এই প্রথম পিএমআরসি-র ৯ম অধ্যায় অনুষ্ঠিত

এই প্রথম পিএমআরসি-র ৯ম অধ্যায় অনুষ্ঠিত

প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট সাউথ এশিয়া পিএমআই বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সহযোগিতায় ফ্ল্যাগশিপ ইভেন্ট-পিএমআরসি-র ৯ম অধ্যায় অনুষ্ঠিত হয়েছে

পিএমআই বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সহযোগিতায় ও ৪৫০ জন প্রকল্প প্রণয়নকারীর অংশগ্রহণে ঢাকার শেরাটন হোটেলে এক বর্ণাঢ্য আয়োজনে প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট আঞ্চলিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার সকল প্রকল্প পরিচালক ও শিল্প বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রকল্প পরিচালনায় অন্তর্ভুক্তিমূলক ও যোগাযোগ স্থাপনের খাতগুলোকে কেন্দ্র করে বিশেষায়িত মূল্যায়ন করা হয়েছে।

‘প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট: আর্কিটেক্টিং রেজিলিয়েন্স’ শীর্ষক এ সম্মেলনের বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আবদুস সালাম।

এছাড়াও সরকারী ও বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন যারা প্রকল্প পরিচালনায় বিভিন্ন উদ্ভাবনী পন্থা এবং এর বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিএমআই বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট অন্বেষা আহমেদ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিএমআই দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডঃ শ্রীনি শ্রীনিবাসন।

বাংলাদেশের অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ গত পাঁচ বছরে দূর্দান্ত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করেছে।

ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনের মতো এশিয়ান প্রতিবেশী রাষ্ট্র থেকে গড় বার্ষিক জিডিপি বৃদ্ধি করেছে প্রায় ৬.৪%।

বাংলাদেশে প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় নতুন নতুন উদ্ভাবনী শক্তি কাজে লাগিয়ে সরকারি ও বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।“

পিএমআই বাংলাদেশ চ্যাপ্টার এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপনার উপর জোর দিয়ে অন্বেষা আহমেদ বলেন, “বাংলাদেশে প্রকল্প ব্যবস্থাপনার শীর্ষে রয়েছে পিএমআই বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

যেহেতু, ভিশন ২০৪১-কে সামনে রেখে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে আমরা কাজ করছি সেহেতু, এখানে প্রকল্প পরিচালনায় বাজেট, মানবসম্পদ, সময়সূচী এবং প্রযুক্তির পূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিতে পিএমআই বাংলাদেশ চ্যাপ্টার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

আমাদের মূল লক্ষ্য হলো প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্ত সকলকে একত্রিত করে কার্যকরী কৌশল উদ্ভাবন করা যা আমাদের ভিশন অর্জনে সহায়তা করে অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সাহায্য করে।“

অনুষ্ঠানের মূল বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আবু সাঈদ মোঃ মাসুদ। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক রাজধানী ঢাকার বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলি দূর করার উপর তার মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি ব্যক্ত করেন। তাকে মেট্রো রেল প্রকল্পের জন্য পুরস্কৃত করা হয়।

অনুষ্ঠানে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি (ইউসিবি)-এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিওও মোঃ আবদুল্লাহ আল মামুন-এর সঞ্চালনায় একটি আলোচনা পর্ব গঠন করা হয়। উক্ত পর্বে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রকল্প ব্যবস্থাপনার উদীয়মান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করা হয়।

এ আলোচনায় আরও বক্তব্য পেশ করেন পিডব্লিউসি বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ক্লায়েন্ট এবং মার্কেটস লিড মামুন রশীদ; মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড (এমটিবি)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান এবং আইফার্মার-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও ফাহাদ ইফাজ।

পিএমআই-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট এপিএসি এবং গ্লোবাল ডিরেক্টর কনস্ট্রাকশন বেন ব্রীন এই অঞ্চলে বড় আকারের নির্মাণ প্রকল্পগুলো সম্পূর্ণ করার বিষয়ে তার মূল্যবান চিন্তাভাবনা সকলের সাথে প্রকাশ করেন।

লি ল্যাম্বার্টের প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট প্রফেশনাল (পিএমপি) সার্টিফিকেশনের সহযোগীতায় এই অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করা হয় যার মাধ্যমে প্রকল্প পরিচালনার এই পেশাকে একটি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত হিসেবে প্রতিফলিত করা হয়েছে।

এছাড়াও, একটি পিএমপি সার্টিফিকেশনের মাধ্যমে কিভাবে একটি প্রকল্পকে নিরাপত্তায় সজ্জিত করে এর ফলাফলকে সাফল্যের দিকে চালিত করে তাও সকলের সামনে তুলে ধরা হয়।

এই ধরণের সার্টিফিকেশন দেশের প্রকল্পগুলোতে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করবে বলে বিশেষজ্ঞরা মতামত ব্যক্ত করেন।

সম্মেলনে অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন ভারদানা-এর চিফ অপারেটিং অফিসার গীতা গোপাল আলোকপাত করেন কিভাবে প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

টিম ক্রিয়েটিভ ও ক্লাসটিউন-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বেসিস-এর সভাপতি রাসেল টি. আহমেদ বলেন যে কিভাবে ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ রূপকল্প গঠনে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স প্রধান চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করতে পারে।

এছাড়াও, অনুষ্ঠানে অন্যান্য বিশিষ্ট বক্তাদের মধ্যে ছিলেন অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি পরিচালক ফারাহ কবির এবং শপআপ-এর চিফ অফ স্টাফ ও জেসিআই বাংলাদেশ-এর জাতীয় সভাপতি মোঃ জিয়াউল হক ভূঁইয়া।

এছাড়াও, খেলবেই বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠাতা কাজী সাবির দ্বারা সঞ্চালিত একটি অনুপ্রেরণামূলক অধিবেশনে বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দলের নিগার সুলতানা জোতি এবং মারুফা আক্তার উপস্থিত ছিলেন।

প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট রিজিওনাল কনফারেন্স ২০২৩ অনুষ্ঠানটি প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট পেশার সাথে সংশ্লিষ্ট অনুশীলনকারীদের, নেতৃ-স্থানীয় ব্যাক্তিবর্গের ও পেশাদার ব্যবসায়ীদের একত্রিত করে তাদের মধ্যকার প্রযুক্তিগত, অনুশীলনগত এবং চিন্তাভিত্তিক অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে প্রকল্প পরিচালনায় মতবিনিময়ের কেন্দ্রস্থল হিসেবে পরিচিত।

-শিশির

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter