সন্তান বিক্রির জন্য বাজারে তুলেছিলেন এক মা!

সন্তান বিক্রির জন্য বাজারে তুলেছিলেন এক মা!

সারাদেশঃ
কলিজার টুকরা সন্তানকে ‘বিক্রির জন্য’ বাজারে তুলেছিলেন এক মা! দাম ১২ হাজার টাকা। পরে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির হস্তক্ষেপে সন্তান নিয়ে ঘরে ফেরেন ওই নারী।

নিজে প্যারালাইসিস রোগি। স্বামীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যোগাযোগা নেই। বাবার সংসারে থাকেন। সেখানেও অভাব। তাই সন্তান বিক্রির সিদ্ধান্ত!

খাগড়াছড়ি জেলা শহরের এক বাজারে এমন ঘটনা ঘটে। বর্তমানে অভাবে ভরণপোষণ করতে হিমসিম খাওয়ায় ছেলের সুন্দর ভবিষ্যৎ চিন্তা করে ১২ হাজার টাকায় সন্তান বিক্রি করতে চেয়েছেন গর্ভধারীনি মা। বিষয়টি জানাজানির পর জেলাজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

বিষয়টি কয়েকজনের নজরে আসলে তারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানান।

পরে সন্তানসহ মাকে কমলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুনীল চাকমার কাছে নিয়ে যান। সেখানে তিনি বুঝিয়ে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।

সোনালী চাকমা খাগড়াছড়ি ভাইবোনছড়ার পাকোজ্জ্যাছড়ি এলাকার কালাবো চাকমার মেয়ে। স্বামীর সাথে যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার পর সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে বসবাস করেন।

কমলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুনীল চাকমা জানান, বিষয়টি জানার পর আমি সন্তানসহ মাকে অফিসে নিয়ে আসি। পরে পরিবারের জিম্মায় তাদের হস্তান্তর করি।

ভাইবোনছড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুজন চাকমা বলেন, এমনিতে অভাব। তারপর পারুল চাকমা শারীরিকভাবে অসুস্থ। সন্তানকে কোন ভালো পরিবারে দত্তক দেওয়ার জন্য হাট বাজারে নিয় যায়। সেখানে কয়েকজনের কাছে সন্তানের বিনিময়ে ১২ হাজার টাকা চায়। পরে বিষয়টি জেনে আমি তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করি। বিষয়টি সত্যিই দুঃখজনক।

এই বিষয়ে শিশু রাম কৃষ্ণ চাকমার মা সোনালী চাকমা বলেন, ঘরে খাবার নাই। আমার ওষুধ কেনার টাকা নাই। কিভাবে চলব কিভাবে বাঁচবো। তাই ছেলেকে ভালো পরিবারে দিতে চেয়েছিলাম।

এদিকে শুক্রবার (১২ আগস্ট) সকালে সোনালী চাকমা ও তার সন্তান রামকৃষ্ণকে দেখতে যান সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা এমপি। এ সময় তিনি পরিবারটিকে ৬ মাসের খাবার সামগ্রি, নগদ অর্থ প্রদান করেন। একই সাথে তাদের একটি সরকারি ঘর দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন বলে জানান।

বাসন্তী চাকমা এমপি বলেন, এই যুগে এমন ঘটনা সত্যিই দুঃখজনক। বিষয়টি আমি জানার পর তাদের দেখতে এলাম। অভাব থেকে এমনটা করেছে বলে জেনেছি। শিশুটিকে কোন সরকারি শিশু সদনে পাঠানো যায় কিনা দেখব।

-আরপি

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter