সহজেই খাঁটি মধু চেনার উপায়

সহজেই খাঁটি মধু চেনার উপায়

লাইফস্টাইলঃ
মধু বিক্রেতার কাছে মধুর দাম জিজ্ঞেস করার পর মধু বিক্রেতা উত্তর দিলেন, আর বলবেন না, এবার মধুর দাম একটু বেশিই। কারন, যে হারে চিনি দাম বেড়েছে মধুর দাম তো বাড়াই স্বাভাবিক।

আবার একটা কথা বেশ প্রচলিত আছে, সুন্দরবনের ‘খাঁটি মধু’ নাকি বন ছেড়ে লোকালয়ে আসার আগেই ভেজাল হয়ে যায়! কথাটা রসিকতাচ্ছলে বলা হলেও এটা সত্য। ভেজাল কারবারিদের দৌরাত্ম্যে খাঁটি মধু চেনা এবং কেনা দুইই বেশ দুরূহ।

তাছাড়া, একেক ফুলের মধুর স্বাদ, গন্ধ এবং রঙ একেক রকম। ফলে কেবল চোখের দেখায় মধু খাঁটি না ভেজাল তা বোঝা মুশকিল। তবে কিছু টেকনিক অবলম্বনে আপনি সহজেই নিশ্চিত হতে পারবেন মধু খাঁটি, না এতে ভেজাল আছে!

টেকনিক # ১ – এক গ্লাস পানিতে এক চামচ মধু ছেড়ে দিন। মধু ভেজাল হলে তা পানির সাথে মিশে যাবে আর খাঁটি হলে গ্লাসের তলায় গিয়ে জমবে।

টেকনিক # ২ – ভিনিগার মিশ্রিত পানিতে কয়েক ফোঁটা মধু চামচ দিয়ে গোলান। মিশ্রণে ফেনা দেখা যাচ্ছে কি? যদি ফেনা ওঠে তাহলে এ মধু খাঁটি নয়।

টেকনিক # ৩ – একটি ম্যাচের কাঠিতে খানিকটা মধু জড়িয়ে আগুন ধরান। খাঁটি মধু হলে সাথে সাথে আগুন জ্বলে উঠবে। যদি না জ্বলে তো বুঝবেন মধু ভেজাল।

টেকনিক # ৪ – মধুর বয়াম ডিপ ফ্রিজে রাখুন কয়েক ঘন্টা। খাঁটি মধু কখনোই পুরোপুরি জমাট বাঁধে না, তারল্যভাব থাকে। যদি জমে যায় তাহলে মধু ভেজাল। এ ছাড়া মধুতে চিনি মেশানো থাকলে বয়ামের ওপরের দিকে চিনির একটা স্তর তৈরি হবে।

ওপরের টেকনিকগুলো আপনি প্রয়োগ করতে পারবেন মধু কিনে বাসায় আনার পর। কিন্তু দাম দিয়ে কেনার পর মধু ভেজাল না খাঁটি তা যাচাই করা অর্থহীন। তাই সবচেয়ে ভালো হয় যদি আপনি কেনার সময় চোখে কিংবা চেখে দেখে মধু খাঁটি না ভেজাল তা নির্ণয় করতে পারেন।

টেকনিক # ৫ – অনেক সময়ই দেখা যায় কাঁচা মধু মৌচাক কেটে গামলা বা বালতিতে করে বেচতে হাঁকডাক করছে। উদ্দেশ্য হলো গ্রাহককে বোঝানো যে ‘মাত্রই চাক ভেঙে আনা হয়েছে- এ মধু নির্ভেজাল!’ তবে এসব ক্ষেত্রেও মধু ভেজাল হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। এক্ষেত্রে মধু বাহ্যিকভাবে যাচাই করে দেখুন।

কাঁচা খাঁটি মধুতে সাদা ফেনা বা বুদবুদের মতো দেখা দেবে। এ থেকে বুঝবেন এই মধুতে কোনো রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো হয়নি।

টেকনিক # ৬ – সুন্দরবনের মধুর কদর ও বিক্রিমূল্য দুইই বেশি। যদি কেউ ‘খাঁটি সুন্দরবনের মধু’ দাবি করে তাহলে পরখ করে দেখুন মধু ঘন না পাতলা। সুন্দরবনের হলে মধু পাতলা হবে। বনাঞ্চলের আর্দ্র পরিবেশের কারণে এমনটা হয়। অন্যদিকে, পাহাড়ি এলাকার শুষ্ক ও ঠাণ্ডা পরিবেশের জন্য মধু হয় ঘন।

টেকনিক # ৭ – মধু কিনতে গেলে দোকানিরা টেস্ট করতে পীড়াপীড়ি করে। না করবেন না!

ভুল বুঝবেন না, আমি আপনাকে ফ্রি খেতে এ কথা বলছি না। ভেজাল-খাঁটি যাচাই করতেই এটা করুন। চামচে মধু নিয়ে স্বাদ নেয়ার আগে গন্ধ শুঁকে দেখুন। নকল হলে এতে একটু টকটক গন্ধ থাকবে। আর গন্ধ তেমন একটা ভালোও হবে না।

টেকনিক # ৮ – সামান্য একটু মধু আঙুনে জড়িয়ে নিন। খাঁটি হলে আঠালোভা্ব বেশি হবে। আর নকল হলে বেশ পাতলা হবে। চোখের দেখায় স্তরগুলোও আলাদা মনে হবে।

-সংগৃহীত

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter