সিনহা হত্যার তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ না করাতে হাইকোর্টে রিট

আইন আদালতঃ

সাবেক মেজর সিনহা মো.রাশেদ খান হত্যা মামলা ঘটনার কোনো তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ না করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়েছে।

টেকনাফ মডেল থানার সাময়িক বরখাস্ত উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দলাল রক্ষিতের ভাই দেব দুলাল রক্ষিত এই আবেদন করেন।

রিটকারী দেব দুলালের ভাই বরখাস্ত এসআই নন্দদুলাল সিনহা হত্যা মামলার একজন আসামি। গত সপ্তাহে এই রিট আবেদন করেন তিনি। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার গণমাধ্যমের কাছে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

এ বিষয়ে বিপুল বাগমার জানান, গত সপ্তাহে রিট দায়ের হওয়ার পর বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মাহমুদ হাসান তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চে মঙ্গলবার আংশিক শুনানি হয়েছে। আগামী  ১৩ সেপ্টেমবর, রবিবার এই রিটের পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করেছে আদালত।

এদিকে সিনহা হত্যা মামলায় কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনকে আসামি হিসেবে অর্ন্তভুক্ত করতে আবেদন করা হয়েছে। মেজর সিনহা বোন ও মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস আদালতের কাছে এই আবেদন করেন। ১০ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলার জ্যেষ্ঠ বিচারকি আদালত (সদর-৪) তামান্না ফারাহর আদালতে এই আবেদন করা হয়। তবে আবেদনটি গ্রহণ করলেও এ বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি আদালত।

এ বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ মোস্তফা জানান, এসপি এবিএম মাসুদ হোসেন আসামিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহায়তা করছেন তিনি। তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। মেজর সিনহার মানহানি করেছেন। ওই সময় তিনি গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন মেজর সিনহার গাড়িতে তিনি ইয়াবা ও মাদকদ্রব্য পেয়েছিলেন। একজন পুলিশ সুপার হিসেবে তিনি এটি বলতে পারেন না। তিনি তদন্তকাজে প্রতিনিয়ত বাধা সৃষ্টি করে চলেছেন। তাই বাদী মনে করছেন পুলিশ সুপারকে এ মামলায় আসামি করা জরুরি।

প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে বাহারছড়া চেকপোস্টে তল্লাশির সময় পরিদর্শক লিয়াকতের গুলিতেই নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা।

এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় হত্যা ও মাদক আইনে এবং রামু থানায় মাদক আইনে পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করে। এ মামলায় নিহত মেজর সিনহার সঙ্গে থাকা শাহেদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা রানী দেবনাথকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

এরপর ৫ আগস্ট নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওসি প্রদীপ কুমার দাস, এসআই লিয়াকতসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ৬ আগস্ট বরখাস্ত ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতসহ ৭ আসামি কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এ সব মামলারই তদন্তভার এখন র‌্যাবের হাতে।

৬ আগস্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন পুলিশের ৭ সদস্য। গত এক মাসে র‌্যাব এপিবিএন’র ৩ সদস্য, পুলিশের মামলার ৩ সাক্ষীকে আটক করে মোট ১৩ জনকে নানা মেয়াদে রিমান্ডে নিয়েছে। ১২ জন আসামি এ পর্যন্ত আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

-কেএম

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter