আনসাং ওমেন ন্যাশন বিল্ডার্স অ্যাওয়ার্ডস ২০২২-এ স্বীকৃতি পেলেন নানান বৈষম্য এবং প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাওয়া ৭ অদম্য নারী।
২৭ মে, ২০২২ তারিখ রাজধানীর ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত আনসাং ওমেন ন্যাশন বিল্ডার্স অ্যাওয়ার্ডস-এর ৬ষ্ঠ সংস্করণের আয়োজনে ৫টি বিভাগে এই স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী টিপু মুনশি, এমপি বিজয়ীদের হাতে ক্রেস্ট ও পুরস্কারের অর্থ তুলে দেন।
বিজয়ীদের প্রত্যেককে প্রাইজমানি হিসেবে ২ লাখ টাকা প্রদান করা হয়। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সমাজকল্যাণ, উদ্যোক্তা, কোভিড হিরো-এই ৫টি বিভাগে বিজয়ীদের নির্বাচন করা হয়েছে তাদের সাহসী মনোভাব এবং সমাজে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনার অনন্য উদ্যোগের ভিত্তিতে।
সারাদেশে, এমনকি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এমন অনেক নারী আছেন যারা আমাদের সমাজে ইতিবাচক ভূমিকা রেখে চলেছেন প্রতিনিয়ত, নানান বৈষম্য, অন্যায় আর প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়ে চলেছেন নিভৃতে।
দুর্ভাগ্যবশত, দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা এই অদম্য নারীরা প্রায়ই উপেক্ষিত থেকে যান। তাই সাহসিকতার সাথে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাওয়া এই মহীয়সী নারীদের ও তাদের অবদানকে আলোয় আনতে ২০১৭ সাল থেকে প্রতিবছর আইপিডিসি ফাইন্যান্স ও দ্য ডেইলি স্টার আয়োজন করে আসছে ‘আনসাংওমেন ন্যাশন বিল্ডার্স অ্যাওয়ার্ড’।
তারই ধারাবাহিকতায় এবার অনুষ্ঠিত হলো এই আয়োজনের ৬ষ্ঠ সংস্করণ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, এমপি বলেন, “আমাদের সমাজের সংগ্রামী নারীদের সংগ্রামকে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য আইপিডিসি ও ডেইলি স্টার-এর এই প্রচেষ্টা প্রশংসার দাবি রাখে।
সততা ও কর্মদক্ষতায় আমাদের নারীরা পুরুষের চেয়ে কোনো অংশে কম নন, বরং নারীকে তার যোগ্যতা প্রমাণ করতে মুখোমুখি হতে হয় নানান সামাজিক প্রতিকূলতার।
আর এটা করতে গিয়েই আমাদের নারীরা সমাজে রেখে যান সাহসী পদচিহ্ন ও ইতিবাচক প্রভাব। আমি চাই, আমাদের সম্মানিত ও সংগ্রামী এই নারীদের গল্প দেশের প্রতিটি কোণায় ছড়িয়ে পড়ুক।
কারণ, এ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এমন আরও হাজারো সাহসী গল্প জন্ম নেবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।”
দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, “নিজেদের সামর্থ্যের বাইরে গিয়েও অদম্য প্রচেষ্টায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের যেসকল নারীরা সমাজ পরিবর্তনে নীরবে, নিভৃতে অসাধারণ ভূমিকা রেখে চলেছেন, তাদেরকে হৃদয় উজাড় করা শ্রদ্ধা জানাই।
এসকল অদম্য নারীদের স্বীকৃতি ও সম্মান জানানোর প্রচেষ্টায় আজকের এই আয়োজন।
আর, একজন সম্পাদক হিসেবে আমার জন্য সবচেয়ে তৃপ্তিদায়ক কাজ হলো এসকল অদম্য নারীদের গল্প সকলের সামনে তুলে ধরতে পারা।”
আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও মমিনুল ইসলাম বলেন, “স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে অর্থনৈতিক ও সামাজিক নির্দেশকে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে আবির্ভুত হয়েছে অনন্য এক রূপে।
আজকের অবস্থানে আসতে বাংলাদেশকে পারি দিতে হয়েছে নানান প্রতিকূলতা, রয়েছে অসংখ্য মানুষের অবদান। বিশেষ করে আজকের আয়োজনের মধ্যমণি যারা, তাদের অবদানের কথা না বললেই নয়।
বহুমুখী প্রতিকূলতা পেরিয়ে, হার না মানা উদ্যম নিয়ে এবং নিজের অসহায় অবস্থাকে ভুলে গিয়ে তারা যেভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং সামাজিক পরিবর্তনে যে অনন্য-সাধারণ ভূমিকা রেখেছেন, তাদের সেই সাহস ও অবদান মহাকাব্যের নায়কদের গল্পকেও হার মানাতে পারে। এসকল নারীদের সম্মান জানাতে পারা আমাদের জন্য অত্যন্ত সম্মানজনক এক অর্জন।
আইপিডিসি, পথচলার শুরু থেকেই দেশের পিছিয়ে পড়া মানুষের কল্যাণে, বিশেষ করে নারী ক্ষমতায়নে কাজ করে যাওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে।
আনসাং ওমেন ন্যাশন বিল্ডার্স অ্যাওয়ার্ড সেই প্রচেষ্টারই একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।”
-শিশির