শিল্প ও সাহিত্যঃ

“বাতাস আজ বেহালা ” প্রেম এবং দ্রোহ এর কাব্য গ্রন্থ টি কবি মো: শোয়েব উদ্দিন রচিত অমর একুশে বই মেলা ২০২৩ এ লোকমান প্রকাশনী প্রকাশ করে এবং বই মেলায় পরিবেশন করে মানচিত্র প্রকাশনী।

কবিতা এবং অনু কবিতা সহ ১৭ টি কবিতা নিয়ে এই কাব্য গ্রন্থ টি। এর মধ্যে আছে অনন্য একটি ইংরেজি সাহিত্যের কবিতা ও।

আবেগী ঢংগে লেখা প্রতিটি বর্ণ, প্রতিটি শব্দ হৃদয়ের সুকোমল অনুভূতিকে স্পর্শ করে। তীব্র আবেদন প্রতিটি বর্ণে সুন্দর, শুভ্রতা, নির্মলতা কে স্পর্শ করার। ধারন করার।

সৃষ্টির সুর – প্রেমরে সুর – বিরহের সুর বেজেছে প্রতিটি বাক্যে।
আত্ম প্রেম, নারী পুরুষ প্রেম, সৃষ্টির প্রতি প্রেম, স্রষ্টা প্রেম ভিন্ন মাত্রায় প্রাণোচ্ছল ভাষায় হৃদয়গ্রাহী যেন শিল্পীর ক্যানভাসে কারুকার্যময় এক ছবি।

অজ্ঞাতাকে ঘৃনা করেছেন তীব্র ভাবে। মানুষ কে বলেছেন “বীণা “।

মানুষ গুনের এবং সুন্দরের আধার। বীণা যেমন সুরের ঝংকার তুলে তেমনি নিজেকে ” বাজালে” অর্থাৎ বিকশিত করলে সুন্দরের ঝংকারে সজ্জিত হবে পৃথিবী ।। শৈল্পিক বসবাস হবে এই পৃথিবীতে আমাদের।।

মানুষ স্বভাবজাত ভাবেই মমতা, ভালোবাসা, অনুরাগ এবং প্রেমের কাংগাল । তাই তো প্রিয়তমার কাছে তাঁর আবেদন —

ভালোবাসা হৃদয়ে গহীন স্পর্শে,
তোমার হৃদয়ের কাশবনে কাশ ফুলের বিছানায় তোমার গায়ে হেলান দিয়ে আজ আকাশ দেখবো।

তোমার কোলে মাথা পেতে একটু বিশ্রাম নেব, বড্ড ক্লান্ত আমি :জীবন পথে চলতে চলতে।
স্নান শেষে হৃদয়ের ঝর্ণায়
প্রিয়তমা ঠিক শুভ্র হব আমি।।

ভালোবাসায় প্রেম তৃষ্ণায় কাতর কবি ——– অনন্ত অপেক্ষাতেও নেই আপত্তি।
আমি প্রতীক্ষায় রব।
অনন্ত কাল।
বট বৃক্ষের মত,
শত শিকড় গজাবে তবুও
তোমার প্রতীক্ষায়
অনড়, অবিচল।
————_————
যুধিষ্ঠির আমি
প্রেম পিয়াসী।

সুন্দর শুভ্রতা পবিত্রতার ধারক এবং বাহক কবি দ্বন্দ্বে ভুগেছেন। ভুগেছেন বিরহে। এই সুন্দর প্রেমময় জগতে নিজের অস্তিত্ব এবং অবস্থানের শংকায় ভুগেছেন। এক সময় সব নি:শেষ এবং বিলীন হয়ে যাবে। আমাদের অধিকার, অবস্থান এবং অস্তিত্ব কতটুকু। প্রিয়জন হারানোর হাহাকার নিপুণ কারিগরের দক্ষ হাতে শৈল্পিক কারুকার্যতায় তুলে এনেছেন —

পূর্নিমার রাতে জোছনার বৃষ্টিতে স্নান করে
চোখে চোখ রেখে যে স্বপ্ন বুনেছিলাম,
ঘাসের বিছানায় দু মাথা এক করে যে আকাশ দেখেছিলাম,
সেখানেও আমার কোন অংশ নেই।
না তোমার কাছে,
না স্বপ্ন গুলোর কাছে।
আমার কোথাও কোন অংশ নেই।

অবহেলাকে অভিমানে, অনুরাগ কে প্রেমে কিংবা সান্নিধ্যতার তীব্রতা কে শৈল্পিকতায় প্রকাশ করেছেন —–

ঈশ্বর এবং তুমি
নও খেলার সাথী,
শুধুই বিচ্ছেদের প্রতিচ্ছবি।।

কবি মানুষ কে “বীণা ” উপমা করেছেন। মানুষ হলো গুনের এবং সুন্দরের আধার। নিজেকে অর্থাৎ অন্তর্নিহিত গুনকে, মনুষ্যত্ব কে বিকশের আহ্বান করেছেন ।
মানুষ সৃষ্টির সেরা।মানুষ হওয়া অর্থাৎ মনুষ্যত্বের বিকাশ ই মানব জীবনের পূর্ণ সফলতা। কি সুন্দর করেই না বলেছেন —


তুমি যে বীণা জান কিনা?
বাজাও একবার,
স্বর্গ মর্ত্যে উতাল হয়ে,
চরণে লুটাবে তোমার।।

অভিমানে অভিযোগ করেছেন প্রিয় তমার কাছে । কত চমৎকার লিখনি তে —
তবে কেন এ শপথ বাক্য?
হৃদয়ের ভাষায় কথা বলা?
আজ তোমার হাতে নিরুর বাঁশি
বাজে কেন এই বেলা?

অভিযোগের মধ্যে ফুটে ওঠেছে বিরহ —-
আমি নির্লজ্জ হতে পারিনি;
বেছে নিতে পারিনি কাউকে
বহু জনের মধ্যে,
তুমি ব্যাতীত;
অনন্য অন্য আর কাউকে।
আমি নির্লজ্জ হতে পারিনি
তুলনা করে তোমাকে ছেড়ে যেতে,
শত চাঁদের হাটে,
টানা টানা কাজল রেখায়
আল্পনা আকাঁ, মায়াবী ইশারা ডাকে।

অজ্ঞতা মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু।কুসংস্কার মানব জীবনের বিকাশকে স্তব্ধ করে দেয়। তা প্রকাশ করেছেন দ্রোহী লিখনিতে —-
সক্রেটিস এবং হেমলক কবিতায়।

তুমি কুসংস্কার আর অজ্ঞতার বিষ পান করনি।
সায়ানাইড কিংবা হেমলকের চেয়ে লক্ষ লক্ষ কোটি গুন যন্ত্রণার,
নীল কামড়ে কামড়ে যেন অনন্ত কাল নীল করে রাখে।

ধ্বনি বা শব্দ ছাড়াও আরও একটি শক্ত মাধ্যম আছে ভাব প্রকাশের। তা হল অনুভব, অনুভূতি। এই মহা জগতে প্রতি মুহূর্তে ই ভাব বিনিময় হচ্ছে – এমন গোপন দর্শন পাওয়া যায় সাউথ উইন্ড গার্ল — কবিতায় এবং খুবই দারুণ —-

This mind keeps talking
Every moment, every second,
like the sea,
Continuous flow of water.
This mind wants love,
Beautiful like a flower and pure love,
Every second, every moment.

চমৎকার গাঁথুনিতে লেখা প্রতিটি কবিতা মন কে প্রশান্তিতে ভরে দিবে। কল্পনার জগতে ভাসিয়ে নিবে প্রতি মুহূর্তে। খুলে দিবে মনের নতুন আরেকটি জানালা।

Print Friendly, PDF & Email
FacebookTwitter