আ স ম রবের খোলা চিঠি প্রধানমন্ত্রীকে

আ স ম রবের খোলা চিঠি প্রধানমন্ত্রীকে

অনলাইন ডেস্ক:

করেনা সংকট মোকাবেলায় আশু করণীয় প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি দিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব।

আজ পাঠানো ওই খোলা চিঠিতে আ স ম রব বলেন,  করোনায় সৃষ্ট বৈশ্বিক বিপর্যয়ে বাংলাদেশও গভীর সংকটগ্রস্ত। একদিকে স্বাস্থ্যসেবা  অন্যদিকে আর্থসামাজিক সংকট দুটোই নির্মম বাস্তবতা। এ ভয়াবহ সংকট মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্য অনিবার্য। জাতীয় ঐক্যই সমগ্র জাতির মাঝে উচ্চতর আত্মমর্যাদা বোধের  জন্ম দেবে এবং ন্যায়বোধ ও মানবিক শক্তির বিকাশ ঘটাবে। জাতীয় ঐক্যের ফলে গড়ে উঠা সম্মিলিত প্রয়াস ও মনোবল আরো শক্তিশালী হবে এবং দুর্যোগ উত্তরণ সহজ হবে।

তিনি বলেন, একপেশে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি পরাক্রমশালী ক্ষমতার ধারাবাহিকতা রাষ্ট্রীয় অরাজকতাকে উৎসাহ  জোগাবে। আগামীর সমাজ কাঠামোকে বিপন্ন করবে। অমানবিক অনৈতিক এক রাজনীতির উত্থান  ঘটাবে। করোনায় আমাদের আর্থসামাজিক ব্যবস্থা বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়েছে। কয়েক কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে  দারিদ্র্য সীমার নীচে অবস্থান করছে। ফলে বিপুলসংখ্যক মানুষের খাদ্যনিরাপত্তা, চিকিৎসা, নগদ সহায়তা ও পুনর্বাসনে বিরাট অর্থের প্রয়োজন। রাষ্ট্রীয় উৎসের বাইরে আমাদের জাতীয় অর্থনীতির বিরাট অংশ দুর্নীতিবাজ লুটেরাদের করায়ত্বে।

আ স ম রব বলেন, রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় ও ভয়ংকর  লুন্ঠনে সারা দেশে বিপুলসংখ্যক দুর্বৃত্ত চক্র গড়ে উঠেছে। দুর্নীতির কালোছায়া সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। বিদ্যমান মানবিক বিপর্যয়েও ত্রাণ চুরি আত্মসাৎ এবং লুন্ঠনের যে ভয়াবহ দলীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতির চিত্র উন্মোচিত হয়েছে, তা জাতির জন্য লজ্জাকর। এর আগে  যে দুর্নীতি বিরোধী কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে তাতে  অবৈধ সম্পদের ভয়াবহচিত্র, টাকার গোডাউন, স্বর্ণালংকারের স্তুপ আবিষ্কৃত হয়েছে। আপনার দুর্নীতিবিরোধী জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা দেওয়ার পরও দুর্নীতিবিরোধী অভিযান কেন বন্ধ  তা বোধগম্য নয়।

জেএসডি সভাপতি বলেন, এই দুর্নীতিবাজরা বঙ্গবন্ধুর শাসনামলকে বিতর্কিত এবং বঙ্গবন্ধুকে কি পরিমাণ মানসিক যাতনা দিয়েছে তাও আপনি অবগত। দুর্নীতিবিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখার আপনার দৃঢ় অংগীকার বাস্তবায়নের এখনই উপযুক্ত সময়। কারণ  লকডাউনের ফলে দুর্নীতিবাজরা এখন দেশে অবস্থান করছে। আকাশপথ জলপথ স্থলপথসহ সকল পরিবহন  এবং সীমান্ত পথে যাতায়ত বন্ধ থাকায় বিদেশ পাড়ি  দেওয়ার তাদের সুযোগ নেই। এমন কি লকডাউনে বঙ্গবন্ধুর খুনীরা পর্যন্ত ধরা পড়েছে।

তিনি বলেন, বিদ্যমান বাস্তবতায় টাকার গোডাউন  স্থানান্তর  এবং অর্থ পাচার করাও দূরূহ। র‌্যাব কর্তৃক সূচিত দুর্নীতি বিরোধী কার্যক্রমে সেনাবাহিনীকে সম্পৃক্ত করে নতুন উদ্যোমে শুরু করা জরুরি। এই কার্যক্রম বিপুল রাষ্ট্রীয় সম্পদ উদ্ধার করে নিরন্ন মানুষের খাদ্য  জোগান দেবে। অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুন্ঠনকারীদের আইনের আওতায় আনার রাষ্ট্রীয় কর্তব্য সম্পন্ন করবে। আশা করছি, দুর্নীতিবিরোধী অভিযান পুনরায় গতিশীল করার মাধ্যমে আপনি ঘুনে ধরা রাষ্ট্রব্যবস্থা বদল করে মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু করবেন।

-কেএফ

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter