ঈদ যাত্রায় ১০ দিনে ২২৪ জনের প্রান গেছে

অনলাইনঃ

বছরে দুটি দিন কর্মজীবি মানুষরা পরিবার পরিজন বা নিকটতমদের মুখগুলো দেখার জন্য নজিরবীহিন যাত্রা কষ্টেও নিজ নিজ গ্রামে ছুটে যান সবাই।

মিলনের ওই আশায় এবার ঈদেও ছুটে গিয়েছিলেন কর্মজীবিরা। ওই ঈদ যাত্রা অনেকের জীবনে নেমে এসেছে মৃত্যু।

একটি বেসরকারি সংস্থার হিসাবে ঈদুল আজহার দিন থেকে গত পাঁচ দিনে সড়কে প্রাণ গেছে ১৪৩ জনের। ঈদের আগের পাঁচ দিনে নিহত হয়েছেন ৮১ জন।

গত বৃহস্পতিবার একদিনে সড়কে প্রাণ গেছে ৩০ জনের।

পরিবহন খাত-সংশ্নিষ্টরা বলছেন, সড়ক-মহাসড়ক নিরাপদ রাখতে সরকারের যেসব সিদ্ধান্ত ছিল, তা মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন না হওয়ায় এবারের ঈদযাত্রা ছিল ভয়ঙ্কর।

মহাসড়কে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ ছোট গাড়ি। এটি নিয়ন্ত্রণ করতে দুই মাস আগে একটি কমিটি হলেও তার কোন হদিস মেলেনি।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৬ থেকে গত ঈদুল ফিতর পর্যন্ত সাতটি ঈদযাত্রায় এক হাজার ৬১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে সড়কে। প্রতি ঈদে গড়ে ২৩০ জনের প্রাণ গেছে। তবে বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের হিসাবে সংখ্যাটি বেশি।

প্রতি ঈদের মতো এবারও দুর্ঘটনা ঠেকাতে নানা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। গত ৫ আগস্ট সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অংশীজনের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ঈদের সময় জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে কিছুতেই ধীরগতির ও নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচল করতে দেওয়া হবে না। আনফিট ও বেপরোয়া গাড়ি চলাচল বন্ধে কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল।

যাত্রী কল্যাণ সমিতি নামের একটি বেসরকারি সংস্থার হিসাবে, গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই দিনে ৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে সড়ক-মহাসড়কে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে, এবারের ঈদযাত্রায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে।

২০৩টি দুর্ঘটনার ২৭ শতাংশ ঘটেছে মোটরসাইকেলের কারণে। প্রাণ গেছে ৭৭ জনের। মোট প্রাণহানির ৩৪ শতাংশই হয়েছে এই দ্বিচক্রযানের কারণে।

গত জুনে ‘দুর্ঘটনা হ্রাসকল্পে ছোট গাড়ি নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ প্রণয়ন কমিটি’ করে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) আব্দুল মালেক এ কমিটির আহ্বায়ক।

মহাসড়কে মোটরসাইকেলসহ ছোট গাড়ি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা খুঁজতে এ কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল মালেক বলেছেন, তড়িঘড়ি করে কাজ করতে চান না। প্রথম সভায় সব সদস্যের কাছে সুপারিশ চাওয়া হয়েছে। সুপারিশ পেলে পরবর্তী সভা হবে। সেখানে দেখা হবে অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক, নছিমন, ভটভটি, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য ছোট গাড়ি কতটা বিপজ্জনক, দুর্ঘটনার জন্য কতটা দায়ী। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের নিবন্ধন থাকলেও বাকিগুলো অবৈধ যান। সেগুলো কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা নির্ধারণে সুপারিশ করবে কমিটি। মোটরসাইকেল তার ভাবনায় রয়েছে। মহাসড়কে এই দ্বিচক্র যানকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তার পথ খুঁজবে কমিটি।

আব্দুল মালেক জানিয়েছেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে এরই মধ্যে সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের নেতৃত্বাধীন কমিটি ১১১টি সুপারিশ সংবলিত প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দিয়েছে। তার মন্ত্রণালয়ে এসেছে। সেখানেও ছোট গাড়ি নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ রয়েছে। এর সঙ্গে সমন্বয় করে সুপারিশ করবে তার কমিটি।

শুধু ছোট গাড়ি নয়, ঈদযাত্রাকে রক্তস্নাত করেছে বেপরোয়া গাড়িও। গত বৃহস্পতিবার ফেনীতে গাছের সঙ্গে পিকনিকের বাসের ধাক্কা খেয়ে আটজনের মৃত্যু হয়।

এআরআইর সহযোগী অধ্যাপক কাজী মো. সাইফুন নেওয়াজ বলেছেন, ফাঁকা রাস্তায় বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণ হতে পারে চালক ঘুমিয়ে গিয়েছিলেন। মোটাদাগে এ ছাড়া আর কোনো কারণ তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না।

ঈদ যাত্রায় ঢাকায় ফিরে রংপুর জেলা পরিষদ সদস্য আতিকুল ইসলাম দূর্ঘটনা কবলিত দুটি গাড়ির চালকের বর্ননা দিয়ে বললেন ‘গাড়ি দূর্ঘটনা কবলিত হয়েছে রাস্তায় গাড়ি পড়েও আছে কিন্ত একটি গাড়ির চালককে দেখা গেছে চালকের সিটেই ঘুমিয়ে থাকতে’। ঢাকা থেকে রংপুর গামী ফিটনেসবীহিন শটিবাড়ি পরিবহনে এই দৃশ্য দেখা যায়। আতিকুল ইসলাম পরিবহন খাতে ব্যাপক সংস্কারের দাবি জানিয়ে বলেন, দূরপাল্লার গাড়িতে চালক থাকতে হবে দুইজন। বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে কঠোর শাস্তির বিধার করা। ড্রাইভারের গাড়ি চালনায় শারিরীক যোগ্যতা আছে কি না। একজন ড্রাইভার এক নাগাড়ে একটির বেশি ট্রিপ চালাতে পারবেন না। এ ধরনের নানান খুঁটি নাটি বিষয়ের উপর জোর দিত সরকারের কাছে জানান।

মোটরযান আইন অনুযায়ী, একজন চালক একটানা সর্বোচ্চ পাঁচ ঘণ্টা গাড়ি চালাতে পারবেন। এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে দিনে সর্বোচ্চ আট ঘণ্টা গাড়ি চালাতে পারবেন। গত বছর ঈদুল ফিতরের সময় সড়কে ব্যাপক প্রাণহানির পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই আইন কার্যকরসহ পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

দূরপাল্লার গাড়িতে দু’জন চালক রাখা এবং চালকদের জন্য পথের পাশে বিশ্রামাগার নির্মাণের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। বছর গড়ালেও এসব নির্দেশনা কার্যকর হয়নি সব বাসে। মালিকদের সংগঠন সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ সমকালকে বলেছেন, বড় পরিবহনগুলোর প্রায় সবাই দূরপাল্লার বাসে দু’জন চালক রাখছে।

তবে পরিবহন খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের আগে-পরে ১৫ দিন তাদের ব্যবসার সময়। এই সময়ে চালকরা দিনে ২২ ঘণ্টাও গাড়ি চালান। যানজটের কারণে গন্তব্যে পৌঁছতে বিলম্ব হয়। যাত্রী পেতে চালক বিশ্রাম না নিয়েই ফের যাত্রা করেন, বেপরোয়া গতিতে চলেন। ক্লান্ত চালকের বেপরোয়া গতি ঈদে দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ।

এআরআইর তথ্যানুযায়ী, ৫৩ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনার কারণ অতিরিক্ত গতি, ৩৭ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে বেপরোয়া চলাচলের কারণে।

অনলাইনঃ

বছরে দুটি দিন কর্মজীবি মানুষদের জীবনে পরিবার পরিজন বা নিকটতমদের মুখগুলো দেখার জন্য নজিরবীহিন যাত্রা কষ্টেও নিজ নিজ গ্রামে ছুটে যান সবাই।

মিলনের ওই আশায় এবার ঈদেও ছুটে গিয়েছিলেন কর্মজীবিরা। ওই ঈদ যাত্রা অনেকের জীবনে নেমে এসেছে মৃত্যু।

একটি বেসরকারি সংস্থার হিসাবে ঈদুল আজহার দিন থেকে গত পাঁচ দিনে সড়কে প্রাণ গেছে ১৪৩ জনের। ঈদের আগের পাঁচ দিনে নিহত হয়েছেন ৮১ জন।

গত বৃহস্পতিবার একদিনে সড়কে প্রাণ গেছে ৩০ জনের।

পরিবহন খাত-সংশ্নিষ্টরা বলছেন, সড়ক-মহাসড়ক নিরাপদ রাখতে সরকারের যেসব সিদ্ধান্ত ছিল, তা মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন না হওয়ায় এবারের ঈদযাত্রা ছিল ভয়ঙ্কর।

মহাসড়কে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ ছোট গাড়ি। এটি নিয়ন্ত্রণ করতে দুই মাস আগে একটি কমিটি হলেও তার কোন হদিস মেলেনি।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৬ থেকে গত ঈদুল ফিতর পর্যন্ত সাতটি ঈদযাত্রায় এক হাজার ৬১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে সড়কে। প্রতি ঈদে গড়ে ২৩০ জনের প্রাণ গেছে। তবে বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের হিসাবে সংখ্যাটি বেশি।

প্রতি ঈদের মতো এবারও দুর্ঘটনা ঠেকাতে নানা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। গত ৫ আগস্ট সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অংশীজনের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ঈদের সময় জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে কিছুতেই ধীরগতির ও নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচল করতে দেওয়া হবে না। আনফিট ও বেপরোয়া গাড়ি চলাচল বন্ধে কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল।

যাত্রী কল্যাণ সমিতি নামের একটি বেসরকারি সংস্থার হিসাবে, গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই দিনে ৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে সড়ক-মহাসড়কে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে, এবারের ঈদযাত্রায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে।

২০৩টি দুর্ঘটনার ২৭ শতাংশ ঘটেছে মোটরসাইকেলের কারণে। প্রাণ গেছে ৭৭ জনের। মোট প্রাণহানির ৩৪ শতাংশই হয়েছে এই দ্বিচক্রযানের কারণে।

গত জুনে ‘দুর্ঘটনা হ্রাসকল্পে ছোট গাড়ি নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ প্রণয়ন কমিটি’ করে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) আব্দুল মালেক এ কমিটির আহ্বায়ক।

মহাসড়কে মোটরসাইকেলসহ ছোট গাড়ি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা খুঁজতে এ কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল মালেক বলেছেন, তড়িঘড়ি করে কাজ করতে চান না। প্রথম সভায় সব সদস্যের কাছে সুপারিশ চাওয়া হয়েছে। সুপারিশ পেলে পরবর্তী সভা হবে। সেখানে দেখা হবে অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক, নছিমন, ভটভটি, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য ছোট গাড়ি কতটা বিপজ্জনক, দুর্ঘটনার জন্য কতটা দায়ী। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের নিবন্ধন থাকলেও বাকিগুলো অবৈধ যান। সেগুলো কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা নির্ধারণে সুপারিশ করবে কমিটি। মোটরসাইকেল তার ভাবনায় রয়েছে। মহাসড়কে এই দ্বিচক্র যানকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তার পথ খুঁজবে কমিটি।

আব্দুল মালেক জানিয়েছেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে এরই মধ্যে সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের নেতৃত্বাধীন কমিটি ১১১টি সুপারিশ সংবলিত প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দিয়েছে। তার মন্ত্রণালয়ে এসেছে। সেখানেও ছোট গাড়ি নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ রয়েছে। এর সঙ্গে সমন্বয় করে সুপারিশ করবে তার কমিটি।

শুধু ছোট গাড়ি নয়, ঈদযাত্রাকে রক্তস্নাত করেছে বেপরোয়া গাড়িও। গত বৃহস্পতিবার ফেনীতে গাছের সঙ্গে পিকনিকের বাসের ধাক্কা খেয়ে আটজনের মৃত্যু হয়।

এআরআইর সহযোগী অধ্যাপক কাজী মো. সাইফুন নেওয়াজ বলেছেন, ফাঁকা রাস্তায় বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণ হতে পারে চালক ঘুমিয়ে গিয়েছিলেন। মোটাদাগে এ ছাড়া আর কোনো কারণ তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না।

ঈদ যাত্রায় ঢাকায় ফিরে রংপুর জেলা পরিষদ সদস্য আতিকুল ইসলাম দূর্ঘটনা কবলিত দুটি গাড়ির চালকের বর্ননা দিয়ে বললেন ‘গাড়ি দূর্ঘটনা কবলিত হয়েছে রাস্তায় গাড়ি পড়েও আছে কিন্ত একটি গাড়ির চালককে দেখা গেছে চালকের সিটেই ঘুমিয়ে থাকতে’। ঢাকা থেকে রংপুর গামী ফিটনেসবীহিন শটিবাড়ি পরিবহনে এই দৃশ্য দেখা যায়। আতিকুল ইসলাম পরিবহন খাতে ব্যাপক সংস্কারের দাবি জানিয়ে বলেন, দূরপাল্লার গাড়িতে চালক থাকতে হবে দুইজন। বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে কঠোর শাস্তির বিধার করা। ড্রাইভারের গাড়ি চালনায় শারিরীক যোগ্যতা আছে কি না। একজন ড্রাইভার এক নাগাড়ে একটির বেশি ট্রিপ চালাতে পারবেন না। এ ধরনের নানান খুঁটি নাটি বিষয়ের উপর জোর দিত সরকারের কাছে জানান।

মোটরযান আইন অনুযায়ী, একজন চালক একটানা সর্বোচ্চ পাঁচ ঘণ্টা গাড়ি চালাতে পারবেন। এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে দিনে সর্বোচ্চ আট ঘণ্টা গাড়ি চালাতে পারবেন। গত বছর ঈদুল ফিতরের সময় সড়কে ব্যাপক প্রাণহানির পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই আইন কার্যকরসহ পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

দূরপাল্লার গাড়িতে দু’জন চালক রাখা এবং চালকদের জন্য পথের পাশে বিশ্রামাগার নির্মাণের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। বছর গড়ালেও এসব নির্দেশনা কার্যকর হয়নি সব বাসে। মালিকদের সংগঠন সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ সমকালকে বলেছেন, বড় পরিবহনগুলোর প্রায় সবাই দূরপাল্লার বাসে দু’জন চালক রাখছে।

তবে পরিবহন খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের আগে-পরে ১৫ দিন তাদের ব্যবসার সময়। এই সময়ে চালকরা দিনে ২২ ঘণ্টাও গাড়ি চালান। যানজটের কারণে গন্তব্যে পৌঁছতে বিলম্ব হয়। যাত্রী পেতে চালক বিশ্রাম না নিয়েই ফের যাত্রা করেন, বেপরোয়া গতিতে চলেন। ক্লান্ত চালকের বেপরোয়া গতি ঈদে দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ।

এআরআইর তথ্যানুযায়ী, ৫৩ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনার কারণ অতিরিক্ত গতি, ৩৭ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে বেপরোয়া চলাচলের কারণে।

-কেএম

অনলাইনঃ

বছরে দুটি দিন কর্মজীবি মানুষদের জীবনে পরিবার পরিজন বা নিকটতমদের মুখগুলো দেখার জন্য নজিরবীহিন যাত্রা কষ্টেও নিজ নিজ গ্রামে ছুটে যান সবাই।

মিলনের ওই আশায় এবার ঈদেও ছুটে গিয়েছিলেন কর্মজীবিরা। ওই ঈদ যাত্রা অনেকের জীবনে নেমে এসেছে মৃত্যু।

একটি বেসরকারি সংস্থার হিসাবে ঈদুল আজহার দিন থেকে গত পাঁচ দিনে সড়কে প্রাণ গেছে ১৪৩ জনের। ঈদের আগের পাঁচ দিনে নিহত হয়েছেন ৮১ জন।

গত বৃহস্পতিবার একদিনে সড়কে প্রাণ গেছে ৩০ জনের।

পরিবহন খাত-সংশ্নিষ্টরা বলছেন, সড়ক-মহাসড়ক নিরাপদ রাখতে সরকারের যেসব সিদ্ধান্ত ছিল, তা মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন না হওয়ায় এবারের ঈদযাত্রা ছিল ভয়ঙ্কর।

মহাসড়কে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ ছোট গাড়ি। এটি নিয়ন্ত্রণ করতে দুই মাস আগে একটি কমিটি হলেও তার কোন হদিস মেলেনি।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৬ থেকে গত ঈদুল ফিতর পর্যন্ত সাতটি ঈদযাত্রায় এক হাজার ৬১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে সড়কে। প্রতি ঈদে গড়ে ২৩০ জনের প্রাণ গেছে। তবে বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের হিসাবে সংখ্যাটি বেশি।

প্রতি ঈদের মতো এবারও দুর্ঘটনা ঠেকাতে নানা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। গত ৫ আগস্ট সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অংশীজনের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ঈদের সময় জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে কিছুতেই ধীরগতির ও নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচল করতে দেওয়া হবে না। আনফিট ও বেপরোয়া গাড়ি চলাচল বন্ধে কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল।

যাত্রী কল্যাণ সমিতি নামের একটি বেসরকারি সংস্থার হিসাবে, গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই দিনে ৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে সড়ক-মহাসড়কে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে, এবারের ঈদযাত্রায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে।

২০৩টি দুর্ঘটনার ২৭ শতাংশ ঘটেছে মোটরসাইকেলের কারণে। প্রাণ গেছে ৭৭ জনের। মোট প্রাণহানির ৩৪ শতাংশই হয়েছে এই দ্বিচক্রযানের কারণে।

গত জুনে ‘দুর্ঘটনা হ্রাসকল্পে ছোট গাড়ি নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ প্রণয়ন কমিটি’ করে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) আব্দুল মালেক এ কমিটির আহ্বায়ক।

মহাসড়কে মোটরসাইকেলসহ ছোট গাড়ি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা খুঁজতে এ কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল মালেক বলেছেন, তড়িঘড়ি করে কাজ করতে চান না। প্রথম সভায় সব সদস্যের কাছে সুপারিশ চাওয়া হয়েছে। সুপারিশ পেলে পরবর্তী সভা হবে। সেখানে দেখা হবে অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক, নছিমন, ভটভটি, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য ছোট গাড়ি কতটা বিপজ্জনক, দুর্ঘটনার জন্য কতটা দায়ী। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের নিবন্ধন থাকলেও বাকিগুলো অবৈধ যান। সেগুলো কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা নির্ধারণে সুপারিশ করবে কমিটি। মোটরসাইকেল তার ভাবনায় রয়েছে। মহাসড়কে এই দ্বিচক্র যানকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তার পথ খুঁজবে কমিটি।

আব্দুল মালেক জানিয়েছেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে এরই মধ্যে সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের নেতৃত্বাধীন কমিটি ১১১টি সুপারিশ সংবলিত প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দিয়েছে। তার মন্ত্রণালয়ে এসেছে। সেখানেও ছোট গাড়ি নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ রয়েছে। এর সঙ্গে সমন্বয় করে সুপারিশ করবে তার কমিটি।

শুধু ছোট গাড়ি নয়, ঈদযাত্রাকে রক্তস্নাত করেছে বেপরোয়া গাড়িও। গত বৃহস্পতিবার ফেনীতে গাছের সঙ্গে পিকনিকের বাসের ধাক্কা খেয়ে আটজনের মৃত্যু হয়।

এআরআইর সহযোগী অধ্যাপক কাজী মো. সাইফুন নেওয়াজ বলেছেন, ফাঁকা রাস্তায় বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণ হতে পারে চালক ঘুমিয়ে গিয়েছিলেন। মোটাদাগে এ ছাড়া আর কোনো কারণ তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না।

ঈদ যাত্রায় ঢাকায় ফিরে রংপুর জেলা পরিষদ সদস্য আতিকুল ইসলাম দূর্ঘটনা কবলিত দুটি গাড়ির চালকের বর্ননা দিয়ে বললেন ‘গাড়ি দূর্ঘটনা কবলিত হয়েছে রাস্তায় গাড়ি পড়েও আছে কিন্ত একটি গাড়ির চালককে দেখা গেছে চালকের সিটেই ঘুমিয়ে থাকতে’। ঢাকা থেকে রংপুর গামী ফিটনেসবীহিন শটিবাড়ি পরিবহনে এই দৃশ্য দেখা যায়। আতিকুল ইসলাম পরিবহন খাতে ব্যাপক সংস্কারের দাবি জানিয়ে বলেন, দূরপাল্লার গাড়িতে চালক থাকতে হবে দুইজন। বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে কঠোর শাস্তির বিধার করা। ড্রাইভারের গাড়ি চালনায় শারিরীক যোগ্যতা আছে কি না। একজন ড্রাইভার এক নাগাড়ে একটির বেশি ট্রিপ চালাতে পারবেন না। এ ধরনের নানান খুঁটি নাটি বিষয়ের উপর জোর দিত সরকারের কাছে জানান।

মোটরযান আইন অনুযায়ী, একজন চালক একটানা সর্বোচ্চ পাঁচ ঘণ্টা গাড়ি চালাতে পারবেন। এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে দিনে সর্বোচ্চ আট ঘণ্টা গাড়ি চালাতে পারবেন। গত বছর ঈদুল ফিতরের সময় সড়কে ব্যাপক প্রাণহানির পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই আইন কার্যকরসহ পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

দূরপাল্লার গাড়িতে দু’জন চালক রাখা এবং চালকদের জন্য পথের পাশে বিশ্রামাগার নির্মাণের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। বছর গড়ালেও এসব নির্দেশনা কার্যকর হয়নি সব বাসে। মালিকদের সংগঠন সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ সমকালকে বলেছেন, বড় পরিবহনগুলোর প্রায় সবাই দূরপাল্লার বাসে দু’জন চালক রাখছে।

তবে পরিবহন খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের আগে-পরে ১৫ দিন তাদের ব্যবসার সময়। এই সময়ে চালকরা দিনে ২২ ঘণ্টাও গাড়ি চালান। যানজটের কারণে গন্তব্যে পৌঁছতে বিলম্ব হয়। যাত্রী পেতে চালক বিশ্রাম না নিয়েই ফের যাত্রা করেন, বেপরোয়া গতিতে চলেন। ক্লান্ত চালকের বেপরোয়া গতি ঈদে দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ।

এআরআইর তথ্যানুযায়ী, ৫৩ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনার কারণ অতিরিক্ত গতি, ৩৭ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে বেপরোয়া চলাচলের কারণে।

-কেএম

অনলাইনঃ

বছরে দুটি দিন কর্মজীবি মানুষদের জীবনে পরিবার পরিজন বা নিকটতমদের মুখগুলো দেখার জন্য নজিরবীহিন যাত্রা কষ্টেও নিজ নিজ গ্রামে ছুটে যান সবাই।

মিলনের ওই আশায় এবার ঈদেও ছুটে গিয়েছিলেন কর্মজীবিরা। ওই ঈদ যাত্রা অনেকের জীবনে নেমে এসেছে মৃত্যু।

একটি বেসরকারি সংস্থার হিসাবে ঈদুল আজহার দিন থেকে গত পাঁচ দিনে সড়কে প্রাণ গেছে ১৪৩ জনের। ঈদের আগের পাঁচ দিনে নিহত হয়েছেন ৮১ জন।

গত বৃহস্পতিবার একদিনে সড়কে প্রাণ গেছে ৩০ জনের।

পরিবহন খাত-সংশ্নিষ্টরা বলছেন, সড়ক-মহাসড়ক নিরাপদ রাখতে সরকারের যেসব সিদ্ধান্ত ছিল, তা মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন না হওয়ায় এবারের ঈদযাত্রা ছিল ভয়ঙ্কর।

মহাসড়কে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ ছোট গাড়ি। এটি নিয়ন্ত্রণ করতে দুই মাস আগে একটি কমিটি হলেও তার কোন হদিস মেলেনি।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৬ থেকে গত ঈদুল ফিতর পর্যন্ত সাতটি ঈদযাত্রায় এক হাজার ৬১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে সড়কে। প্রতি ঈদে গড়ে ২৩০ জনের প্রাণ গেছে। তবে বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের হিসাবে সংখ্যাটি বেশি।

প্রতি ঈদের মতো এবারও দুর্ঘটনা ঠেকাতে নানা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। গত ৫ আগস্ট সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অংশীজনের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ঈদের সময় জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে কিছুতেই ধীরগতির ও নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচল করতে দেওয়া হবে না। আনফিট ও বেপরোয়া গাড়ি চলাচল বন্ধে কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল।

যাত্রী কল্যাণ সমিতি নামের একটি বেসরকারি সংস্থার হিসাবে, গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই দিনে ৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে সড়ক-মহাসড়কে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে, এবারের ঈদযাত্রায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে।

২০৩টি দুর্ঘটনার ২৭ শতাংশ ঘটেছে মোটরসাইকেলের কারণে। প্রাণ গেছে ৭৭ জনের। মোট প্রাণহানির ৩৪ শতাংশই হয়েছে এই দ্বিচক্রযানের কারণে।

গত জুনে ‘দুর্ঘটনা হ্রাসকল্পে ছোট গাড়ি নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ প্রণয়ন কমিটি’ করে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) আব্দুল মালেক এ কমিটির আহ্বায়ক।

মহাসড়কে মোটরসাইকেলসহ ছোট গাড়ি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা খুঁজতে এ কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল মালেক বলেছেন, তড়িঘড়ি করে কাজ করতে চান না। প্রথম সভায় সব সদস্যের কাছে সুপারিশ চাওয়া হয়েছে। সুপারিশ পেলে পরবর্তী সভা হবে। সেখানে দেখা হবে অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক, নছিমন, ভটভটি, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য ছোট গাড়ি কতটা বিপজ্জনক, দুর্ঘটনার জন্য কতটা দায়ী। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের নিবন্ধন থাকলেও বাকিগুলো অবৈধ যান। সেগুলো কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা নির্ধারণে সুপারিশ করবে কমিটি। মোটরসাইকেল তার ভাবনায় রয়েছে। মহাসড়কে এই দ্বিচক্র যানকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তার পথ খুঁজবে কমিটি।

আব্দুল মালেক জানিয়েছেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে এরই মধ্যে সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের নেতৃত্বাধীন কমিটি ১১১টি সুপারিশ সংবলিত প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দিয়েছে। তার মন্ত্রণালয়ে এসেছে। সেখানেও ছোট গাড়ি নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ রয়েছে। এর সঙ্গে সমন্বয় করে সুপারিশ করবে তার কমিটি।

শুধু ছোট গাড়ি নয়, ঈদযাত্রাকে রক্তস্নাত করেছে বেপরোয়া গাড়িও। গত বৃহস্পতিবার ফেনীতে গাছের সঙ্গে পিকনিকের বাসের ধাক্কা খেয়ে আটজনের মৃত্যু হয়।

এআরআইর সহযোগী অধ্যাপক কাজী মো. সাইফুন নেওয়াজ বলেছেন, ফাঁকা রাস্তায় বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণ হতে পারে চালক ঘুমিয়ে গিয়েছিলেন। মোটাদাগে এ ছাড়া আর কোনো কারণ তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না।

ঈদ যাত্রায় ঢাকায় ফিরে রংপুর জেলা পরিষদ সদস্য আতিকুল ইসলাম দূর্ঘটনা কবলিত দুটি গাড়ির চালকের বর্ননা দিয়ে বললেন ‘গাড়ি দূর্ঘটনা কবলিত হয়েছে রাস্তায় গাড়ি পড়েও আছে কিন্ত একটি গাড়ির চালককে দেখা গেছে চালকের সিটেই ঘুমিয়ে থাকতে’। ঢাকা থেকে রংপুর গামী ফিটনেসবীহিন শটিবাড়ি পরিবহনে এই দৃশ্য দেখা যায়। আতিকুল ইসলাম পরিবহন খাতে ব্যাপক সংস্কারের দাবি জানিয়ে বলেন, দূরপাল্লার গাড়িতে চালক থাকতে হবে দুইজন। বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে কঠোর শাস্তির বিধার করা। ড্রাইভারের গাড়ি চালনায় শারিরীক যোগ্যতা আছে কি না। একজন ড্রাইভার এক নাগাড়ে একটির বেশি ট্রিপ চালাতে পারবেন না। এ ধরনের নানান খুঁটি নাটি বিষয়ের উপর জোর দিত সরকারের কাছে জানান।

মোটরযান আইন অনুযায়ী, একজন চালক একটানা সর্বোচ্চ পাঁচ ঘণ্টা গাড়ি চালাতে পারবেন। এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে দিনে সর্বোচ্চ আট ঘণ্টা গাড়ি চালাতে পারবেন। গত বছর ঈদুল ফিতরের সময় সড়কে ব্যাপক প্রাণহানির পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই আইন কার্যকরসহ পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

দূরপাল্লার গাড়িতে দু’জন চালক রাখা এবং চালকদের জন্য পথের পাশে বিশ্রামাগার নির্মাণের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। বছর গড়ালেও এসব নির্দেশনা কার্যকর হয়নি সব বাসে। মালিকদের সংগঠন সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ সমকালকে বলেছেন, বড় পরিবহনগুলোর প্রায় সবাই দূরপাল্লার বাসে দু’জন চালক রাখছে।

তবে পরিবহন খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের আগে-পরে ১৫ দিন তাদের ব্যবসার সময়। এই সময়ে চালকরা দিনে ২২ ঘণ্টাও গাড়ি চালান। যানজটের কারণে গন্তব্যে পৌঁছতে বিলম্ব হয়। যাত্রী পেতে চালক বিশ্রাম না নিয়েই ফের যাত্রা করেন, বেপরোয়া গতিতে চলেন। ক্লান্ত চালকের বেপরোয়া গতি ঈদে দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ।

এআরআইর তথ্যানুযায়ী, ৫৩ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনার কারণ অতিরিক্ত গতি, ৩৭ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে বেপরোয়া চলাচলের কারণে।

-কেএম

অনলাইনঃ

বছরে দুটি দিন কর্মজীবি মানুষদের জীবনে পরিবার পরিজন বা নিকটতমদের মুখগুলো দেখার জন্য নজিরবীহিন যাত্রা কষ্টেও নিজ নিজ গ্রামে ছুটে যান সবাই।

মিলনের ওই আশায় এবার ঈদেও ছুটে গিয়েছিলেন কর্মজীবিরা। ওই ঈদ যাত্রা অনেকের জীবনে নেমে এসেছে মৃত্যু।

একটি বেসরকারি সংস্থার হিসাবে ঈদুল আজহার দিন থেকে গত পাঁচ দিনে সড়কে প্রাণ গেছে ১৪৩ জনের। ঈদের আগের পাঁচ দিনে নিহত হয়েছেন ৮১ জন।

গত বৃহস্পতিবার একদিনে সড়কে প্রাণ গেছে ৩০ জনের।

পরিবহন খাত-সংশ্নিষ্টরা বলছেন, সড়ক-মহাসড়ক নিরাপদ রাখতে সরকারের যেসব সিদ্ধান্ত ছিল, তা মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন না হওয়ায় এবারের ঈদযাত্রা ছিল ভয়ঙ্কর।

মহাসড়কে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ ছোট গাড়ি। এটি নিয়ন্ত্রণ করতে দুই মাস আগে একটি কমিটি হলেও তার কোন হদিস মেলেনি।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৬ থেকে গত ঈদুল ফিতর পর্যন্ত সাতটি ঈদযাত্রায় এক হাজার ৬১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে সড়কে। প্রতি ঈদে গড়ে ২৩০ জনের প্রাণ গেছে। তবে বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের হিসাবে সংখ্যাটি বেশি।

প্রতি ঈদের মতো এবারও দুর্ঘটনা ঠেকাতে নানা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। গত ৫ আগস্ট সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অংশীজনের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ঈদের সময় জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে কিছুতেই ধীরগতির ও নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচল করতে দেওয়া হবে না। আনফিট ও বেপরোয়া গাড়ি চলাচল বন্ধে কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল।

যাত্রী কল্যাণ সমিতি নামের একটি বেসরকারি সংস্থার হিসাবে, গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই দিনে ৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে সড়ক-মহাসড়কে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে, এবারের ঈদযাত্রায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে।

২০৩টি দুর্ঘটনার ২৭ শতাংশ ঘটেছে মোটরসাইকেলের কারণে। প্রাণ গেছে ৭৭ জনের। মোট প্রাণহানির ৩৪ শতাংশই হয়েছে এই দ্বিচক্রযানের কারণে।

গত জুনে ‘দুর্ঘটনা হ্রাসকল্পে ছোট গাড়ি নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ প্রণয়ন কমিটি’ করে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) আব্দুল মালেক এ কমিটির আহ্বায়ক।

মহাসড়কে মোটরসাইকেলসহ ছোট গাড়ি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা খুঁজতে এ কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল মালেক বলেছেন, তড়িঘড়ি করে কাজ করতে চান না। প্রথম সভায় সব সদস্যের কাছে সুপারিশ চাওয়া হয়েছে। সুপারিশ পেলে পরবর্তী সভা হবে। সেখানে দেখা হবে অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক, নছিমন, ভটভটি, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য ছোট গাড়ি কতটা বিপজ্জনক, দুর্ঘটনার জন্য কতটা দায়ী। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের নিবন্ধন থাকলেও বাকিগুলো অবৈধ যান। সেগুলো কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা নির্ধারণে সুপারিশ করবে কমিটি। মোটরসাইকেল তার ভাবনায় রয়েছে। মহাসড়কে এই দ্বিচক্র যানকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তার পথ খুঁজবে কমিটি।

আব্দুল মালেক জানিয়েছেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে এরই মধ্যে সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের নেতৃত্বাধীন কমিটি ১১১টি সুপারিশ সংবলিত প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দিয়েছে। তার মন্ত্রণালয়ে এসেছে। সেখানেও ছোট গাড়ি নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ রয়েছে। এর সঙ্গে সমন্বয় করে সুপারিশ করবে তার কমিটি।

শুধু ছোট গাড়ি নয়, ঈদযাত্রাকে রক্তস্নাত করেছে বেপরোয়া গাড়িও। গত বৃহস্পতিবার ফেনীতে গাছের সঙ্গে পিকনিকের বাসের ধাক্কা খেয়ে আটজনের মৃত্যু হয়।

এআরআইর সহযোগী অধ্যাপক কাজী মো. সাইফুন নেওয়াজ বলেছেন, ফাঁকা রাস্তায় বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণ হতে পারে চালক ঘুমিয়ে গিয়েছিলেন। মোটাদাগে এ ছাড়া আর কোনো কারণ তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না।

ঈদ যাত্রায় ঢাকায় ফিরে রংপুর জেলা পরিষদ সদস্য আতিকুল ইসলাম দূর্ঘটনা কবলিত দুটি গাড়ির চালকের বর্ননা দিয়ে বললেন ‘গাড়ি দূর্ঘটনা কবলিত হয়েছে রাস্তায় গাড়ি পড়েও আছে কিন্ত একটি গাড়ির চালককে দেখা গেছে চালকের সিটেই ঘুমিয়ে থাকতে’। ঢাকা থেকে রংপুর গামী ফিটনেসবীহিন শটিবাড়ি পরিবহনে এই দৃশ্য দেখা যায়। আতিকুল ইসলাম পরিবহন খাতে ব্যাপক সংস্কারের দাবি জানিয়ে বলেন, দূরপাল্লার গাড়িতে চালক থাকতে হবে দুইজন। বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে কঠোর শাস্তির বিধার করা। ড্রাইভারের গাড়ি চালনায় শারিরীক যোগ্যতা আছে কি না। একজন ড্রাইভার এক নাগাড়ে একটির বেশি ট্রিপ চালাতে পারবেন না। এ ধরনের নানান খুঁটি নাটি বিষয়ের উপর জোর দিত সরকারের কাছে জানান।

মোটরযান আইন অনুযায়ী, একজন চালক একটানা সর্বোচ্চ পাঁচ ঘণ্টা গাড়ি চালাতে পারবেন। এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে দিনে সর্বোচ্চ আট ঘণ্টা গাড়ি চালাতে পারবেন। গত বছর ঈদুল ফিতরের সময় সড়কে ব্যাপক প্রাণহানির পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই আইন কার্যকরসহ পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

দূরপাল্লার গাড়িতে দু’জন চালক রাখা এবং চালকদের জন্য পথের পাশে বিশ্রামাগার নির্মাণের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। বছর গড়ালেও এসব নির্দেশনা কার্যকর হয়নি সব বাসে। মালিকদের সংগঠন সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ সমকালকে বলেছেন, বড় পরিবহনগুলোর প্রায় সবাই দূরপাল্লার বাসে দু’জন চালক রাখছে।

তবে পরিবহন খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের আগে-পরে ১৫ দিন তাদের ব্যবসার সময়। এই সময়ে চালকরা দিনে ২২ ঘণ্টাও গাড়ি চালান। যানজটের কারণে গন্তব্যে পৌঁছতে বিলম্ব হয়। যাত্রী পেতে চালক বিশ্রাম না নিয়েই ফের যাত্রা করেন, বেপরোয়া গতিতে চলেন। ক্লান্ত চালকের বেপরোয়া গতি ঈদে দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ।

এআরআইর তথ্যানুযায়ী, ৫৩ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনার কারণ অতিরিক্ত গতি, ৩৭ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে বেপরোয়া চলাচলের কারণে।

-কেএম

অনলাইনঃ

বছরে দুটি দিন কর্মজীবি মানুষদের জীবনে পরিবার পরিজন বা নিকটতমদের মুখগুলো দেখার জন্য নজিরবীহিন যাত্রা কষ্টেও নিজ নিজ গ্রামে ছুটে যান সবাই।

মিলনের ওই আশায় এবার ঈদেও ছুটে গিয়েছিলেন কর্মজীবিরা। ওই ঈদ যাত্রা অনেকের জীবনে নেমে এসেছে মৃত্যু।

একটি বেসরকারি সংস্থার হিসাবে ঈদুল আজহার দিন থেকে গত পাঁচ দিনে সড়কে প্রাণ গেছে ১৪৩ জনের। ঈদের আগের পাঁচ দিনে নিহত হয়েছেন ৮১ জন।

গত বৃহস্পতিবার একদিনে সড়কে প্রাণ গেছে ৩০ জনের।

পরিবহন খাত-সংশ্নিষ্টরা বলছেন, সড়ক-মহাসড়ক নিরাপদ রাখতে সরকারের যেসব সিদ্ধান্ত ছিল, তা মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন না হওয়ায় এবারের ঈদযাত্রা ছিল ভয়ঙ্কর।

মহাসড়কে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ ছোট গাড়ি। এটি নিয়ন্ত্রণ করতে দুই মাস আগে একটি কমিটি হলেও তার কোন হদিস মেলেনি।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৬ থেকে গত ঈদুল ফিতর পর্যন্ত সাতটি ঈদযাত্রায় এক হাজার ৬১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে সড়কে। প্রতি ঈদে গড়ে ২৩০ জনের প্রাণ গেছে। তবে বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের হিসাবে সংখ্যাটি বেশি।

প্রতি ঈদের মতো এবারও দুর্ঘটনা ঠেকাতে নানা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। গত ৫ আগস্ট সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অংশীজনের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ঈদের সময় জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে কিছুতেই ধীরগতির ও নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচল করতে দেওয়া হবে না। আনফিট ও বেপরোয়া গাড়ি চলাচল বন্ধে কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল।

যাত্রী কল্যাণ সমিতি নামের একটি বেসরকারি সংস্থার হিসাবে, গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই দিনে ৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে সড়ক-মহাসড়কে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে, এবারের ঈদযাত্রায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে।

২০৩টি দুর্ঘটনার ২৭ শতাংশ ঘটেছে মোটরসাইকেলের কারণে। প্রাণ গেছে ৭৭ জনের। মোট প্রাণহানির ৩৪ শতাংশই হয়েছে এই দ্বিচক্রযানের কারণে।

গত জুনে ‘দুর্ঘটনা হ্রাসকল্পে ছোট গাড়ি নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ প্রণয়ন কমিটি’ করে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) আব্দুল মালেক এ কমিটির আহ্বায়ক।

মহাসড়কে মোটরসাইকেলসহ ছোট গাড়ি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা খুঁজতে এ কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল মালেক বলেছেন, তড়িঘড়ি করে কাজ করতে চান না। প্রথম সভায় সব সদস্যের কাছে সুপারিশ চাওয়া হয়েছে। সুপারিশ পেলে পরবর্তী সভা হবে। সেখানে দেখা হবে অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক, নছিমন, ভটভটি, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য ছোট গাড়ি কতটা বিপজ্জনক, দুর্ঘটনার জন্য কতটা দায়ী। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের নিবন্ধন থাকলেও বাকিগুলো অবৈধ যান। সেগুলো কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা নির্ধারণে সুপারিশ করবে কমিটি। মোটরসাইকেল তার ভাবনায় রয়েছে। মহাসড়কে এই দ্বিচক্র যানকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তার পথ খুঁজবে কমিটি।

আব্দুল মালেক জানিয়েছেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে এরই মধ্যে সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের নেতৃত্বাধীন কমিটি ১১১টি সুপারিশ সংবলিত প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দিয়েছে। তার মন্ত্রণালয়ে এসেছে। সেখানেও ছোট গাড়ি নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ রয়েছে। এর সঙ্গে সমন্বয় করে সুপারিশ করবে তার কমিটি।

শুধু ছোট গাড়ি নয়, ঈদযাত্রাকে রক্তস্নাত করেছে বেপরোয়া গাড়িও। গত বৃহস্পতিবার ফেনীতে গাছের সঙ্গে পিকনিকের বাসের ধাক্কা খেয়ে আটজনের মৃত্যু হয়।

এআরআইর সহযোগী অধ্যাপক কাজী মো. সাইফুন নেওয়াজ বলেছেন, ফাঁকা রাস্তায় বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণ হতে পারে চালক ঘুমিয়ে গিয়েছিলেন। মোটাদাগে এ ছাড়া আর কোনো কারণ তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না।

ঈদ যাত্রায় ঢাকায় ফিরে রংপুর জেলা পরিষদ সদস্য আতিকুল ইসলাম দূর্ঘটনা কবলিত দুটি গাড়ির চালকের বর্ননা দিয়ে বললেন ‘গাড়ি দূর্ঘটনা কবলিত হয়েছে রাস্তায় গাড়ি পড়েও আছে কিন্ত একটি গাড়ির চালককে দেখা গেছে চালকের সিটেই ঘুমিয়ে থাকতে’। ঢাকা থেকে রংপুর গামী ফিটনেসবীহিন শটিবাড়ি পরিবহনে এই দৃশ্য দেখা যায়। আতিকুল ইসলাম পরিবহন খাতে ব্যাপক সংস্কারের দাবি জানিয়ে বলেন, দূরপাল্লার গাড়িতে চালক থাকতে হবে দুইজন। বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে কঠোর শাস্তির বিধার করা। ড্রাইভারের গাড়ি চালনায় শারিরীক যোগ্যতা আছে কি না। একজন ড্রাইভার এক নাগাড়ে একটির বেশি ট্রিপ চালাতে পারবেন না। এ ধরনের নানান খুঁটি নাটি বিষয়ের উপর জোর দিত সরকারের কাছে জানান।

মোটরযান আইন অনুযায়ী, একজন চালক একটানা সর্বোচ্চ পাঁচ ঘণ্টা গাড়ি চালাতে পারবেন। এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে দিনে সর্বোচ্চ আট ঘণ্টা গাড়ি চালাতে পারবেন। গত বছর ঈদুল ফিতরের সময় সড়কে ব্যাপক প্রাণহানির পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই আইন কার্যকরসহ পাঁচ দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

দূরপাল্লার গাড়িতে দু’জন চালক রাখা এবং চালকদের জন্য পথের পাশে বিশ্রামাগার নির্মাণের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। বছর গড়ালেও এসব নির্দেশনা কার্যকর হয়নি সব বাসে। মালিকদের সংগঠন সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ সমকালকে বলেছেন, বড় পরিবহনগুলোর প্রায় সবাই দূরপাল্লার বাসে দু’জন চালক রাখছে।

তবে পরিবহন খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের আগে-পরে ১৫ দিন তাদের ব্যবসার সময়। এই সময়ে চালকরা দিনে ২২ ঘণ্টাও গাড়ি চালান। যানজটের কারণে গন্তব্যে পৌঁছতে বিলম্ব হয়। যাত্রী পেতে চালক বিশ্রাম না নিয়েই ফের যাত্রা করেন, বেপরোয়া গতিতে চলেন। ক্লান্ত চালকের বেপরোয়া গতি ঈদে দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ।

এআরআইর তথ্যানুযায়ী, ৫৩ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনার কারণ অতিরিক্ত গতি, ৩৭ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে বেপরোয়া চলাচলের কারণে।

-কেএম

-কেএম

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter