মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নিয়ে বিএনপির ভাবনা

অনলাইনঃ

তৃণমূলে গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তাকে দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তির প্রধান যোগ্যতা হিসেবে বিবেচনা করছে বিএনপি।

এছাড়া মহাজোট সরকারের আমলে দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড ও আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা, মামলা-মোকদ্দমা, গুম-কারাভোগসহ ত্যাগ-স্বীকার ও শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি বিশ্বস্ততাকে প্রাধান্য দিয়ে নির্ধারণ করা হচ্ছে প্রার্থীর স্কোর। তবে সামাজিকভাবে ও ভোটের মাঠে যাদের শক্ত অবস্থান রয়েছে এমন প্রার্থীদের ক্ষেত্রে কিছুটা শিথিল থাকবে অন্য বিষয়গুলো।

এছাড়া বিশেষ পরিস্থিতিতে বিএনপি এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে যাঁরা নিজ নিজ এলাকায় বিরূপ পরিবেশের সঙ্গে লড়াই করে ভোটের মাঠে থাকতে পারবেন, ভোটারদের সঙ্গে থাকতে পারবেন বলে শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে প্রতীয়মান হবে, তারাই অগ্রাধিকার পাবেন মনোনয়নে।

সাক্ষাত প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে সাক্ষাত প্রার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাত গ্রহীতার তেমন কোন শক্ত প্রশ্ন ছিল না। একাধিক বা বিস্তর জটিল কোন আসনের বেশিরভাগ প্রার্থীকেই বলা হয়েছে সবাইকেই নোমিনেশন দেওয়া হবে। তবে চুড়ান্তভাবে একজনকেই মনোনীত করলে একযোগে কাজ করতে হবে। এবং দলীয় সিদ্ধান্ত নেমে নিয়ে নোমিনেশন প্রত্যাহার করে নিতে হবে।

প্রতিটি আসনের প্রার্থীদের আমলনামা গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে ভিডিও কনফরেন্সে কথাও বলেছেন তারেক রহমান স্বয়ং।

বিএনপির গুলশান কার্যালয় সারাদিন ঘুরে বেশির ভাগ প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের মধ্যে উৎসব উৎসব আমেজ লক্ষ করা গেছে।

গতকাল ছিল উত্তবঙ্গের রংপুর আর রাজশাহী বিভাগের প্রার্থীদের সাক্ষাতকার। প্রার্থীরা তাদের সমর্থকদের সাথে হাস্য রসে মেতে থাকতেই দেখা গেছে। সেলফি তোল, গ্রুপ ছবি ‍তুলে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া, নানান ভাবে মনোনয়নের পরবর্তী সময়ের জন্য অপেক্ষারই স্বাক্ষর পাওয়া গেছে। ভোটের নিরপেক্ষতা বা ভোটের ব্যাপারে কোন রকম সন্দেহের প্রসঙ্গ আসেনি কারও আলোচনায়।

তবে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বেশিরভাই বিলবোর্ড প্রার্থীদের নেতাদের বিরুদ্ধে ছিলেন। বিলবোর্ড নেতা বলতে তারা যা বুঝান সেটা হল যারা সারা বছরই শুধু বিলবোর্ড টানিয়ে পরিচিতি পেয়েছেন। এলাকার কর্মীদের সঙ্গে নাম মাত্র সম্পর্ক রেখেছেন কিন্ত ভোটারের সাথে তাদের তেমন কোন পরিচয় নেই। এলাকায় তাদের কোন কর্মকান্ড নেই। তাদের নিজ জেলা বিএনপির কোন কমিটিতেও কোন পদ পদবীও নেই। শোনা যাচ্ছে এসব নেতারা লন্ডনে তারেক রহমানের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করার মাধ্যমে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন এবং এরই প্রেক্ষিতে এলাকায় কিছু কর্মীদের মাধ্যমে এলাকায় নিজ নামে গুঞ্জন ছড়াচ্ছেন। এমনই একজন নওগাঁর বদলগাছি থানার বিলাশবাড়ি ইউনিয়ন যুবদলের নেতা ও বদলগাছি কলেজ এর জিএস রেজাউন নবী স্যান্ডো বলেন, তার প্রার্থী এবার মনোনয়ন না পেলে ধানের শীষের পক্ষে ভোট করবেন না। তিনি জানান, তার এলাকায় তার এবং তার পরিবারের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। এই প্রভাবের মাধ্যমে ওই এলাকা অনেক বেশি প্রভাবিত হয়ে থাকে। তারা কেউই ধানেরশীষ মার্কার ভোট করবেন না।

অন্যদিকে ২০ দল ও ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের ক্ষেত্রে জাতীয় রাজনীতিতে অবস্থান ও ভোট ব্যাংক বিবেচনা করেই ছাড় দেবে বিএনপি। দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নির্বাচন কমিশনে তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন মনোনয়ন বোর্ড। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন, আগামী ৮ই ডিসেম্বর দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। যিনি দলের চিঠি পাবেন তিনিই প্রার্থী হবেন, বাকিরা তাকে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করবেন।

মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে শিল্পী কনক চাঁপাও রয়েছেন। তার সাথে কথা বলে জানা গেল রাজনীতির ভিন্ন কথা। তিনি জানালেন, তিনি রাজনীতি করে মানব সেবা করতে চান। কনক চাঁপা তার নিজ জেলা সিরাজগঞ্জের জন্য মনোনয়ন প্রত্যাশী।

-এসএম

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter