অনলাইনে বাজি বিক্রির নিষেধাজ্ঞা

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

৫০ শতাংশ কম দামের অফার দেখেই মাউসে ক্লিক করে ফেলেছিলেন সুমনবাবু। দশটি চরকি ২৬ টাকায়। ৭৫ টাকা দিলেই মিলবে ২৫টি বড় চরকি। একেকটির দাম তিন টাকা করে। কলকাতায় এই বাজি কিনতে গেলেই খরচ হবে অন্তত তার তিন গুণ। কিন্তু ক্লিক করতেই ল্যাপটপের স্ক্রিনে ভেসে উঠল লেখাটি। অনলাইনে অর্ডার নেওয়া বন্ধ।

সুপ্রিম কোর্টের কড়া নির্দেশ, অনলাইনে বাজি বিক্রি নিষিদ্ধ। এর পর থেকেই কোনও ওয়েবসাইট বলছে তাড়াতাড়ি আসছি ফিরে। আবার কেউ খদ্দেরদের উদ্দেশে বলছে, ‘অলওয়েজ লাভ ইউ গাইজ। আবার কয়েকটি ওয়েবসাইট এখনও কোনও বার্তা দেয়নি। অভিযোগ উঠেছে, এখনও সেগুলি অনলাইনে বাজি বিক্রির চেষ্টা করছে। যদিও সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, কোনও ওয়েবসাইট অনলাইনে বাজি কেনাবেচার সঙ্গে যুক্ত থাকলে তা আদালত অবমাননার দায়ে পড়বে। তাই অনলাইনে বাজি বিক্রির উপর নজর রয়েছে গোয়েন্দাদেরও। ককব্র‌্যান্ড ফায়ারওয়ার্কস, অনিল শোরুম, ক্র‌্যাকারমার্ট বা দিওয়ালি সেলিব্রেশন-এর মতো বহু ওয়েবসাইট প্রত্যেক বছরই অনলাইনে বাজি বিক্রি করে। প্রত্যেকটি ওয়েবসাইটেই থাকে অফারের বন্যা। রংবেরঙের পেজে নিজেদের পণ্য বিক্রির আপ্রাণ চেষ্টা। এবারও দীপাবলির বহু আগে থেকেই বাজির ওয়েবসাইটগুলি সাজিয়েছে নিজেদের পেজ। একাধিক ওয়েবসাইট সরাসরি ৫০ শতাংশ কম দামে বাজি বিক্রির অফার দিচ্ছে। কেউ বা সুদৃশ্য ফ্লাওয়ার পট বিক্রি করতে চাইছে ৪৯ টাকা থেকে ৩৮৬ টাকার মধ্যে। আবার ৫৬ টাকা থেকে শুরু করে ৩৬১ টাকার মধ্যেই মিলছে নানা ধরনের রকেট। ওয়েবসাইটে বিক্রি হচ্ছে শব্দবাজিও। ৮ থেকে ৩৮ টাকার মধ্যে মিলছে রকমারি শব্দবোমা। গত সোমবার পর্যন্তও এই ওয়েবসাইটগুলির মাধ্যমে বিক্রি হয়েছে শব্দবাজি ও আতসবাজি। কিন্তু মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেওয়ার পর থেকেই ওয়েবসাইট পেজগুলিতে ঝুলছে নোটিস।

বেশিরভাগ ওয়েবসাইটই শিবকাশী বা তামিলনাড়ুর। ওয়েবসাইটগুলি থেকে বাজি কিনতে গেলেই কেউ দেখাচ্ছে সরকারি নির্দেশের কারণে এই দেওয়ালিতে আর অনলাইনে বাজি বিক্রি করা যাচ্ছে না।

আবার কেউ বা জানাচ্ছে তামিলনাড়ুর বাইরে কোথাও বাজি সরবরাহ করা যাবে না। যদিও একাধিক ওয়েবসাইটই আশাবাদী। তারা ক্রেতাদের বলছে, খুব তাড়াতাড়ি ফিরে আসব। তবে ‘ডোর ডেলিভারি যে সম্পূর্ণ বন্ধ, তা জানিয়ে দিয়েছে প্রত্যেকেই। তাতে কিছুটা সমস্যায় পড়েছেন বাজি ব্যবসায়ীরা। কারণ, অনেকেই শিবকাশী থেকে অনলাইনে বাজি কিনতেন। অবশ্য প্রত্যেক ওয়েবসাইটেই যোগাযোগের নম্বর দেওয়া রয়েছে। অনলাইনে বাজি কেনা না গেলেও ফোন করে আগাম টাকা জমা দিয়ে পরিবহণের মাধ্যমে বাজি কেনার ব্যবস্থা করতে পারেন ব্যবসায়ীরা। আবার এখনও অনলাইনে বাজি কেনা যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে দক্ষিণ ভারত ভিত্তিক কয়েকটি ওয়েবসাইটের বিরুদ্ধে। যদিও ওই ওয়েবসাইটগুলির মাধ্যমে যাতে এই রাজ্যের কোথাও শব্দবাজি না পাচার হতে পারে, সেই বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

-প্রতিদিন

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter