্যালসিয়াম বিদ্যমান। ব্রোকলি অত্যন্ত উপাদেয়, সুস্বাদু ও পুষ্টিকর একটি সবজি। এটি চোখের রোগ, রাতকানা, অস্থি বিকৃতি প্রভৃতির উপসর্গ দূর করে ও বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

ধনেপাতা:
ধনে পাতায় রয়েছে ভিটামিন ‘সি’ , ভিটামিন ‘এ’ ,ফলিক এসিড, যা ত্বকের জন্য যথেষ্ট প্রয়োজনীয়। এই ভিটামিন গুলো ত্বকে প্রতিদিনের পুষ্টি জোগায়, চুলের ক্ষয়রোধ করে, মুখের ভেতরের নরম অংশ গুলোকে রক্ষা করে। মুখ গহ্‌বরের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে। ধনে পাতার ভিটামিন ‘এ’ চোখের পুষ্টি জোগায়, রাতকানা রোগ দূর করতে ভূমিকা রাখে। কোলেস্টেরলমুক্ত ধনেপাতা দেহের চর্বির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। ধনেপাতায় উপস্থিত আয়রন রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে এবং রক্ত পরিষ্কার রাখতেও অবদান রাখে। এছাড়া ভিটামিন ‘কে’তে ভরপুর ধনেপাতা হাড়ের ভঙ্গুরতা দূর করে শরীরকে শক্ত-সামর্থ্য করে। তবে ধনেপাতা রান্নার চেয়ে কাঁচা খেলে উপকার বেশি পাওয়া যায়। অ্যালঝেইমারস নামে এক ধরনের মস্তিষ্কের রোগ রয়েছে, যা নিরাময়ে ধনে পাতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ধনে পাতা শীতকালীন ঠোঁট ফাঁটা, ঠান্ডা লেগে যাওয়া, জ্বর জ্বর ভাব দূর করতে যথেষ্ট অবদান রাখে। ধনে পাতায় রয়েছে ভিটামিন ‘সি’তে ভরপুর ‘অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট’ নামের এক উপাদান। যা নানাবিধ ঔষধি ভূমিকা পালন করে।

সব ধরনের শাক-সবজিতেই থাকে প্রচুর পরিমাণে এন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান, যা ত্বকের বার্ধক্যরোধে ভূমিকা রাখে, ত্বকের সজীবতা ধরে রাখে। এছাড়া শাক-সবজিতে থাকে প্রচুর পানি যা দেহে পানির ঘাটতি পূরণ করে। শাক-সবজির আঁশ ও এন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান খাদ্যনালীর ক্যান্সারসহ বিভিন্ন ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। আঁশজাতীয় খাবার শাক-সবজি গ্রহণে শরীর মুটিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পায়। তাই আজই বাড়িতে আনুন অধিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ শীতের সবজি। তবে কেনার আগে ফরমালিনমুক্ত কিনা তা যাচাই করার চেষ্টা করুন। সুস্থ ও সুন্দর থাকুন।

-ডিআর

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter