আদালত স্থানান্তরের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে নোটিশ

অনলাইন ডেস্কঃ

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচার কার্যক্রম পরিচালনায় পরিত্যক্ত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনে বিশেষ আদালত স্থানান্তরের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আইনজীবী।

৪ঠা সেপ্টেম্বর একটি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে আদালত স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। বিএনপি চেয়ারপারসনের পক্ষ থেকে তার আইনজীবী ব্যারিস্টার নওশাদ জমির সরকারের এ সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে গতকাল আইন সচিবের কাছে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে ও কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।

এতে আগামী ৮ই সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রজ্ঞাপনটি বাতিলের অনুরোধ জানানো হয়। চার পয়েন্টের এ লিগ্যাল নোটিশে ব্যারিস্টার নওশাদ জমির বলেন, সরকারের বিশেষ নির্দেশে ৪ঠা সেপ্টেম্বর একটি প্রজ্ঞাপন (এসআরও নং: ২৬১-এআইএন/২০১৮) জারির মাধ্যমে বিশেষ জজ আদালত ৮-এ বিচারাধীন বিশেষ মামলা নং: ১৮/২০১৭ (দুদকের দায়ের করা মামলা ৮৪/২০১১) কার্যক্রম পরিত্যক্ত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রশাসনিক ভবনের ৭ নম্বর কক্ষে স্থানান্তর করা হয়।

একটি সুনির্দিষ্ট মামলার বিচার কার্যক্রম পরিচালনায় ফৌজদারি কার্যবিধির সেকশন ৯ (২)-এর আওতায় সরকার পরিষ্কারভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণামূলকভাবে হীনউদ্দেশ্যে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধির ৯ (২) সেকশনের মাধ্যমে সরকারকে আদালতের বিচারিক কার্যক্রম এক বা একাধিক জায়গায় স্থানান্তর করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪ (১) কিউ সেকশনে আদালত স্থাপন বা স্থানান্তরের জায়গা সম্পর্কে বলা হয়েছে, এটা হতে পারে- কোন বাড়ি, ভবন, তাঁবু বা জলযান।

কিন্তু সেখানে কোনো কারাগারের নাম উল্লেখ করা হয়নি। এ বিবেচনায় পরিত্যক্ত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি নির্দিষ্ট কক্ষকে বিশেষ আদালত হিসেবে ব্যবহারের বিশেষ নির্দেশ পুরোপুরি বেআইনি। আইনে এ বিষয়ে উল্লেখ না থাকায় বিশেষ আদালত স্থানান্তরের সিদ্ধান্তটি আইনবহির্ভূত।

বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৫ (৩) ধারায় প্রত্যেক নাগরিককে দ্রুত ও প্রকাশ্য বিচারের মৌলিক অধিকারের যে নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে, তার লঙ্ঘন করে দেয়া সরকারের এ নির্দেশ সংবিধানের পরিপন্থি। প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে আদালত স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়ে সরকার প্রকাশ্যে ও উন্মুক্ত বিচারের অধিকার হরণ করেছে। আদালতকে গোপনীয়তার আবরণে ঢেকে দেয়া হয়েছে। যা অদ্ভুতভাবে, রুদ্ধদ্বার আদালতের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

উল্লিখিত বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে পরিত্যক্ত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বিশেষ আদালত স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়ে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনটি বাতিল করে আগের মতো ঢাকা জজকোর্টেই মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনার অনুরোধ জানানো হয়েছে লিগ্যাল নোটিশে। অন্যথায়, সরকারের এ বিশেষ নির্দেশের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানান তিনি।

-আরবি

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter