সংসদে ধর্ষককে ‘ক্রসফায়ার’ দেয়ার দাবি

অনলাইনঃ
আজ জাতীয় সংসদে ধর্ষণ বিষয়ে সরকার ও বিরোধী দলের কয়েকজন সাংসদ বলেন, ধর্ষককে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘ক্রসফায়ার’ এ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সংসদে দ্ব্যর্থহীনভাবে এ দাবি জানান তারা।

সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষণের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়া ও এধরনের সামাজিক অপরাধ নির্মূলে ‘ক্রসফায়ার’ দাবি করেন সংসদ সদস্যরা।

সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে এমপিরা সরকারের কাছে ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইন সংশোধনের দাবিও জানান।

এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষণের ঘটনা কেন বাড়ছে এবং এই ধরনের সামাজিক অপরাধ রোধ নিয়ে আলোচনায় জাতীয় সংসদের স্পিকারের কাছে একটি দিন নির্ধারিত করার আহ্বান জানান আইন প্রণেতারা।

সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকার দলের এমপি তোফায়েল আহমেদ প্রশ্ন তোলেন, “আমাদের আরো কঠোর আইন দরকার। মাদক সংশ্লিষ্ট ঘটনায় যদি ক্রসফায়ার হয়ে থাকে, তাহলে ধর্ষণের ঘটনায় কেন নয়?”

আমরা যাকে চিনি যে এই কাজ (ধর্ষণ) করেছেন তার বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই, যোগ করেন তিনি।

এর আগে, জাতীয় পার্টির এমপি মুজিবুল হক চুন্নু বিভিন্ন সংস্থার পরিসংখ্যান তুলে ধরে সংসদকে জানান, সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে ২০১৯ সালে সর্বোচ্চ সংখ্যক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।

স্পিকারের কাছে তিনি দাবি করেন, অন্যসব আলোচনা স্থগিত রেখে ধর্ষণের মতো সামাজিক অপরাধ থেকে কিভাবে মুক্ত হওয়া যায় সে বিষয়ে আলোচনা করতে একটি দিন ধার্য করার।

চুন্নু দাবি করেন, বর্তমানে যে আইন রয়েছে তা সংশোধন করতে হবে। যেভাবে ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই যাচ্ছে তা নিয়ন্ত্রণে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড যথেষ্ট নয়।

“মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইন সংশোধন করা উচিত” বলেন তিনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে চুন্নু বলেন, “মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আপনি ক্রসফায়ারে দিচ্ছেন। তবে কেন ধর্ষণের ঘটনায় একজনকেও দিচ্ছেন না?”

আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির আরেক এমপি কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষণ মহামারির রূপ নিয়েছে”।

সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও ধামরাইয়ে পোশাক শ্রমিক ধর্ষণের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যখন আদালতে বিচারের জন্য যাওয়া হয়, কোনো সাক্ষী পাওয়া যায় না। সমাজকে ধর্ষণমুক্ত করতে ক্রসফায়ারে যেতেই হবে”।

ক্রসফায়ারের বিরোধীতা করা মানবাধিকার কর্মীদের উদ্দেশ্য করে ফিরোজ বলেন, “আপনি তখনই ধর্ষণের কষ্ট বুঝতে পারবেন যখন আপনি, আপনার মা কিংবা বোন ধর্ষণের শিকার হবেন”।

টাঙ্গাইলে বাসে দলবেধে ধর্ষণের ঘটনার উদাহরণ দিয়ে জাতীয় পার্টির এমপি বলেন, “টাঙ্গাইলে যারা ধর্ষণ করেছেন তাদের ক্রসফায়ারে দিলে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটতো না”।

১০- ১২টি ক্রসফায়ার ঘটলেই ধর্ষণের ঘটনা কমে আসবে বলেও জানান ফিরোজ রশিদ।

“ধর্ষণ রোধে একমাত্র উপায় হচ্ছে স্বীকারোক্তির পর ধর্ষককে ক্রসফায়ারে দেয়া” বলেন তিনি।

-কেএম

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter