ডেস্ক রিপোর্টঃ

মানুষের জীবনে শিক্ষাগুরুর ভূমিকার তুলনা হয় না। শিক্ষাগুরুরা শিক্ষা দিয়েই যান সারাজীবন।

সেই শিক্ষাগুরুদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে অনেক ছাত্র বহুদূরে চলে গেলেও কিছু কিছু শিক্ষকের নাম ভুলা যায় না।

শিল্পী ওয়ারদা আশরাফের সংগীতের মধ্য দিয়ে সেই সব শিক্ষকদের দেয়া স্মরণীয় ও উল্লেখযোগ্য ঘটনার অবদানের কথা স্বীকার করতে আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হলো ‘আইপিডিসি-প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা ২০২২’–এর উদ্বোধনী পর্ব।

অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষেরা উপস্থিত হয়ে তাঁদের প্রিয় শিক্ষকদের স্মরণ করেন।

অনুষ্ঠানে বক্তাদের কথায় উঠে এল, মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকদের সম্মান ও সম্মানী দুটোই দিতে হবে। তবে তাঁরা এটাও মনে করিয়ে দিলেন, বর্তমানে শিক্ষাব্যবস্থা গভীর সংকটে পতিত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষকদেরও দায় আছে। তাই এর পরিবর্তনের জন্য অন্যদের পাশাপাশি শিক্ষকদের বড় ভূমিকা পালন করতে হবে।

আইপিডিসি ও প্রথম আলো ২০১৯ সাল থেকে এ সম্মাননা দিয়ে আসছে। করোনাকালেও থেমে থাকেনি প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের দেওয়া হয় এ সম্মাননা। মনোনীত শিক্ষকদের মধ্য থেকে বাছাই করে প্রিয় শিক্ষকদের নির্বাচিত করা হয়।

আয়োজকেরা জানিয়েছেন, নিয়মানুযায়ী মনোনীত শিক্ষকের বয়স কমপক্ষে ৪০ হতে হবে। সেই প্রিয় শিক্ষক বর্তমানে কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত হতে পারবেন।

আর প্রিয় শিক্ষক মনোনয়নকারীদের বয়স হতে হবে কমপক্ষে ১৮ বছর।

একজন মনোনয়নকারী সর্বোচ্চ তিনটি মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। অনলাইনে (http://www.priyoshikkhok.com) নির্ধারিত ফরম পূরণ করে এ মনোনয়ন দেওয়া যাবে।
অনলাইনে নির্দিষ্ট ফরমে আবেদন করা যাবে।

এ ছাড়া ওই ওয়েবসাইট থেকে পিডিএফ ফরম ডাউনলোড করে তা পূরণের পর ডাকযোগেও মনোনয়ন পাঠানো যাবে।

আজ শুরু হওয়া এ মনোনয়ন কার্যক্রম চলবে আগামী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত।

অনুষ্ঠানে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছিল সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের সদস্য মারিয়া মান্দার উপস্থিতি। মঞ্চে তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান তাঁরই প্রিয় শিক্ষক ময়মনসিংহের রণসিংহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মফিজ উদ্দিন।

শুভেচ্ছা বক্তব্য দিতে গিয়ে আইপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম বলেন, শিক্ষকদের সম্মান ও সম্মানী দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও কিছু করার আছে। তিনি আশা করেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সব শিক্ষক সম্মানের জায়গায় বসতে পারবেন। সবাই মিলে চেষ্টা করতে হবে, যাতে বাংলাদেশ আরও মানবিক এবং সৃজনশীল হিসেবে গড়ে ওঠে।

এ সময় এ ধরনের অনুষ্ঠানে যুক্ত হওয়া এবং নিজ প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম তুলে ধরে আইপিডিসির প্রধান মমিনুল ইসলাম বলেন, ভালো কাজ করলে ব্যবসাও ভালো হয়, তার প্রমাণ হলো আইপিডিসি।

প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, ‘হতাশা, দুঃখ ও বেদনার মধ্যেও বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে, বহু ক্ষেত্রেই এগিয়েছে। আমরা সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জয় দেখতে চাই।’

শিক্ষাব্যবস্থার সমস্যার কথা উল্লেখ করে প্রথম আলো সম্পাদক বলেন, ‘শিক্ষকদের কাছে দাবি করতে পারি, সবাই মিলে আরও যত্ন নিই, সজাগ হই। এভাবেই ধীরে ধীরে সমাজে পরিবর্তন আসবে। অন্য কোনো রাস্তা–পথ নেই, এখানে জাদুমন্ত্র নেই। ধীরে ধীরেই এ পরিবর্তন আনতে হবে।’

আইপিডিসি-প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন প্রথম আলোর ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন ও যুব কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়কারী মুনির হাসান।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রথম আলো ট্রাস্টের সমন্বয়ক মাহবুবা সুলতানা।

তার আগে অনুষ্ঠানের মাঝে কবিতা আবৃত্তি করেন প্রথমা প্রকাশনের সমন্বয়ক ও কবি জাভেদ হুসেন। সবশেষে আবারও ‘গান পোকা ব্যান্ড’–এর সদস্যরা সংগীত পরিবেশন করেন।

-শিশির

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter