৪ সিটিতে নগর যুব কাউন্সিল গাইডলাইন অনুমোদিত

৪ সিটিতে নগর যুব কাউন্সিল গাইডলাইন অনুমোদিত

সিটি করপোরেশনঃ
তরুণদের নেতৃত্ব দেওয়ার দক্ষতা গড়ে তুলতে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উদ্বুদ্ধ করতে সিরাক-বাংলাদেশ UNDEF এর অর্থায়নে এবং UNHabitat এর সহায়তায় “এডভান্সিং এনগেজমেন্ট বাই সেটিং আপ আরবান ইয়ুথ কাউন্সিল ইন বাংলাদেশ” প্রকল্পটি বাংলাদেশের চারটি শহরে (নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, রংপুর ও রাজশাহী) বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

তারই প্রেক্ষিতে, পরবর্তী কার্যক্রম অনুসারে রোজ শুক্রবার, ৩০সেপ্টেম্বর, ২০২২ইং রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে চারটি সিটি কর্পোরেশন (ময়মনসিংহ, রংপুর, রাজশাহী, নারায়ণগঞ্জ) ও সিরাক-বাংলাদেশ এর যৌথ আয়োজনে আনুষ্ঠানিকভাবে নগর যুব কাউন্সিল গাইডলাইন গৃহীতকরণ বিষয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়, যার মাধ্যমে উক্ত গাইডলাইনটি পরবর্তীতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে অনুমোদনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

সভার প্রথমেই সিরাক-বাংলাদেশ এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার তাসনিয়া আহমেদ প্রকল্পের বর্তমানে চারটি সিটি করপোরেশনের সম্পৃক্ততায় নগর যুব কাউন্সিল গঠন, এর পরবর্তী কার্যকলাপ এবং তরুণদের সম্পৃক্ততার বিষয়াদি আলোচনা করেন।

প্রকল্পটি জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা- ১১ ও ১৬ অর্জনে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করবে।

এছাড়াও প্রকল্পটির মাধ্যমে উল্লেখিত সিটি কর্পোরেশনসমূহের সাথে সম্মিলিতভাবে নগর যুব কাউন্সিলের নির্দেশিকা তৈরি, কাউন্সিল গঠন, যুব ভোটার তালিকা তৈরি এবং তালিকাভুক্ত যুবদের মধ্যে হতে নগর যুব কাউন্সিলর (প্রতিটি সিটি কর্পোরেশনে ২০ জন নগর যুব কাউন্সিলর) নির্বাচন করা হবে।

সভার সঞ্চালনায় ছিলেন সিরাক-বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক এস এম সৈকত। উক্ত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী, বাংলাদেশের জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি কার্যালয়ের অফিস প্রধান শুভ্রা ভট্টাচার্য, এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক বশির আহমেদ।

এছাড়াও অন্যান্য অতিথিবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সরকারি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং সাংবাদিকবৃন্দ।

এছাড়াও ভার্চুয়ালী অংশগ্রহন করেছেন চারটি সিটি কর্পোরেশন এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, নগর পরিকল্পনাবিদ, ইউএন-হ্যাবিটেট এর প্রোগ্রাম ম্যানেজমেন্ট অফিসার ডগলাস রেগান, প্রোগ্রাম অফিসার ওলগা সাপলিনা এবং নগর যুব কাউন্সিল টাস্কফোর্স সদস্যবৃন্দ।

সিরাক-বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক এস এম সৈকত বলেন, সিদ্ধান্তগ্রহণে তরুণদের অংশগ্রহণ জরুরী এবং নগর যুব কাউন্সিলের মাধ্যমে তরুণদের গণতান্ত্রিক চর্চা নিশ্চিত করা প্রয়োজন, যাতে তরুণরা তাদের নিজেদের অধিকারের ব্যাপারে আরও সোচ্চার হয়ে উঠে।

নগর যুব কাউন্সিল প্রকল্পের মাধ্যমে নগরের উন্নয়ন কর্মকান্ডে তরুণদের সম্পৃক্তকরণের লক্ষ্যে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তাদের মধ্যে থেকে প্রতিনিধি মনোনয়ন ও নির্বাচন প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত করে তাদের কথা, মতামত ও দাবিসমূহ সিটি কর্পোরেশনের কাছে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন করবে যা টেকসই উন্নয়নের জন্য এবং তরুণদের নেতৃত্ব বিকাশের ক্ষেত্রে উপযুক্ত ভূমিকা রাখবে।

প্রকল্পটির অধীনে তরুণদের দ্বারা নির্বাচিত যুব কাউন্সিলর হিসেবে নগর যুব কাউন্সিলে যোগদানের মাধ্যমে উক্ত চারটি সিটি কর্পোরেশনেই মেয়রের তত্ত্বাবধানে নগরের উন্নয়ন কার্যক্রমে যুবদের পরামর্শ প্রদান, অংশগ্রহণ ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উদ্বুদ্ধ করবে।

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক বশির আহমেদ বলেন; সিরাক-বাংলাদেশ নগর যুব কউন্সিল প্রকল্পের মাধ্যমে যে উদ্যোগটি গ্রহণ করেছে তা খু্বই প্রশংসনীয়। জাতীয় পর্যায়ে এ ধরনের একটি সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন অনুমোদন করা সম্ভব হলে তা খুবই ফলপ্রসূ হবে।

তবে সিটি অনুযায়ী গাইডলাইনে ভিন্নতা থাকবে। ইউরোপের পাশাপাশি সাউথ এশিয়াতে এরকম উদ্যোগ গ্রহণকে তিনি সাধুবাদ জানিয়েছেন।

বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি কার্যালয়ের অফিস প্রধান সমন্বয়কারী শুভ্রা ভট্টাচার্য বলেছেন- যুবদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্র তৈরী করে দিতে হবে, যা ৪টি সিটি কর্পোরেশনে নগর যুব কউন্সিল প্রকল্পের মাধ্যমে সম্ভব।
এমনিভাবে যদি প্রতিটি সিটি কর্পোরেশনে এরকম উদ্যোগ গ্রহণের ব্যাপারে তিনি বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করার কথা বলেন, যাতে করে যুব ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি সম্ভব হয়।

একই সাথে তরুণদের মতামতকে পলিসি লেভেলে তুলে ধরার ব্যাপারে জোর দেন।

-শিশির

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter