সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার: সেতুমন্ত্রী

সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার সেতুমন্ত্রী

অনলাইনঃ

UN Global Road safety Week-2021 উদযাপন উপলক্ষ্যে ২৩ মে ঢাকা আহ্ছানয়িা মিশন কর্তৃক আয়োজিত “সড়ক ও নিরাপদ জীবন” শিরোনামে লাইভ আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, সড়ক পরিবহন আইন আবারো সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা এর ২০৩০ সালের পরিকল্পনায় ৩.৬ এবং ১১.২ নং লক্ষ হলো যথাক্রমে নিহত ও আহতদের হার ২০৩০ এর মধ্যে অর্ধেক করা এবং সবার জন্য নিরাপদ, সুরক্ষিত, সহজলভ্য এবং টেকসই জীবন নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই উদ্যোগে একাত্ত্বতা ঘোষনা করেছেন।

তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকারের সময় সড়ক ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। পদ্মা সেতুর মতো মেগা প্রকল্প, রাজধানীতে মেট্রোরেল স্থাপন, শেখ মুজিবুর রহমান কর্ণফুলী ট্যানেল, ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ২২ টি ফ্লাইওভার নির্মিত হয়েছে।

দূর্ঘটনা কমানোর জন্য দেশে একাধিক জেলা ও রাজধানীর সড়ক প্রসস্ত করা হয়েছে। সড়কে পরিবহনে যাতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় সেজন্য সমস্বয় ও সহযোগিতা দরকার বলে তিনি মনে করেন।

ঢাকা আহ্ছানয়িা মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ এর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাঃ আ ফ ম রুহুল হক এমপি।

তিনি বলেন, “সড়ক দূর্ঘটনা হ্রাস করতে ড্রাইভারের পাশাপাশি যাত্রীদের জন্য সিটবেল্ট নিশ্চিত করা। এছাড়াও আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন ও এর যথাযথ বাস্তবায়ন জরুরী।

ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের সভাপতি কাজী রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন গ্লোবাল রোড সেইফটি গ্রান্টস প্রোগ্রাম জেনেভা থেকে তাইফুর রহমান।

তিনি বলেন, সংশোধনী আইনের মধ্যে গাড়ীর গতিসীমা নির্ধারণ করা, সিটবেল্ট ড্রাইভার সহ সকলের জন্য বাধ্যতামূলক করা, মানসম্মত হেলমেট নিশ্চিত করা, শিশুদের জন্য নিরাপদ আসন নিশ্চিত করা প্রভৃতি অন্তর্ভূক্ত করা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে আরো অংশ নেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ডা. সৈয়দ মাহফুজুল হক, গ্লোবাল হেলথ এডভোকেসী ইনকিউবেটর বাংলাদেশ কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর ড. শরিফুল আলম, বুয়েটে এ্যাকশন রিসার্চ ইনিসস্টিটিউট-এর সহকারী অধ্যাপক কাজী মো. শাইফুন নেওয়াজ এবং ব্রাক-এর রোড সেইফটি প্রোগ্রাম হেড ডা. কামরান উল বাসেত।

উল্লেখ্য, ৬ষ্ঠ বারের মত বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে টঘ এষড়নধষ জড়ধফ ঝধভবঃু ডববশ-২০২১। জাতিসংঘ সড়ক নিরাপত্তা সপ্তাহের (১৭-২৩ মে) এ বছরের প্রতিপাদ্য ”জীবনের জন্য সড়ক” স্লোগানকে সামনে রেখে সপ্তাহব্যাপি নানান কর্মসূচির আয়োজন করে ঢাকা আহ্ছানয়িা মিশনের স্বাস্থ্য সেক্টর।

এবছর জাতিসংঘ বড় বড় শহর এবং পথচারী বহুল এলাকাগুলোতে যানবাহনের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার করার আহ্বান জানায়। ৮০ টির বেশি বড় বড় শহরে পরিচালিত সমীক্ষার উপর ভিত্তি করে জাতিসংঘ এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে সর্বোচ্চ গতিসীমা ৩০ কিলোমিটার করা গেলে সড়ক দূর্ঘটনার ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।

এতে যানযট ও বায়ুদূষণও কমে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই সমীক্ষায় দেখা গেছে, ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার সর্বোচ্চ গতিসীমায় তানজানিয়াতে ২৫ শতাংশ, ইংল্যান্ডে ৪২ শতাংশ এবং ব্রিস্টলে ৬৩ শতাংশ পর্যন্ত সড়ক দূর্ঘটনা কমেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক গবেষণায় দেখা গেছে, যানবাহনের গতিসীমা ১ কিলোমিটার বাড়লে সড়ক দূর্ঘটনার ঝুঁকি ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।

বিশ্বে সড়ক দূর্ঘটনায় প্রতি বছর প্রায় ১.৩ মিলিয়ন মানুষ মারা যাচ্ছে। একইভাবে বাংলাদেশেও প্রতিবছর অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে সড়ক দূর্ঘটনায়।

পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রতিবছর ১৫ হাজার ছোট বড় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। আবার সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বা বিআরটিএ এর হিসাব মতে, প্রতিদিন সড়ক দূর্ঘটনায় প্রাণ হারাণ প্রায় ৩০ জন।

-শিশির

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter