তোফাজ্জল হোসেন:
ঢাকা ওয়াসার পানির জন্য মানুষ ফুসে উঠেছে। নগরীর ১৪ স্থানে পানির স্তর নীচে নেমে যাওয়ায় পাইপলাইনের পানি ঠিক সময়ে সরবরাহ না থাকায় পানির জন্য হাহা করেছে। যে কোন মহুর্তে নগরবাসী হাড়িপাতিল,বালতি হাতে নিয়ে পানির দাবিতে রাস্তায় নেমে আসতে পারে।

এ তথ্য জানিয়েছেন নগর পরিকল্পনাবীদ সিরাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ঢাকা ওয়াসার খামখেয়লীর জন্য নগরবাসী রমজান মাসে পানির জন্য দুর্ভোগ চরমে উঠেছে।

জানা গেছে, নগরীর ১৪ স্থানে পানি সংকট মারাত্মক রূপ নিয়েছে। এসব স্থানগুলো হচ্ছে, নগরীর, লালমাটিয়া, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, শেখেরটেক, আদাবর, সুনীবিড়, উত্তরবাড্ডা, হাজীপাড়া, খিলগাঁও, শনির আখড়া, জুরাইন, যাত্রাবাড়ী, লালবাগও আজিমপুর এলাকার নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পানি সংকটে এসব এলাকার মানুষ পানির জন্য হাহা করছে। গত কয়েকদিনে প্রচন্ড গরমে পানির চাপ তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। এ সব এলাকার মানুষজন, রমজানে ঠিকভাবে রাতে খারারের পানিও পাচ্ছে না। নগরীর অনেক বাড়ির মালিক ভাড়াটিয়াদের অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন,আপনার ওয়াসার পানি ঠিকভাবে সরবরাহের আগে পর্যন্ত নিজেদের প্রচেষ্টায়,বোতলজাত পানি কিনে ব্যবহার করতে।

অনুসন্ধানে,লালমাটিয়ার জোনায়েদ হাবির নামে একব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা গেছে, বাসার হাড়ি-পাতিল ধোয়া মুছার কাজের পানিও মিলছে না। তিনদিন আগে এক গাড়ি পানির জন্য ওয়াসার লালমাটিয়া অঞ্চলে সিরিয়াল দেওয়া হয়েছিল। কিন্ত সিরিয়ালে গাড়ি মিলছে না।এক গাড়ি পানির জন্য অতিরিক্ত টাকা বকশিষ দিয়েও পানি পাওয়া দায়। বাধ্য হয়ে জীবন বাচাঁতে নগরীর অনেক বাসিন্দা দোকান থেকে বোতলজাত পানি সংগ্রহ করে সেই পানি খেয়ে রোজা রাখতে হচ্ছে।

এছাড়াও,রান্না-ছেলে-মেয়েদের গোসল,হাঁড়ি পাতিল ধোয়া মুছার কাজ নিয়ে বাড়ির মহিলারা মারাত্মক বিপাকে রয়েছে। আদাবর এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা হাজী আবদুস সোবাহান দৈনিক জাগরণকে জানান, বাসায় পানি নেই, বউ বাচ্চার যন্ত্রনায় বাধ্য হয়ে পানির জন্য ঢাকা ওয়াসার লালমাটিয়া পাম্পে গিয়ে ছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি আড়াইশ সিরিয়াল দেওয়া আছে। আমার নাম লেখাতে ভয় হচ্ছে। তার পরেও লেখাতে হলো। নাম মুক্তার হোসেন,বাড়ি নস্বর ৫৬ আদাবর রোড নস্বর ৬ /এ।

হাজী সোবাহান বলেন, ভাই আগের আড়াইশ মানুষের পরে আমাকে পানি দেবে। আর এখানে পানির গাড়ী মাত্র ছোট বড় মিলিয়ে মাত্র ৬ টা। সারারাত দিন দিলেও আমর সিরিয়াল আসবে না। এর মধ্যে অনেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী সংসদ সদস্য এবং রাজনৈতিক নেতাদের চাপের পাশাপাশি আমলাদের জটিলতা চাপ থাকবে। এ কারণে পানি আসা ছেড়ে দিয়ে বাসায় গিয়ে চুপ করে বসে থাকা ছাড়া উপায় নেই। ভাড়াটিয়াদের অনুরোধ করে বলে দিতে হবে। পানির লাইনে সমস্যা কয়েকদিন বোতলজাত পানি বাজার থেকে সংগ্রহ করে ব্যবহার করার অনুরোধ জানালেন বাড়ির মালিক আবদুস সোবাহান।

বুধবার ১০টার সময় লালমাটিয়া পাম্পে সরেজমিন ঘুরে দেখা খেছে,পানির গাড়ির জন্য মন্ত্রী-এমপি-সচিব পর্যন্ত পানি পাওয়ার জন্য তদবির করছে। পানির জন্য দুইদিন আগে সিরিয়াল দিয়েও পানি পাননি জাকারিয় নামে একজন সাংবাদিক। তিনি চেচামেচি করচ্ছেন। দুই দিন আগে সিরিয়াল দিয়েছি।এখনো পানি দিচ্ছেন না। কারণ কি উত্তরে পাম্পের কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,স্যার এখন পানির স্তর নীচে চলে গেছে। আর পাম্পগুলো অনেক পুরোনো উত্তলন ক্ষমতা কম।এ কারণে সমস্যা হচ্ছে।

ঢাকা ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা ওয়াসার মোট ১১টি অঞ্চলে ৯০৮টি পানির পাম্প স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে দুই চারটি পাম্প বিকল হতে পারে। এ কারণে পানির সংকট হওয়ার কথা নয়। তবে ওয়াসার দাবি ক্ষনিকের জন্য এ সমস্য হচ্ছে। ওয়াসা সংকট নিরসনে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। পাস্পের সমস্যা, রাজধানীর ১৪ স্থানে টানা এক সপ্তাহ ধরে পানি সংকট বিরাজ করছে। পবিত্র রমজান মাসে পানি সংকটকে রোজাদারদের উপর আঘাত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন, বিষেজ্ঞরা। তারা বলছেন, পানি সংকট হবে বিশ্বাস করি। তা দীর্ঘদিন ধরে নয়। এটি অবশ্যই ওয়াসার খামখেয়ালী রয়েছে।

এ বিষয়ে ওয়াসার পরিচালক কারিগরী সহিদ উদ্দিন দৈনিক জাগরণকে বলেন,এভাবে পানির সমস্যা সৃষ্টি হবে কল্পনার বাহিরে সমস্যা সমাধানে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সমস্যা সমাধান করা হবে। তিনি বলেন,আগের মতো পানির সমস্য নেই। এখন নগরীতে প্রচুর পানির পাম্প বসানো হয়েছে। দ্রুত সংকট কেটে যাবে।

এ বিষয়ে ঢাকা ওয়াসার অঞ্চল-৩ এর নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ আলম বলেন, লালমাটিয়া জোন সবসময় পানি সরবরাহের চাপ বেশী থাকে। আর মাঝে মধ্যে কিছু পাম্প বিকল হওয়ার কারণে ক্ষনিকের জন্য সমস্যা হয়। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ও কিছু এলাকায় পানির সমস্যা হতে পারে। তবে এসব সমস্যা অচিরেই সমাধান হবে বলে জানান তিনি।

FacebookTwitter

About Bangla Daily

একটি পরিপূর্ণ বাংলা অনলাইন পত্রিকা। মাতৃভাষার দেশ বাংলাদেশ থেকে সরাসরি সস্প্রচারিত হচ্ছে।

View all posts by Bangla Daily